ঢাকা ১০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের নারীরা কাজ হারানোর শঙ্কায় বিপন্ন

  • আপডেট সময় : ০৭:৫২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশের সমসংখ্যক নারীর উন্নয়ন কর্মযোগে অংশ নেওয়া সময়ের চাহিদা, বিভিন্ন বৈচিত্রিক পেশায় নারীরা নিজেদের প্রমাণও করে যাচ্ছেন। এরপরও নানা মাত্রিক বিপর্যয়ও পিছু ছাড়ে না। সম্প্রতি নারীর ক্ষমতায়নের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে- কর্মজীবী নারীদের সন্তানের জন্য যে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে পরিস্থিতির কারণে যারা কর্মজীবী মায়েদের পাশে দাঁড়ান, তারাই আজ চাকরি হারানোর শঙ্কায় বিপন্ন।

সরকারি নীতি নির্ধারকদের বিভিন্ন সময় নতুন নিয়ম চালু করার জন্য অনেক নারীর চাকরি হারানোর দুঃসময় সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলছে। সম্প্রতি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য আপা, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ও জয়িতার মতো প্রকল্পের সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন। সেখানে নারীকর্মী রয়েছেন ১ হাজার ৭০০।

চাকরি হারানো মানেই মাঝ বয়সি নারীদের জীবন আর পরিবারে কালো ছায়া নেমে আসা।
উন্নয়ন যাত্রায় নারীরা কর্মসংস্থানে যুক্ত হচ্ছেন। সেখানে বেড়ে যাওয়ার সংখ্যাও স্বস্তিদায়ক। কর্মজীবী নারীর জন্য শুধু চাকরির সুযোগ-সুবিধাই নয়, বরং সন্তানের দেখভালের বিষয় একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রও নিতান্ত জরুরি; যাতে মায়েরা নিশ্চিন্তে-নির্বিঘ্নে তাদের পেশাগত জীবন চালিয়ে নিতে পারেন। তেমন স্বাস্থ্যকর দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানা যায়। এমন বাস্তব প্রেক্ষাপটে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মীর বেতন-ভাতা বন্ধ। চলতে থাকা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে কর্মীদের চাকরিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

ইতোমধ্যে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে কর্মীদের বেতনও বন্ধ। তাদের মধ্যে নারীরাও রয়েছেন। এমনিতে নারীদের চাকরি হারানো শঙ্কা বিভিন্ন সময়ে উঠে আসে। মাঝ বয়সে কর্মজীবন থেকে ছিটকে পড়ে তারা কোথায় যাবেন? আন্দোলন আর বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসেন অসহায় সংশ্লিষ্ট নারীরা। এ তো গেল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মীর দুর্ভোগ।

অন্যদিকে রয়েছে কর্মজীবী মায়েদেরও কর্মস্থলে সঠিক মনোযোগ দেওয়া নিয়ে বিপন্নতা, দুশ্চিন্তা, এক সময় একান্নবর্তী পরিবারে এমন সমস্যা হতো না। চাকরিজীবী নারীর সংখ্যাও ছিল কম। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক যুগে নারীরা যেমন শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি বৈচিত্রিক কর্মযোগেও সম্পৃক্ত হচ্ছেন। তাই একদিকে দিবাযত্ন কেন্দ্রের নারী কর্মীরা দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন, অন্যদিকে কর্মজীবী নারী সমাজ তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

তথ্য আপা প্রকল্পের নারী কর্মীরা তাদের চাকরি স্থায়ী করণে সড়কে নেমে আসেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৭২ দিন আন্দোলনের মুখে সরকারি নীতি নির্ধারকরা তাদের চাকরির ব্যাপারে দাবি-দাওয়া পূরণের যৌক্তিকতাও বিবেচনায় আনেন। ইতোমধ্যে নারীরা চাকরিতে যোগও দেন। তার পরেও তাদের আশঙ্কা এখনো কাটেনি।

অনিশ্চয়তার চরম দুর্বিপাকে পড়া তথ্য আপারা ঝুঁকিপূর্ণ সময় কাটাচ্ছেন। কারণ শর্ষের মধ্যেই নাকি ভূত। হিসাব মেলাতে গিয়ে অনেক ভুলভ্রান্তিও সামনে এসে যাচ্ছে। জানা যায় প্রকল্পেই নাকি নানামাত্রিক অসঙ্গতি। এমন অহেতুক বিপন্নতার দায় এসে পড়ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর। তবে যারা এমন সব প্রকল্প তৈরি করেন তারা কি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন?

বলা হচ্ছে, নীতিনির্ধারকের ভুলত্রুটি কিংবা অসঙ্গতির দায়-দায়িত্ব কাদের ওপর বর্তাবে? অসহায় কর্মী, নাকি যারা প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ, দুশ্চিন্তার কারণ হচ্ছেন। তাই বিজ্ঞজনদের কাছ থেকে পরামর্শ আসছে যথাযথ পর্যবেক্ষণ এবং দায়বদ্ধতায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো শুধু যাচাই-বাছাই নয় বরং যৌক্তিক প্রাসঙ্গিক, সময়োপযোগী এবং যাদের জন্য এই প্রকল্প তাদের প্রতিও যথেষ্ট দায়বদ্ধতা পরিস্থিতির ন্যায্যতা।
যাদের অসাবধানতার কারণে এমন অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিভিন্ন কর্মী তাদেরও চিহ্নিত করা জরুরি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় সব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিতান্ত দায়বদ্ধতা। সুষ্ঠু এবং সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বানচালই শুধু নয়, ভুক্তভোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা, অনিরাপত্তা তৈরি সেটিরও যথাযথ সুরাহা আশু জরুরি। এখানে নারীদের প্রতিও বিশেষ দায়বদ্ধতা থেকে যায়। এমনিতে সমাজ ব্যবস্থার নানামাত্রিক ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে নারীর চাকরি হারানোর বিষদৃশ্য সামনে আসে। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভুলের মাশুল নিরীহ শ্রমজীবী নারীরা কেন বয়ে বেড়াবেন। এর আশু সমাধানই শুধু নয়; বরং প্রকল্পের হরেক বিপন্নতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করা জরুরি।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের নারীরা কাজ হারানোর শঙ্কায় বিপন্ন

আপডেট সময় : ০৭:৫২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশের সমসংখ্যক নারীর উন্নয়ন কর্মযোগে অংশ নেওয়া সময়ের চাহিদা, বিভিন্ন বৈচিত্রিক পেশায় নারীরা নিজেদের প্রমাণও করে যাচ্ছেন। এরপরও নানা মাত্রিক বিপর্যয়ও পিছু ছাড়ে না। সম্প্রতি নারীর ক্ষমতায়নের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে- কর্মজীবী নারীদের সন্তানের জন্য যে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে পরিস্থিতির কারণে যারা কর্মজীবী মায়েদের পাশে দাঁড়ান, তারাই আজ চাকরি হারানোর শঙ্কায় বিপন্ন।

সরকারি নীতি নির্ধারকদের বিভিন্ন সময় নতুন নিয়ম চালু করার জন্য অনেক নারীর চাকরি হারানোর দুঃসময় সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়ে তুলছে। সম্প্রতি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য আপা, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ও জয়িতার মতো প্রকল্পের সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন। সেখানে নারীকর্মী রয়েছেন ১ হাজার ৭০০।

চাকরি হারানো মানেই মাঝ বয়সি নারীদের জীবন আর পরিবারে কালো ছায়া নেমে আসা।
উন্নয়ন যাত্রায় নারীরা কর্মসংস্থানে যুক্ত হচ্ছেন। সেখানে বেড়ে যাওয়ার সংখ্যাও স্বস্তিদায়ক। কর্মজীবী নারীর জন্য শুধু চাকরির সুযোগ-সুবিধাই নয়, বরং সন্তানের দেখভালের বিষয় একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রও নিতান্ত জরুরি; যাতে মায়েরা নিশ্চিন্তে-নির্বিঘ্নে তাদের পেশাগত জীবন চালিয়ে নিতে পারেন। তেমন স্বাস্থ্যকর দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানা যায়। এমন বাস্তব প্রেক্ষাপটে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মীর বেতন-ভাতা বন্ধ। চলতে থাকা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে কর্মীদের চাকরিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

ইতোমধ্যে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে কর্মীদের বেতনও বন্ধ। তাদের মধ্যে নারীরাও রয়েছেন। এমনিতে নারীদের চাকরি হারানো শঙ্কা বিভিন্ন সময়ে উঠে আসে। মাঝ বয়সে কর্মজীবন থেকে ছিটকে পড়ে তারা কোথায় যাবেন? আন্দোলন আর বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসেন অসহায় সংশ্লিষ্ট নারীরা। এ তো গেল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মীর দুর্ভোগ।

অন্যদিকে রয়েছে কর্মজীবী মায়েদেরও কর্মস্থলে সঠিক মনোযোগ দেওয়া নিয়ে বিপন্নতা, দুশ্চিন্তা, এক সময় একান্নবর্তী পরিবারে এমন সমস্যা হতো না। চাকরিজীবী নারীর সংখ্যাও ছিল কম। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির আধুনিক যুগে নারীরা যেমন শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি বৈচিত্রিক কর্মযোগেও সম্পৃক্ত হচ্ছেন। তাই একদিকে দিবাযত্ন কেন্দ্রের নারী কর্মীরা দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন, অন্যদিকে কর্মজীবী নারী সমাজ তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

তথ্য আপা প্রকল্পের নারী কর্মীরা তাদের চাকরি স্থায়ী করণে সড়কে নেমে আসেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৭২ দিন আন্দোলনের মুখে সরকারি নীতি নির্ধারকরা তাদের চাকরির ব্যাপারে দাবি-দাওয়া পূরণের যৌক্তিকতাও বিবেচনায় আনেন। ইতোমধ্যে নারীরা চাকরিতে যোগও দেন। তার পরেও তাদের আশঙ্কা এখনো কাটেনি।

অনিশ্চয়তার চরম দুর্বিপাকে পড়া তথ্য আপারা ঝুঁকিপূর্ণ সময় কাটাচ্ছেন। কারণ শর্ষের মধ্যেই নাকি ভূত। হিসাব মেলাতে গিয়ে অনেক ভুলভ্রান্তিও সামনে এসে যাচ্ছে। জানা যায় প্রকল্পেই নাকি নানামাত্রিক অসঙ্গতি। এমন অহেতুক বিপন্নতার দায় এসে পড়ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর। তবে যারা এমন সব প্রকল্প তৈরি করেন তারা কি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন?

বলা হচ্ছে, নীতিনির্ধারকের ভুলত্রুটি কিংবা অসঙ্গতির দায়-দায়িত্ব কাদের ওপর বর্তাবে? অসহায় কর্মী, নাকি যারা প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ, দুশ্চিন্তার কারণ হচ্ছেন। তাই বিজ্ঞজনদের কাছ থেকে পরামর্শ আসছে যথাযথ পর্যবেক্ষণ এবং দায়বদ্ধতায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো শুধু যাচাই-বাছাই নয় বরং যৌক্তিক প্রাসঙ্গিক, সময়োপযোগী এবং যাদের জন্য এই প্রকল্প তাদের প্রতিও যথেষ্ট দায়বদ্ধতা পরিস্থিতির ন্যায্যতা।
যাদের অসাবধানতার কারণে এমন অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিভিন্ন কর্মী তাদেরও চিহ্নিত করা জরুরি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় সব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিতান্ত দায়বদ্ধতা। সুষ্ঠু এবং সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বানচালই শুধু নয়, ভুক্তভোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা, অনিরাপত্তা তৈরি সেটিরও যথাযথ সুরাহা আশু জরুরি। এখানে নারীদের প্রতিও বিশেষ দায়বদ্ধতা থেকে যায়। এমনিতে সমাজ ব্যবস্থার নানামাত্রিক ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে নারীর চাকরি হারানোর বিষদৃশ্য সামনে আসে। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভুলের মাশুল নিরীহ শ্রমজীবী নারীরা কেন বয়ে বেড়াবেন। এর আশু সমাধানই শুধু নয়; বরং প্রকল্পের হরেক বিপন্নতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করা জরুরি।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ