নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত আপিল শুনানির সার্টিফাইড কপি পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রার্থীদের। ফলে ইসির আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অনেকে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গতকাল রোববার সকাল থেকেই প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সেখানে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন আপিলের কপি পেতে দেরি হওয়ায়। ফেনি-১ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. আলমগীর আলম সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করেও আপিলের কপি পাননি।
বেলা সোয়া ৩টায় তিনি বলেন, “আমি কখন কোর্টে যাব, আর কখন রিট করব? ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আমাদের সময়ের কি কোনো দাম নাই? আগামীকাল নাকি কোর্ট বন্ধ, তাহলে কী হবে?” সুনামগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান খালেদ তুষারের আপিল শুনানিতে নামঞ্জুর হয়। তার ব্যক্তিগত সহকারী জামান আহমেদ বলেন, “আমার ক্যানডিডেটের কপিটা পেলাম না। এখন যদি কপিটা না পাই তাহলে রিট করব কী করে? কিছুক্ষণ পর পর নির্বাচন কমিশন থেকে লোক আসছে, আর আমাদের আপিলের নম্বর লিখে নিয়ে যাচ্ছে। আর কোনো খবর নাই।“ এরকম হয়রানির মধ্যে পড়েছি। তাহলে তো আমরা শেষ সুযোগটা পেলাম না। এটা কি ঠিক হল?”
ময়মনসিংহ-১ আসনে সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী বাদশাহ দেওয়ান সকাল থেকে আপিলের সার্টিফায়েড কপি না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “কাগজই যদি না পাই, হাই কোর্টে যাব কীভাবে? এসব বিষয় নিয়ে কি এমন করা উচিত? এরকম ভোগান্তির মানে কী?”
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, রায় লিখতে সময় লাগে। তাই দেরি হচ্ছে। তবে রোববার বিকাল পর্যন্ত মোট কতজনকে আপিল শুনানির কপি দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেনি ইসি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে বাতিল হয়ে যাওয়া পৌনে তিনশ জন নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন, এমন পাঁচ জন প্রার্থীকে আবার নির্বাচন কমিশন অবৈধ ঘোষণা করেছে। সব মিলিয়ে এখন বৈধ প্রার্থী ২ হাজার ২৬০ জনের মতো। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ায়ের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিলের শুনানি করে। ইসির সিদ্ধান্তের ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতেও শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতীক বরাদ্দ হবে। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা দলের প্রতীক পাবেন আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের পছন্দের অথবা লটারিতে তাদের নামে প্রতীক বরাদ্দ হবে। ভোটের প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।
শুনানির কপি দিতে ইসির ‘শম্বুকগতি’, ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা
জনপ্রিয় সংবাদ