ঢাকা ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চায় বিজিএমইএ

  • আপডেট সময় : ০২:২০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্যাসের মূল্য ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে শিল্পে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বরাবর চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, আপনি অবগত আছেন যে, তৈরি পোশাক শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশ অর্জিত হচ্ছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষ এ শিল্পের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া টেরিটাওয়েল, বস্ত্রশিল্প ও অন্যান্য খাতসহ অর্জিত হয় প্রায় ৮৮ শতাংশ।
সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় করোনাকালীন সংকট মোকাবিলা করে বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট চলছে। রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অনিয়মিত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে সরকার ১২ জানুয়ারি গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর কিছুদিন আগে বিদ্যুতের খুচরা মূল্যও বাড়ানো হয়। এ অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে এরই মধ্যেই কাঁচামালের মূল্য বেড়েছে এবং একই সঙ্গে পোশাক উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে মূল্য স্ফীতি বেড়ে গেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেড়ে গেছে এবং আরও বাড়বে। ফলশ্রুতিতে তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম অত্যধিক বৃদ্ধিতে শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে এবং শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। এতে করে সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অবস্থায় গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্য না বাড়িয়ে সিষ্টেম লস, মিটার রিডিং, অবৈধ সংযোগ, হুস কানেকশন ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বন্ধ করতে হবে, অর্থাৎ সিস্টেম লস শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে। বৈশ্বিক সংকট লাঘবে আগামী এক বছরের জন্য আমদানিকৃত জ্বালানি পণ্যে কাস্টমস শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি। প্রসঙ্গত, সরকার তিনটি পদ্ধতির মাধ্যম গ্যাস সংগ্রহ করে বিপণন করে থাকে। যার মধ্যে একটি দেশীয় ন্যাচারাল গ্যাস, দ্বিতীয়টি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিভিত্তিক আমদানিকৃত এলএনজি এবং তৃতীয়টি স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়কৃত এলএনজি- এ তিনটির সমন্বয়ের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একসঙ্গে এত মূল্য না বাড়িয়ে ক্রমান্বয়ে সহনীয় পর্যায়ে বাড়ানো হলে এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চায় বিজিএমইএ

আপডেট সময় : ০২:২০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্যাসের মূল্য ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে শিল্পে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বরাবর চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, আপনি অবগত আছেন যে, তৈরি পোশাক শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশ অর্জিত হচ্ছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষ এ শিল্পের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া টেরিটাওয়েল, বস্ত্রশিল্প ও অন্যান্য খাতসহ অর্জিত হয় প্রায় ৮৮ শতাংশ।
সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় করোনাকালীন সংকট মোকাবিলা করে বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট চলছে। রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অনিয়মিত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে সরকার ১২ জানুয়ারি গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর কিছুদিন আগে বিদ্যুতের খুচরা মূল্যও বাড়ানো হয়। এ অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে এরই মধ্যেই কাঁচামালের মূল্য বেড়েছে এবং একই সঙ্গে পোশাক উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে মূল্য স্ফীতি বেড়ে গেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেড়ে গেছে এবং আরও বাড়বে। ফলশ্রুতিতে তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম অত্যধিক বৃদ্ধিতে শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে এবং শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। এতে করে সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অবস্থায় গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্য না বাড়িয়ে সিষ্টেম লস, মিটার রিডিং, অবৈধ সংযোগ, হুস কানেকশন ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বন্ধ করতে হবে, অর্থাৎ সিস্টেম লস শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে। বৈশ্বিক সংকট লাঘবে আগামী এক বছরের জন্য আমদানিকৃত জ্বালানি পণ্যে কাস্টমস শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি। প্রসঙ্গত, সরকার তিনটি পদ্ধতির মাধ্যম গ্যাস সংগ্রহ করে বিপণন করে থাকে। যার মধ্যে একটি দেশীয় ন্যাচারাল গ্যাস, দ্বিতীয়টি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিভিত্তিক আমদানিকৃত এলএনজি এবং তৃতীয়টি স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়কৃত এলএনজি- এ তিনটির সমন্বয়ের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একসঙ্গে এত মূল্য না বাড়িয়ে ক্রমান্বয়ে সহনীয় পর্যায়ে বাড়ানো হলে এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে।