ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

শিশুদের নিয়ন্ত্রিত জীবন গঠন সহজ করে নিয়মানুবর্তিতা

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: শিশুদের সঠিক ও সুস্থ বিকাশের জন্য ছোট থেকে নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে হবে। এতে শিশুদের নিয়ন্ত্রিত জীবন গঠন সহজ হয়। পরামর্শ দিয়েছেন কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ড. সেলিম চৌধুরী। লিখেছেন মো. শিহাব শাহরিয়ার।

শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়। বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শিখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়।

বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শেখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়। বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শেখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। এগুলো হলো-
নির্দেশ পালন: বুদ্ধিগত সীমাবদ্ধতা না থাকলে শিশুর জন্ম থেকে দুই বছরের মধ্যে নির্দেশ পালন করতে শেখে। নির্দেশ পালনের মাধ্যমেই শিশু নিয়মানুবর্তিতা শিখতে শুরু করে। সরাসরি মুখে বলে কিংবা ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে শিশুকে নির্দেশনা দেওয়া যায়। শিশুরা অনেক সময় নির্দিষ্ট নির্দেশনা ভুলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বারবার ওই নির্দেশনা দিতে হবে যেন তা অভ্যাসে পরিণত হয়। যথাযথ নির্দেশ পালনের মাধ্যমে শিশুরা পারিবারিক ও সামাজিক আচরণ শিখবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা দৈনন্দিন জীবনের করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।

পুরস্কৃত করা: শিশুরা নির্দিষ্ট নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করলে তার প্রশংসা করুন। প্রশংসা পাওয়ার মাধ্যমে শিশুরা ওই নির্দিষ্ট নির্দেশ পালনে পরবর্তী সময়ে আরো আগ্রহী হয়ে ওঠে। কখনো হাততালি কিংবা কখনো আদর করে অভিভাবকরা শিশুদের পুরস্কৃত করতে পারেন। শিশুরা পুরস্কৃত হলে তাদের ওই বিষয়ের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়
অভিভাবকদের পথপ্রদর্শন: শিশুরা অনুকরণ করতে পছন্দ করে। চারপাশের মানুষদের পর্যবেক্ষণ করে আচরণ শিখতে শুরু করে তারা। তাই শিশুদের কোনো বিষয় শেখাতে হলে অভিভাবককে অবশ্যই সেই বিষয় নিজে পালন করতে হবে। সামাজিক পরিবেশে চলমান কার্যকলাপ শিশুবান্ধব হলে শিশুকে নিয়মানুবর্তিতা শেখানো সহজ হয়।

বয়স উপযোগী নিয়মানুবর্তিতা: শিশুদের নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে বয়স এবং মানসিক বৃদ্ধির দিকে লক্ষ রাখা দরকার। বয়সের সঙ্গে মানানসই নয়, এমন কঠোর নিয়ম পালনে শিশুদের বাধ্য করলে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হবে। শিশুরা কোনো নিয়ম পালনে ব্যর্থ হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কঠোর শাস্তি প্রদান শিশুদের মনে ভীতি সৃষ্টি করে। এতে সে পরবর্তী সময়ে আক্রমণাত্মক আচরণের প্রকাশ পেতে পারে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু: যেসব শিশুর বয়স অনুযায়ী শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকে, তারা সব নির্দেশনা সঠিকভাবে বুঝে পালন করতে পারে না। তাদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বিশেষ সচেতন হতে হবে। বারবার নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও যদি সেটা পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের ব্যাপারে মনোবিদদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। নির্দিষ্ট সমস্যা খুঁজে সে অনুযায়ী এসব শিশুর প্রতি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিশুর স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিতকরণ: শিশুদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা তৈরি করবে, এমন কোনো নিয়ম শেখানো ঠিক নয়। শিশুর প্রতি কোমল আচরণ বজায় রেখে নিয়ম-কানুন পালনে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শিশুদের খেলার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে, বাসার মধ্যে জোর করে আটকে না রেখে প্রকৃতির সঙ্গে সময় উপভোগ করতে দেওয়া দরকার। সামাজিক পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শিশুদের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানো ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিশতে দিন।
শিশুদের নিয়মানুবর্তিতা না শেখালে তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের আচরণগত সমস্যার সৃষ্টি হয়। এতে তাদের পরবর্তী জীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শিশুদের নিয়ন্ত্রিত জীবন গঠন সহজ করে নিয়মানুবর্তিতা

আপডেট সময় : ০৪:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: শিশুদের সঠিক ও সুস্থ বিকাশের জন্য ছোট থেকে নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে হবে। এতে শিশুদের নিয়ন্ত্রিত জীবন গঠন সহজ হয়। পরামর্শ দিয়েছেন কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ড. সেলিম চৌধুরী। লিখেছেন মো. শিহাব শাহরিয়ার।

শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়। বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শিখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়।

বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শেখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী মেধা বিকাশ হয়। বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে শিশু তার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থেকে জ্ঞান আহরণ করে এবং সে অনুযায়ী আচরণ করতে শেখে। তাই শিশুদের জন্য নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। এগুলো হলো-
নির্দেশ পালন: বুদ্ধিগত সীমাবদ্ধতা না থাকলে শিশুর জন্ম থেকে দুই বছরের মধ্যে নির্দেশ পালন করতে শেখে। নির্দেশ পালনের মাধ্যমেই শিশু নিয়মানুবর্তিতা শিখতে শুরু করে। সরাসরি মুখে বলে কিংবা ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে শিশুকে নির্দেশনা দেওয়া যায়। শিশুরা অনেক সময় নির্দিষ্ট নির্দেশনা ভুলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বারবার ওই নির্দেশনা দিতে হবে যেন তা অভ্যাসে পরিণত হয়। যথাযথ নির্দেশ পালনের মাধ্যমে শিশুরা পারিবারিক ও সামাজিক আচরণ শিখবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা দৈনন্দিন জীবনের করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।

পুরস্কৃত করা: শিশুরা নির্দিষ্ট নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করলে তার প্রশংসা করুন। প্রশংসা পাওয়ার মাধ্যমে শিশুরা ওই নির্দিষ্ট নির্দেশ পালনে পরবর্তী সময়ে আরো আগ্রহী হয়ে ওঠে। কখনো হাততালি কিংবা কখনো আদর করে অভিভাবকরা শিশুদের পুরস্কৃত করতে পারেন। শিশুরা পুরস্কৃত হলে তাদের ওই বিষয়ের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়
অভিভাবকদের পথপ্রদর্শন: শিশুরা অনুকরণ করতে পছন্দ করে। চারপাশের মানুষদের পর্যবেক্ষণ করে আচরণ শিখতে শুরু করে তারা। তাই শিশুদের কোনো বিষয় শেখাতে হলে অভিভাবককে অবশ্যই সেই বিষয় নিজে পালন করতে হবে। সামাজিক পরিবেশে চলমান কার্যকলাপ শিশুবান্ধব হলে শিশুকে নিয়মানুবর্তিতা শেখানো সহজ হয়।

বয়স উপযোগী নিয়মানুবর্তিতা: শিশুদের নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ক্ষেত্রে বয়স এবং মানসিক বৃদ্ধির দিকে লক্ষ রাখা দরকার। বয়সের সঙ্গে মানানসই নয়, এমন কঠোর নিয়ম পালনে শিশুদের বাধ্য করলে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হবে। শিশুরা কোনো নিয়ম পালনে ব্যর্থ হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কঠোর শাস্তি প্রদান শিশুদের মনে ভীতি সৃষ্টি করে। এতে সে পরবর্তী সময়ে আক্রমণাত্মক আচরণের প্রকাশ পেতে পারে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু: যেসব শিশুর বয়স অনুযায়ী শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকে, তারা সব নির্দেশনা সঠিকভাবে বুঝে পালন করতে পারে না। তাদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বিশেষ সচেতন হতে হবে। বারবার নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও যদি সেটা পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের ব্যাপারে মনোবিদদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। নির্দিষ্ট সমস্যা খুঁজে সে অনুযায়ী এসব শিশুর প্রতি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিশুর স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিতকরণ: শিশুদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা তৈরি করবে, এমন কোনো নিয়ম শেখানো ঠিক নয়। শিশুর প্রতি কোমল আচরণ বজায় রেখে নিয়ম-কানুন পালনে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শিশুদের খেলার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে, বাসার মধ্যে জোর করে আটকে না রেখে প্রকৃতির সঙ্গে সময় উপভোগ করতে দেওয়া দরকার। সামাজিক পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শিশুদের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানো ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিশতে দিন।
শিশুদের নিয়মানুবর্তিতা না শেখালে তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের আচরণগত সমস্যার সৃষ্টি হয়। এতে তাদের পরবর্তী জীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।