ঢাকা ০৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

শীতে কোলেস্টেরল দ্বিগুণ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে

  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

শীতকাল এলেই নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম জ্বর, সর্দি, কাশি, সংক্রমণ। তবে এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন হার্টের রোগীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং হার্ট ফেইলিউরের ঘটনা প্রায় ১৪-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে হার্ট সম্পর্কিত রোগের লক্ষণগুলোও বৃদ্ধি পায়। এসব সমস্যা মূলত ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেই বাড়ে।
হাড় হিম করা শীত বা হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সংস্পর্শে রক্তনালী সংকোচন হয়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, হৃদরোগের আক্রান্ত ব্যক্তিরা শীতে ঝুঁকিতে থাকেন। যেমনÑ করোনারি আর্টারি ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এবং বয়স্ক মানুষেরা। ফলে শীতকালে খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে চিকিৎসকরা কী কী টিপস দিয়েছেনÑ
অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করুন: অনেকে মনে করেন, শীতে ধূমপান ও অ্যালকোহল শরীরকে উষ্ণ রাখে।

কিন্তু এ ধারণা একেবাররই ভুল। চিকিৎসকরা বলছেন, যেকোনো আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন বিপজ্জনক। এসবের বদলে শীতকালে উষ্ণ থাকার স্বাস্থ্যকর উপায়গুলো অন্বেষণ করুন। ঘন ঘন পানীয় যেমনÑ কফি, চা, ভেজি-লোড স্যুপগুলোকে বেছে নিতে পারেন।
রক্তচাপ বৃদ্ধি: শীতকালে রক্তনালীর সংকোচন এবং অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। ফলে রক্তচাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তাই শীতে নিয়মিত ওষুধ কীভাবে পরিবর্তন করা যায় এবং ডোজ সামঞ্জস্য করা যায় তা বোঝার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কখনই নিজে থেক তা পরিবর্তন করবেন না।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শীতকালে সাধারণত খিদে বেড়ে যায়। ফলে ভাজা ও চিনিযুক্ত খাবার এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত পদার্থের অতিরিক্ত ব্যবহারে খাদ্যাভ্যাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারকে ঘন ঘন ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য উপাদান যেমন- টাটাকা স্যালাড, ফল, বাদাম, আখরোট, শণের বীজ এবং চিয়া বীজ দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস তৈরি করে খেতে পারেন।
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি: প্রতি বছর শীতকালে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হার লক্ষ্যনীয়। এটি রক্তচাপ বৃদ্ধি, ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসা এবং সম্ভাব্য স্ট্রেসের মাত্রা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণের সংমিশ্রণে হয়। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকল্পনা করুন। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০-এর বেশি এবং আগে কখনও করেননি। এই বয়সী ব্যক্তিরা কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা জানতে পরীক্ষা করুন। যাতে তা কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে।

এছাড়া নিজের ও পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য দীর্ঘ বহিরঙ্গন কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন। একই সঙ্গে গরম কাপড় দিয়ে ভালোভাবে সুরক্ষিত থাকুন এবং বয়স্ক সদস্যরা সূর্যোদয়ের পরে তাদের সকালের হাঁটা বিলম্বিত করতে পারেন।
ওজন বৃদ্ধি ও শারীরিক কার্যকলাপ: শীত আমাদের নিস্তেজ ও অলস করে তোলে। ফলে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায়। এটি বর্ধিত খিদে এবং সম্ভাব্য নিম্নমানের ঘুমের সঙ্গে জড়িত। ওজন বৃদ্ধিতে যা অবদান রাখতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত শীতকালে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং বাইরের কার্যকলাপ হ্রাস পায়। বৈদ্যুতিক রুম হিটার, কম্বল ও গরম কাপড়ের নিরাপদ ব্যবহার ঘুমের মান উন্নত করতে পারে।
শীতে দ্রুত হাঁটার মতো বহিরঙ্গন ক্রিয়াকলাপ উপভোগ করার জন্য উষ্ণ পোশাকের প্রয়োজন। এছাড়া ট্রেডমিলে হাঁটা এবং সূর্য দেখার মতো যোগ অনুশীলন করার মতো ইনডোর ব্যায়ামের বিকল্পগুলোর মাধ্যমে উচ্চ স্তরের শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখতে পারেন।
অন্যদিকে কার্ডিয়াক সমস্যায় আক্রান্ত সব রোগী, বিশেষ করে এলভি ডিসফাংশন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা রয়েছে, তাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত।

এজন্য নিয়মিত নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ও পরীক্ষাগুলো করতে হবে। সেই সঙ্গে শীতকালে বুক ও ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই শীতের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
শীতে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে দ্বিগুণ
ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শরীর উষ্ণ রাখা ভীষণ জরুরি। এই মৌসুমে আমরা প্রায়ই গরম চা-কফিতে চুমুক দিই। শুধু তাই নয়, লেপ-কম্বল পেলে বিছানা ছাড়তেও দ্বিধাবোধ করি। কিন্তু এ কথা আমরা সবাই জানি, শীতকালে শরীরে বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজনীয়।
এ সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে দ্বিগুণ। বিশেষ করে হার্টের জন্য এই মৌসুম চ্যালেঞ্জিং।
চিকিৎসকরা বলছেন, হার্ট আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভালো জীবনযাপনের জন্য সুস্থ হার্ট থাকা প্রয়োজন। হার্টকে সুস্থ রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ব্যায়াম করা এবং ভালো ঘুম।
আজকাল আমাদের ব্যস্ত ও খারাপ জীবনযাপনের কারণে হার্টের সমস্যা দেখা যায়।
কারো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা তো আবার কারও উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শীতে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে। কিন্তু এ সময় কেন তা দ্রুত বাড়ে জানেন কি? এই সমস্যা থেকে কীভাবেই বা মুক্তি পেতে পারেন? আসুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাকÑ
# মনে রাখবেন, ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর করতে চাইলে সূর্যের আলোর চেয়ে ভালো বিকল্প আর হতে পারে না।

তবে শীতকালে সূর্যের আলো কম থাকে। ফলে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দেয়। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
# শীতকালে শরীর গরম রাখতে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্যতালিকায় আরও বেশি ক্যালরি রাখি আমরা। মনে রাখবেন, শীতে ভাজা খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এসব বিষয়ে নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
যেভাবে উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবেনÑ
# শীতে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার রাখুন ডায়েটে। যখনই রোদ উঠবে, অবশ্যই বারান্দায় বসবেন। অন্তত ঘণ্টাখানেক রোদে বসুন।
# শীতে জাংক ফুড কম খান। লবণও কম ব্যবহার করুন। কারণ, এটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
# অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। এ সময় স্ট্রেস বা টেনশন এড়ানো উচিত। ধ্যান, প্রাণায়াম বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করে চাপমুক্ত থাকতে পারেন।
# শীতে খাদ্যতালিকায় ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না। ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। সঙ্গে উচ্চ কোলেস্টেরল বাড়াতে বাধা দেয়।
# শীতকালে পানি পান বন্ধ করবেন না।

মনে রাখবেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে করলে অনেক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
# শীতকালে সক্রিয় থাকা জরুরি। এজন্য ব্যায়াম বা ওয়ার্কআউট, যোগব্যায়াম ও প্রাণায়ামও করতে পারেন। দৌড়ানো এবং জগিং করাও ভালো। এ ছাড়া ভালো ঘুম সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। তাই অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শীতে কোলেস্টেরল দ্বিগুণ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে

আপডেট সময় : ০৪:৩২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

শীতকাল এলেই নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম জ্বর, সর্দি, কাশি, সংক্রমণ। তবে এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন হার্টের রোগীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং হার্ট ফেইলিউরের ঘটনা প্রায় ১৪-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে হার্ট সম্পর্কিত রোগের লক্ষণগুলোও বৃদ্ধি পায়। এসব সমস্যা মূলত ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণেই বাড়ে।
হাড় হিম করা শীত বা হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সংস্পর্শে রক্তনালী সংকোচন হয়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, হৃদরোগের আক্রান্ত ব্যক্তিরা শীতে ঝুঁকিতে থাকেন। যেমনÑ করোনারি আর্টারি ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এবং বয়স্ক মানুষেরা। ফলে শীতকালে খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে চিকিৎসকরা কী কী টিপস দিয়েছেনÑ
অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করুন: অনেকে মনে করেন, শীতে ধূমপান ও অ্যালকোহল শরীরকে উষ্ণ রাখে।

কিন্তু এ ধারণা একেবাররই ভুল। চিকিৎসকরা বলছেন, যেকোনো আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন বিপজ্জনক। এসবের বদলে শীতকালে উষ্ণ থাকার স্বাস্থ্যকর উপায়গুলো অন্বেষণ করুন। ঘন ঘন পানীয় যেমনÑ কফি, চা, ভেজি-লোড স্যুপগুলোকে বেছে নিতে পারেন।
রক্তচাপ বৃদ্ধি: শীতকালে রক্তনালীর সংকোচন এবং অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। ফলে রক্তচাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তাই শীতে নিয়মিত ওষুধ কীভাবে পরিবর্তন করা যায় এবং ডোজ সামঞ্জস্য করা যায় তা বোঝার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কখনই নিজে থেক তা পরিবর্তন করবেন না।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শীতকালে সাধারণত খিদে বেড়ে যায়। ফলে ভাজা ও চিনিযুক্ত খাবার এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত পদার্থের অতিরিক্ত ব্যবহারে খাদ্যাভ্যাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারকে ঘন ঘন ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য উপাদান যেমন- টাটাকা স্যালাড, ফল, বাদাম, আখরোট, শণের বীজ এবং চিয়া বীজ দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস তৈরি করে খেতে পারেন।
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি: প্রতি বছর শীতকালে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হার লক্ষ্যনীয়। এটি রক্তচাপ বৃদ্ধি, ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসা এবং সম্ভাব্য স্ট্রেসের মাত্রা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণের সংমিশ্রণে হয়। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকল্পনা করুন। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০-এর বেশি এবং আগে কখনও করেননি। এই বয়সী ব্যক্তিরা কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা জানতে পরীক্ষা করুন। যাতে তা কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে।

এছাড়া নিজের ও পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য দীর্ঘ বহিরঙ্গন কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন। একই সঙ্গে গরম কাপড় দিয়ে ভালোভাবে সুরক্ষিত থাকুন এবং বয়স্ক সদস্যরা সূর্যোদয়ের পরে তাদের সকালের হাঁটা বিলম্বিত করতে পারেন।
ওজন বৃদ্ধি ও শারীরিক কার্যকলাপ: শীত আমাদের নিস্তেজ ও অলস করে তোলে। ফলে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায়। এটি বর্ধিত খিদে এবং সম্ভাব্য নিম্নমানের ঘুমের সঙ্গে জড়িত। ওজন বৃদ্ধিতে যা অবদান রাখতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত শীতকালে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং বাইরের কার্যকলাপ হ্রাস পায়। বৈদ্যুতিক রুম হিটার, কম্বল ও গরম কাপড়ের নিরাপদ ব্যবহার ঘুমের মান উন্নত করতে পারে।
শীতে দ্রুত হাঁটার মতো বহিরঙ্গন ক্রিয়াকলাপ উপভোগ করার জন্য উষ্ণ পোশাকের প্রয়োজন। এছাড়া ট্রেডমিলে হাঁটা এবং সূর্য দেখার মতো যোগ অনুশীলন করার মতো ইনডোর ব্যায়ামের বিকল্পগুলোর মাধ্যমে উচ্চ স্তরের শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখতে পারেন।
অন্যদিকে কার্ডিয়াক সমস্যায় আক্রান্ত সব রোগী, বিশেষ করে এলভি ডিসফাংশন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা রয়েছে, তাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত।

এজন্য নিয়মিত নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ও পরীক্ষাগুলো করতে হবে। সেই সঙ্গে শীতকালে বুক ও ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই শীতের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
শীতে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে দ্বিগুণ
ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শরীর উষ্ণ রাখা ভীষণ জরুরি। এই মৌসুমে আমরা প্রায়ই গরম চা-কফিতে চুমুক দিই। শুধু তাই নয়, লেপ-কম্বল পেলে বিছানা ছাড়তেও দ্বিধাবোধ করি। কিন্তু এ কথা আমরা সবাই জানি, শীতকালে শরীরে বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজনীয়।
এ সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে দ্বিগুণ। বিশেষ করে হার্টের জন্য এই মৌসুম চ্যালেঞ্জিং।
চিকিৎসকরা বলছেন, হার্ট আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভালো জীবনযাপনের জন্য সুস্থ হার্ট থাকা প্রয়োজন। হার্টকে সুস্থ রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ব্যায়াম করা এবং ভালো ঘুম।
আজকাল আমাদের ব্যস্ত ও খারাপ জীবনযাপনের কারণে হার্টের সমস্যা দেখা যায়।
কারো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা তো আবার কারও উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শীতে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে। কিন্তু এ সময় কেন তা দ্রুত বাড়ে জানেন কি? এই সমস্যা থেকে কীভাবেই বা মুক্তি পেতে পারেন? আসুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাকÑ
# মনে রাখবেন, ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর করতে চাইলে সূর্যের আলোর চেয়ে ভালো বিকল্প আর হতে পারে না।

তবে শীতকালে সূর্যের আলো কম থাকে। ফলে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দেয়। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
# শীতকালে শরীর গরম রাখতে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্যতালিকায় আরও বেশি ক্যালরি রাখি আমরা। মনে রাখবেন, শীতে ভাজা খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এসব বিষয়ে নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
যেভাবে উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবেনÑ
# শীতে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার রাখুন ডায়েটে। যখনই রোদ উঠবে, অবশ্যই বারান্দায় বসবেন। অন্তত ঘণ্টাখানেক রোদে বসুন।
# শীতে জাংক ফুড কম খান। লবণও কম ব্যবহার করুন। কারণ, এটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
# অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেও কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। এ সময় স্ট্রেস বা টেনশন এড়ানো উচিত। ধ্যান, প্রাণায়াম বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করে চাপমুক্ত থাকতে পারেন।
# শীতে খাদ্যতালিকায় ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না। ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। সঙ্গে উচ্চ কোলেস্টেরল বাড়াতে বাধা দেয়।
# শীতকালে পানি পান বন্ধ করবেন না।

মনে রাখবেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে করলে অনেক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
# শীতকালে সক্রিয় থাকা জরুরি। এজন্য ব্যায়াম বা ওয়ার্কআউট, যোগব্যায়াম ও প্রাণায়ামও করতে পারেন। দৌড়ানো এবং জগিং করাও ভালো। এ ছাড়া ভালো ঘুম সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। তাই অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।