মাহমুদুল হক রিয়াদ : শিশুশ্রমের অভিশাপ থেকে দেশ এখনো মুক্ত হতে পারেনি। শিশুদের কোমল হাতে কঠিন সব কাজ করতে দেখা যায় হরহামেশাই। শিশুশ্রমের জন্য প্রধানত দায়ী করা হয় দারিদ্র্যকে। অনেক পরিবার শিশুর উপার্জনের উপরই নির্ভর করে। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে ভরণপোষণ মিটিয়ে শিশুদের পড়াশোনার খরচ জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে অভিভাবকেরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন।
যে বয়সে একটি শিশুর বই, খাতা, পেন্সিল নিয়ে স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা করার কথা তখন তাকে নামতে হয় জীবিকার সন্ধানে। সহপাঠীদের সঙ্গে হই-হুল্লোড় করে খেলাধুলার সুযোগটা তার হয়ে ওঠে না। অভিভাবকদের অনেকেও মনে করেন শিশুকে কাজে পাঠানো বেশি লাভজনক। এছাড়াও মালিকদের অনেকে শিশুদের কাজে নিয়োগ দেন অল্প পারিশ্রমিকে অনেক কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এ শিশুদের ন্যূনতম বয়স ১৪ আর কিশোরদের বয়স ১৪-১৮ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ১৪ বছরের কম বয়সীদের কাজে নিয়োগ করা যাবে না। শিশুর অভিভাবক কাজ করানোর জন্য কারো সাথে কোনো প্রকার চুক্তি করতে পারবে না। এই আইনে আরো বলা হয়েছে, ১২ বছর বয়সী শিশুদের দিয়ে সেই কাজগুলোই করানো যাবে যেগুলো তাদের স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি করবে না এবং শিক্ষা গ্রহণের অধিকার বিঘিœত করবে না। জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে ১৯৯০ সালে সাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এই সনদে বলা হয়েছে, স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনা করে সদস্য রাষ্ট্রগুলো শিশুশ্রমের জন্য বয়স, বিশেষ কর্মঘণ্টা ও নিয়োগে যথার্থ শর্তাবলী নির্ধারণ করবে। এছাড়াও শিশুর সুরক্ষা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়েছে যা পরোক্ষভাবে শিশুশ্রম নিরসনে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, ১২ জুন ছিল বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করি, শিশুশ্রম বন্ধ করি।’ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর উদ্যোগে ২০০২ সালের ১২ জুন প্রথম দিবসটি পালিত হয়।-সৌজন্যে : বিডিনিউজের শিশু সাংবাদিকদের বিভাগ ‘হ্যালো’।
শিশুশ্রমের শেষ কোথায়?
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ