প্রত্যাশা ডেস্ক: রমজানের দ্বিতীয় দশক, যা মাগফিরাতের দশক হিসেবে পরিচিত, এই দশকে মহান আল্লাহ ক্ষমা লাভের অপূর্ব সুযোগ এনে দেন। মাগফিরাত শব্দের অর্থ হলো ক্ষমা, করুণা এবং মুক্তি লাভ করা। এটি আজ ১১ রমজান থেকে ২০ রমজান পর্যন্ত চলবে, যেখানে প্রতিটি মুমিন আল্লাহর কাছে তাদের পাপের জন্য তওবা করে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।
এই দশকে, একজন মুমিন আল্লাহর কাছে তাদের গোনাহ মাফ করার জন্য দোয়া করবেন এবং রহমত লাভ করবেন। আল্লাহ বলেন, আমি বান্দার গোনাহ মাফ করতে প্রস্তুত। রমজানের প্রথম দশকে যেমন আল্লাহর রহমত লাভ হয়, ঠিক তেমনি এই দশকে মাগফিরাত লাভের অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে।
হাদিসে বর্ণিত রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের মাঝে খতিব হিসেবে দাঁড়িয়ে বললেন: (মাহে রমজান) এমন একটি মাস, যার প্রথম ভাগ রহমত, মধ্যবর্তী ভাগ মাগফিরাত বা ক্ষমা এবং শেষ ভাগে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়। (ইবনে খুজাইমা, ১৮৮৭)
এটি আমাদের জন্য এক সেরা উপদেশ, রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের। এই দশকে, আমাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হলো গুনাহ বা পাপ কাজে লিপ্ত হওয়া, কিন্তু সবচেয়ে অস্বাভাবিক হলো সেই গোনাহে বছরের পর বছর অটল থাকা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা না চাওয়া। এই মাগফিরাতের দশক, যেটি আজ থেকে শুরু হলো, আমাদের জন্য এক অনন্য সুযোগ। আল্লাহ তাআলা এই দশকে বান্দাদের গোনাহ মাফ করে থাকেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তিনি সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তার বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য নানা উপায় সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন,
وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ- এবং জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম সহনশীল। (আল-বাকারা: ২৩৫)
রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাতদিন অপরাধ করে থাকো, আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব। (সহিহ মুসলিম, ৬৪৬)
ইতিকাফের প্রস্তুতি: মাগফিরাতের এই বিশেষ দিনগুলো শেষ হওয়ার আগেই, একজন মুমিন নাজাতের দশক লাভ করার জন্য প্রস্তুত হবেন। নাজাতের দশক শেষ হবে ইতিকাফের মাধ্যমে, যেখানে বান্দা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য ও তাকওয়া মাধ্যম আল্লাহর দিকে ফিরে আসবেন। তাই, আসুন আমরা এই মাগফেরাতের সময়ে আমাদের গোনাহ মাফ করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং তাঁর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুযোগ লাভ করি।