নারী ও শিশু প্রতিবেদন : শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ, শিক্ষা এবং যতœ প্রদান নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সার্বিক বিকাশ, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং মৃত্যুঝুঁকি কমিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ইনটিগ্রেটেড ‘কমিউনিটি বেইজড সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার, প্রটেকশন অ্যান্ড সুইম- সেইফ ফেসিলিটিজ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সমাজভিত্তিক শিশু যতœকেন্দ্র স্থাপন ও শিশুদের সাঁতার শেখানোসহ অভিভাবকদের সচেতন করা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে; যা শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারা দেশে ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ৮ হাজারটি শিশু-যতœকেন্দ্র পরিচালনা করা হবে।
জানা গেছে, প্রকল্প ব্যয়ের মোট ২৭১ কোটি ৬১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মধ্যে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিজ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রয়্যাল ন্যাশনাল লাইফবোট ইনস্টিটিউট, যুক্তরাজ্যের অনুদান রয়েছে ৫৪ কোটি ২০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। বাকি ২১৭ কোটি ৬১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে সরকার। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়িত হবে।
পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করা প্রকল্প প্রোফাইলে দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ, শিক্ষা এবং যতœ প্রদান নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সার্বিক বিকাশ, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং মৃত্যু ঝুঁকি কমিয়ে আনাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজারটি শিশু যতœকেন্দ্র পরিচালনার পাশাপাশি ৬২৪ জন প্রশিক্ষক, ১৬ হাজার যতœকারী এবং ১ হাজার ৬০০ জন সাঁতার ইনস্ট্রাক্টরের মৌলিক ও রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১৯ হাজার ২০০ জন অভিভাবকের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর বাইরেও প্রকল্প কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় পর্যায়ের ৪৬০ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণ বা ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবনায় উল্লেখ রয়েছে।
এ ছাড়াও প্রকল্প প্রস্তাবনায় সেমিনার, কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ রয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সংকট মেটাতে ১৭টি অফিস ভবন ভাড়া করা হবে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ১৬টি জেলা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) এডিপিতে বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের জন্য সমাজভিত্তিক শিশু যতœকেন্দ্র স্থাপন এবং জীবন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিশুর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। বিধায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমাজভিত্তিক শিশু যতœকেন্দ্র স্থাপন, শিশুদের সাঁতার শেখানোসহ অভিভাবকদের সচেতন করা হবে, যা শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মতামত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিশুর বিকাশ, শিক্ষা ও যতœ নিশ্চিত হবে। এতে গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ের শিশুরা উপকৃত হবে, সুবিধা পাবে।
শিশুর বিকাশ, শিক্ষা ও যতœ নিশ্চিতে ২৭১ কোটি টাকার প্রকল্প
ট্যাগস :
শিশুর বিকাশ
জনপ্রিয় সংবাদ