ঢাকা ০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

শীর্ষ ধনী মাস্কের সিংহাসন টলোমলো

  • আপডেট সময় : ১০:২৮:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : টুইটার কিনে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর সিংহাসন হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন ইলন মাস্ক। আলোচিত-বিতর্কিত এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তার ‘টুইটার প্রেমে’ সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তার আরেক কোম্পানি টেসলার।
বিশ্ববাজারে টেসলার সাফল্য ইলন মাস্কের ‘শীর্ষ ধনী’ স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে তিনি টুইটার কেনার প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকেই শেয়ার বাজারে সময় ভালো যাচ্ছে না টেসলার। নয় মাসে বিদ্যুৎচালিত এ গাড়ি নির্মাতার শেয়ারের দাম পড়েছে প্রায় অর্ধেক। টেসলার শেয়ার দরে এই পতনে মাস্কের নেট সম্পদের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল শেয়ার বাজারে প্রতিটি টেসলা শেয়ারের লেনদেন হয় প্রায় ৩৪১ ডলার দামে। ১৪ এপ্রিল মাস্ক ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে সোশাল মিডিয়া কোম্পানি টুইটার কেনার প্রস্তাব দেন। তার পরের নয় মাসে টেসলা শেয়ারের দাম নেমে এসেছে ১৭৩ ডলারে।
এদিকে চীনের কঠোর কোভিড নীতির কারণে সাংহাইয়ে টেসলা কারখানার উৎপাদনও হোঁচট খেয়েছে। গার্ডিয়ান লিখেছে, টেসলা শেয়ারের দরপতনের পেছনে এরও ভূমিকা রয়েছে। টুইটার অধিগ্রহণের তহবিল জোগাড় করতে এপ্রিল মাস থেকে ২ হাজার কোটি ডলারের টেসলা শেয়ার বিক্রি করেছেন মাস্ক। রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে ৪৪ কোটি ৫০ লাখ টেসলা শেয়ার আছে মাস্কের হাতে। কিন্তু শেয়ার বাজারের দরপতনে এর মূল্য ১৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার থেকে ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন মাস্ক। চিফ টুইটকে হটিয়ে শীর্ষ ধনীর সিংহাসনে বসতে পারেন ফ্রান্সের লাক্সারি গ্রুপ এলভিএমএইচ-এর প্রধান নির্বাহী বের্নার্ড আর্নো, যিনি এখন আছেন দ্বিতীয় অবস্থানে। ফেনডি, ক্রিশ্চিয়ান ডিওর এবং সেফোরার মত বেশ কিছু বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের মালিক ওই বহুজাতিক কোম্পানি। টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় মাস্ক বলেছিলেন, “বিশ্বস্ত এবং সার্বজনীন একটি পাবলিক প্ল্যাটফর্ম সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।”
কিন্তু টুইটারের কারণে মাস্কের মনোযোগ ভিন্ন খাতে যাচ্ছে বলে শঙ্কিত টেসলার বিনিয়োগকারীরা। টুইটার ও টেসলা ছাড়াও স্পেসএক্স এবং বোরিং কোম্পানির কা-ারী ইলন মাস্ক। টুইটার অধিগ্রহণের তহবিল জোগাড় করতে বেশি সুদে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। টেসলা শেয়ার জামানত হিসেবে রেখে নতুন ঋণ নিয়ে ওই ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ শোধ করার কথা ভাবছেন মাস্কের ব্যাংকাররা। এতে টেসলা বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। আর্থিক বিবেচনায় টুইটারও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। মাস্কের অধীনে যাওয়ার আগে থেকেই লোকসান গুনছে এ কোম্পানি; গত বছর টুইটারের নেট লোকসান ছিল ২২ কোটি ১০ লাখ ডলার। টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর কোম্পানির প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাই করেছেন মাস্ক। কর্মীদের হুমকির সুরে ‘কঠোর পরিশ্রম’ করতে বলার পর ইস্তফা দিয়েছেন আরও প্রায় ১২০০ কর্মী। মাস্কের অধীনে যাওয়ার পর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতার মুখে পড়ছে টুইটার। ‘অমানবিক’ ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন চাকরি খোয়ানো কর্মীরা। মাস্ক টুইটার কার্যালয়কে আবাসিক হোটেলে পরিণত করেছেন– রয়ে যাওয়া কর্মীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ ওঠার পর ঘটনা তদন্তে নেমেছেন স্যান ফ্রান্সিসকোর নগর কর্মকর্তারা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শীর্ষ ধনী মাস্কের সিংহাসন টলোমলো

আপডেট সময় : ১০:২৮:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

প্রযুক্তি ডেস্ক : টুইটার কিনে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর সিংহাসন হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন ইলন মাস্ক। আলোচিত-বিতর্কিত এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তার ‘টুইটার প্রেমে’ সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তার আরেক কোম্পানি টেসলার।
বিশ্ববাজারে টেসলার সাফল্য ইলন মাস্কের ‘শীর্ষ ধনী’ স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে তিনি টুইটার কেনার প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকেই শেয়ার বাজারে সময় ভালো যাচ্ছে না টেসলার। নয় মাসে বিদ্যুৎচালিত এ গাড়ি নির্মাতার শেয়ারের দাম পড়েছে প্রায় অর্ধেক। টেসলার শেয়ার দরে এই পতনে মাস্কের নেট সম্পদের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল শেয়ার বাজারে প্রতিটি টেসলা শেয়ারের লেনদেন হয় প্রায় ৩৪১ ডলার দামে। ১৪ এপ্রিল মাস্ক ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে সোশাল মিডিয়া কোম্পানি টুইটার কেনার প্রস্তাব দেন। তার পরের নয় মাসে টেসলা শেয়ারের দাম নেমে এসেছে ১৭৩ ডলারে।
এদিকে চীনের কঠোর কোভিড নীতির কারণে সাংহাইয়ে টেসলা কারখানার উৎপাদনও হোঁচট খেয়েছে। গার্ডিয়ান লিখেছে, টেসলা শেয়ারের দরপতনের পেছনে এরও ভূমিকা রয়েছে। টুইটার অধিগ্রহণের তহবিল জোগাড় করতে এপ্রিল মাস থেকে ২ হাজার কোটি ডলারের টেসলা শেয়ার বিক্রি করেছেন মাস্ক। রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে ৪৪ কোটি ৫০ লাখ টেসলা শেয়ার আছে মাস্কের হাতে। কিন্তু শেয়ার বাজারের দরপতনে এর মূল্য ১৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার থেকে ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন মাস্ক। চিফ টুইটকে হটিয়ে শীর্ষ ধনীর সিংহাসনে বসতে পারেন ফ্রান্সের লাক্সারি গ্রুপ এলভিএমএইচ-এর প্রধান নির্বাহী বের্নার্ড আর্নো, যিনি এখন আছেন দ্বিতীয় অবস্থানে। ফেনডি, ক্রিশ্চিয়ান ডিওর এবং সেফোরার মত বেশ কিছু বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের মালিক ওই বহুজাতিক কোম্পানি। টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় মাস্ক বলেছিলেন, “বিশ্বস্ত এবং সার্বজনীন একটি পাবলিক প্ল্যাটফর্ম সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।”
কিন্তু টুইটারের কারণে মাস্কের মনোযোগ ভিন্ন খাতে যাচ্ছে বলে শঙ্কিত টেসলার বিনিয়োগকারীরা। টুইটার ও টেসলা ছাড়াও স্পেসএক্স এবং বোরিং কোম্পানির কা-ারী ইলন মাস্ক। টুইটার অধিগ্রহণের তহবিল জোগাড় করতে বেশি সুদে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। টেসলা শেয়ার জামানত হিসেবে রেখে নতুন ঋণ নিয়ে ওই ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ শোধ করার কথা ভাবছেন মাস্কের ব্যাংকাররা। এতে টেসলা বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। আর্থিক বিবেচনায় টুইটারও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। মাস্কের অধীনে যাওয়ার আগে থেকেই লোকসান গুনছে এ কোম্পানি; গত বছর টুইটারের নেট লোকসান ছিল ২২ কোটি ১০ লাখ ডলার। টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর কোম্পানির প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাই করেছেন মাস্ক। কর্মীদের হুমকির সুরে ‘কঠোর পরিশ্রম’ করতে বলার পর ইস্তফা দিয়েছেন আরও প্রায় ১২০০ কর্মী। মাস্কের অধীনে যাওয়ার পর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতার মুখে পড়ছে টুইটার। ‘অমানবিক’ ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন চাকরি খোয়ানো কর্মীরা। মাস্ক টুইটার কার্যালয়কে আবাসিক হোটেলে পরিণত করেছেন– রয়ে যাওয়া কর্মীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ ওঠার পর ঘটনা তদন্তে নেমেছেন স্যান ফ্রান্সিসকোর নগর কর্মকর্তারা।