ঢাকা ০৮:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

শূন্য থেকে ৭ মাসে লাখপতি মৌ

  • আপডেট সময় : ১২:২৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

খাতুন : সাদিয়া ইসলাম মৌ। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছেন ব্যবসা। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। প্রথমে নিজের হাত খরচের টাকা নিজেই আয় করেন, মাঝে মাঝে পরিবারকেও সহযোগিতা করেন। সাত মাসেই হন মিলিয়নিয়ার।
ব্যবসায়ী হওয়ার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও করোনাকালীন দীর্ঘ সময় যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী। যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ দফায় দফায় বাড়ছিল, ঠিক তখন দেখলেন ক্যাম্পাসের বড় ভাই, বোন, বন্ধু-বান্ধবী যে যার মতো সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন। কেউ কেউ পোশাক, ড্রাই ফুডস, হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস, কসমেটিকস আইটেম ইত্যাদি অনেক কিছু নিয়ে কাজ করছেন। তখন শুরু হলো শূন্য থেকে শুরুর গল্প।
সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পের শুরুটা সহজ ছিল না। কারণ, পুঁজি নেই, তার ওপর করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বাসা থেকে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি নেই। তবুও তীব্র ইচ্ছাশক্তি ছিল। বন্ধুর কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ধার নিয়ে বাবা-মাকে বোঝালেন, তারপর শুরু করলেন। তৈরি করলেন একটা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। ধীরে ধীরে রংপুরে পরিচিত হলেন। লাভ তেমন হয়নি প্রথমে। তবুও হাল ছাড়েননি। শুরুর দিকে কাস্টমারের সঙ্গে ডিল করা, দাম নির্ধারণ করা, ডেলিভারি সেবা কীভাবে দিতে হয়, এসব কাজ শিখেছেন।
তারপর সাদিয়া ইসলাম মৌ ভাবলেন পরিচিতি বাড়াতে হবে। লোকে যাকে চিনে বেশি, তার উপর আস্থা রাখে বেশি। তার ক্যাম্পাসে সংখ্যা গরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে, যেটা ঝঃঁফবহঃং ঊ-পড়সসবৎপব ঢ়ষধঃভড়ৎস নামে পরিচিত। উদ্দেশ্য সব শিক্ষার্থীকে স্বাবলম্বী করে তোলা। মৌ প্ল্যাটফর্মে ছিলেন শুরু থেকেই। এরপর তার বাবার চাকরি সূত্রেই রংপুর থেকে কুমিল্লায় গেলেন। কুমিল্লা এসে যুক্ত হয়ে গেলেন সেখানকার সেলার হিসেবে। কুমিল্লা এসে কাজ শুরু করলেন একদম নতুনভাবে। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাদি পোশাক নিয়ে। খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রিপিস এগুলো তার প্রধান বিক্রির পণ্য।
অল্প সময়ে অবাক করার মতো সাফল্য পেলেন। হলেন লাখপতি। সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, ‘সাত মাসের ব্যবসায়ী জীবনে সেল করেছি প্রায় ২০ লাখ টাকা। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আমাকে পরিশ্রম করার মতো শক্তি দিয়েছেন, সুস্থ রেখেছেন। প্রতিকূলতা ছাপিয়ে এমন শূন্য থেকেই শুরুর গল্প ছিল।’
লেখক: শিক্ষার্থী, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শূন্য থেকে ৭ মাসে লাখপতি মৌ

আপডেট সময় : ১২:২৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১

খাতুন : সাদিয়া ইসলাম মৌ। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছেন ব্যবসা। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। প্রথমে নিজের হাত খরচের টাকা নিজেই আয় করেন, মাঝে মাঝে পরিবারকেও সহযোগিতা করেন। সাত মাসেই হন মিলিয়নিয়ার।
ব্যবসায়ী হওয়ার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও করোনাকালীন দীর্ঘ সময় যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী। যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ দফায় দফায় বাড়ছিল, ঠিক তখন দেখলেন ক্যাম্পাসের বড় ভাই, বোন, বন্ধু-বান্ধবী যে যার মতো সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন। কেউ কেউ পোশাক, ড্রাই ফুডস, হ্যান্ড পেইন্টেড ড্রেস, কসমেটিকস আইটেম ইত্যাদি অনেক কিছু নিয়ে কাজ করছেন। তখন শুরু হলো শূন্য থেকে শুরুর গল্প।
সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পের শুরুটা সহজ ছিল না। কারণ, পুঁজি নেই, তার ওপর করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বাসা থেকে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি নেই। তবুও তীব্র ইচ্ছাশক্তি ছিল। বন্ধুর কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ধার নিয়ে বাবা-মাকে বোঝালেন, তারপর শুরু করলেন। তৈরি করলেন একটা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। ধীরে ধীরে রংপুরে পরিচিত হলেন। লাভ তেমন হয়নি প্রথমে। তবুও হাল ছাড়েননি। শুরুর দিকে কাস্টমারের সঙ্গে ডিল করা, দাম নির্ধারণ করা, ডেলিভারি সেবা কীভাবে দিতে হয়, এসব কাজ শিখেছেন।
তারপর সাদিয়া ইসলাম মৌ ভাবলেন পরিচিতি বাড়াতে হবে। লোকে যাকে চিনে বেশি, তার উপর আস্থা রাখে বেশি। তার ক্যাম্পাসে সংখ্যা গরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে, যেটা ঝঃঁফবহঃং ঊ-পড়সসবৎপব ঢ়ষধঃভড়ৎস নামে পরিচিত। উদ্দেশ্য সব শিক্ষার্থীকে স্বাবলম্বী করে তোলা। মৌ প্ল্যাটফর্মে ছিলেন শুরু থেকেই। এরপর তার বাবার চাকরি সূত্রেই রংপুর থেকে কুমিল্লায় গেলেন। কুমিল্লা এসে যুক্ত হয়ে গেলেন সেখানকার সেলার হিসেবে। কুমিল্লা এসে কাজ শুরু করলেন একদম নতুনভাবে। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাদি পোশাক নিয়ে। খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রিপিস এগুলো তার প্রধান বিক্রির পণ্য।
অল্প সময়ে অবাক করার মতো সাফল্য পেলেন। হলেন লাখপতি। সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, ‘সাত মাসের ব্যবসায়ী জীবনে সেল করেছি প্রায় ২০ লাখ টাকা। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আমাকে পরিশ্রম করার মতো শক্তি দিয়েছেন, সুস্থ রেখেছেন। প্রতিকূলতা ছাপিয়ে এমন শূন্য থেকেই শুরুর গল্প ছিল।’
লেখক: শিক্ষার্থী, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ।