নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। সরকারপ্রধানের জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্বের নিকট বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিকভাবে উন্নয়নের বিস্ময়। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, অর্থনৈতিক সূচকে প্রবৃদ্ধি, রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধি, পায়রা বন্দর নির্মাণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, মানবসম্পদসহ আজ দেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন বিস্ময়কর।”
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ‘এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে স্পিকার বলেন, “তিনি তার পিতার মত এদেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালবাসেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে অপূর্ণ স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সে স্বপ্নের বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সুদক্ষ নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ।” প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে ‘স্বপ্নের রূপকার’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছ সংসদ সচিবালয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের প্রথম সন্তান শেখ হাসিনার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায়। টানা এক যুগ ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন তিনি। স্পিকার বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অপূর্ণ স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর পার্বত্য শান্তিচুক্তি, পানিবণ্টন চুক্তি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য চুক্তি তিনি করেছিলেন। যার কারণে আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি।
“উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্ত ভিত রচনা করতে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদন ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই তার রাজনীতির মূল দর্শন।” প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পের প্রশংসা করেন স্পিকার।
শিরীন শারমিন বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশের ইতিহাসকে ভিন্নপথে পরিচালিত ও স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বজনহারানোর বেদনা বুকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, স্বৈরশাসনের অবসানের সংগ্রাম, সংবিধান লংঘনের মাধ্যমে হারানো গণতন্ত্র পুনরূদ্ধার, আইনের ঊর্ধ্বে থাকা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ কার্যকর করার মাধ্যমে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কিউন ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বক্তব্য দেন।
সামরিকশাসন ও অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূলোৎপাটন করেছেন শেখ হাসিনা : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘দেশের সামরিক শাসন ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মূলোৎপাটন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। কিন্তু ওইসময়ে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেলজিয়ামে থাকায় তারা বেঁচে যান। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা ১৯৮১ সালের বৃষ্টিস্নাত দিনে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল হন। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ থেকে সামরিক শাসন ও অগণতান্ত্রিক ধারা বিদায় নেয়।’
গত সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কর্মময় জীবন শীর্ষক আলোচনা সভা, কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘তোমরা যারা আজকে শিশু, কিশোর ও তরুণ রয়েছো তারা যে তথ্য-প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখছো, এই স্বদেশ তো এমন ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদেশের মানুষকে যেভাবে হৃদয় নিংড়ানো মায়া দিয়ে ভালোবেসেছেন সেই ঋণ আমরা কোথায় রাখলাম। তিনি তো স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করতে পারলেন না। ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে তিনি নিহত হলেন। সেই থেকে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশকে বিশ^ দরবারে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তোমরা আজকে সেটিই দেখছো। কিন্তু এর পেছনে যে লড়াই-সংগ্রাম এবং ত্যাগের ইতিহাস রয়েছে সেটিও তোমাদের জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আগামীর কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শিরিন আক্তার মঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাংসদ অসীম কুমার উকিল। বক্তব্য দেন মনোরঞ্জন গোপাল এমপি প্রমুখ।-বিজ্ঞপ্তি
শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ: স্পিকার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ