ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

শিবিরকেই কেন বেছে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট সময় : ০৫:১২:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

কাজী সুমন

ডাকসুতে ২৮ পদের ২৫টিতে শিবির। জাকসুতেও ২৫ পদের ২০টিতেই শিবির। চাকসুতে ২৬ পদের ২৪টিতেই শিবির। একেবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অনেকে বলছেন ভূমিধস বিজয়। বাকি রাকসুর ফলাফল। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তো একেবারে শিবিরের ক্যান্টনমেন্ট। ফলাফল কী হবে তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কেন শিবিরের এই বিস্ময়কর উত্থান। আর শিবিরকেই কেন বেছে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে পাওয়ার পলিটিক্স। অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি। ক্যাম্পাসে আধিপত্য নিয়ে মারামারি, খুনাখুনি। তুচ্ছ ঘটনায় পড়েছে লাশ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দাদাগিরি। হলের সিট নিয়ন্ত্রণ, প্রকাশ্যে বাণিজ্য। গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি। ভর্তি কোটায় বৈষম্য। প্রচলিত রাজনীতির এসব ধারা দেখে বর্তমান প্রজন্ম আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অনেকটা বিরক্ত এই প্রজন্মের তরুণরা। এ ছাড়া যে ন্যারেটিভের ওপর দাঁড়িয়ে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে সেই একই ‘রাজাকার’ কার্ড দিয়ে বিরোধীরা চালিয়েছে প্রচারণা। এতে হয়েছে হীতে বিপরীত। এছাড়া ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ধর্মভিরু। এতদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে আসা ছাত্রসংগঠনগুলো এসব বিষয়ে ছিল উদাসীন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে বড় দুটি ছাত্র সংগঠন থেকে অনেকটা আলাদা ছাত্রশিবির। সংগঠনটির মূল বিউটি হলো ডিসিপ্লিন। কৌশলী, বৈচিত্র্যময় ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনানির্ভর রাজনীতি। সারাদেশব্যাপী সংগঠনটির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে ফোকাস, রেটিনা, উন্মেষসহ বেশ কয়েকটি ভর্তি কোচিং সেন্টার। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুনো অজপাড়া গাঁ থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে শিবির। এসব কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নানাভাবে সহায়তা করে সংগঠনটি। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ফ্রিতে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও শিক্ষার্থীদের গাইড করেন শিবির নেতারা। ভর্তির ফরম কেটে দেওয়া, কোথায় সিট পড়েছে বের করে দেওয়া, কী ধরনের প্রশ্ন আসবে- তা বাতলে দেওয়া। আর এসব কোচিং সেন্টার থেকেই বেশির ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী বুয়েট, মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির সুযোগ পান। এতে সংগঠনটির নেতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে পটপরিবর্তনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত গত ১৬ বছর শাসন করে আসা ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই সুযোগে গোপনে ফাঁকা ক্যাম্পাসে নানা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে শিবির। সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। হলের পানির সমস্যা দূর করতে বসিয়েছে পানির ট্যাংক। আর এতেই হলে হলে নিজেদের অবস্থান শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছে। ধর্মভিরু শিক্ষার্থীদের টেনে নিয়েছে কাছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণায় শিবিরের রয়েছে ফেসবুক গ্রুপ। নানা নামে রয়েছে ফেক আইডি। এসব গ্রুপ ও আইডির রয়েছে লাখ লাখ ফলোয়ার। যেকোন ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণায় সহজেই বিরোধীদের ঘায়েল করেছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলো।

শিবিরের কৌশলের বিপরীতে পাল্টা কোনো কৌশলই নিতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল। সংগঠনটির রাজনীতি অনেকটা সেøাগাননির্ভর। ওমুক ভাই-তমুক ভাই সিন্ডিকেটে আবদ্ধ। কমিটিতে মেধাবীদের জায়গা নেই। এর উপর গত ১৭ বছর ঢাবি ক্যাম্পাসেই প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রদল। ঢাবি, জাবি, চবির কোন হলেই কার্যক্রম চালাতে পারেনি সংগঠনটি। কমিটির বাইরে নেই নতুন রিক্রুট।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখার কোন জ্যেষ্ঠ নেতার ছাত্রত্ব নেই। কনিষ্ঠ অপরিচিত মুখদের প্রার্থীদের করা হয়েছে। পুরো প্যানেল দিতে পারেনি অধিকাংশ হলে। তার ওপরে ডাকসু নির্বাচনের আগে হল কমিটি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে সংগঠনটি। তা ছাড়া গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাধারণ ছাত্রদের মনস্তত্ত্বে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটি বিবেচনা করা হয়নি। শীর্ষ পদে যে তিনজন ভালো ভোট পেয়েছেন তাও নিজের ক্যারিশমায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা ভোট দিয়েছেন তারা যে সবাই শিবিরের আদর্শ চিন্তা করে ভোট দিয়েছেন তা নয়, তারা ক্যাম্পাসে দখলদারীর ছাত্র রাজনীতির আশঙ্কা থেকে ভোট দিয়েছেন। কারণ তারা অতীতে অনেক ছাত্র সংগঠনের দখলদারিত্বের রাজনীতি দেখেছেন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই বিবেচনায় শিবিরের রেকর্ড নাই। আর ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে তাদের বড় একটা ভূমিকা ছিলো। তারা মনে করেছে, ছাত্রদল জিতলে তারা ছাত্রলীগের মতোই ক্যাম্পাসে আধিপত্য ও দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। গেস্টরুম কালচার তৈরি করবে। সাধারণ ছাত্ররা নির্যাতনের শিকার হবে। সেই বিবেচনায় ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের ইমেজ ভালো ছিলো। আর ছাত্রদলের মধ্যে একট দাম্ভিক ভাব চলে এসেছে। যা ছাত্ররা খেয়াল করেছে। ছাত্রদল জিতলে তারাও ওই রকম হবে। তারও একটা জবাব দিয়েছে তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিবিরকে মোকাবিলা করতে হলে রাজনীতির কৌশল বদলাতে হবে ছাত্রদলকে। পুরনো চিরাচরিত রাজনীতির ধারার পরিবর্তে বাস্তবভিত্তিক নতুন ধারার রাজনীতি করতে হবে। জেন-জি প্রজন্মের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যৎ রাজনীতির কৌশল ঠিক করতে হবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটিকে।

লেখক: সাংবাদিক
(মতামত লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব)

আজকের প্রত্যাশা/ কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শিবিরকেই কেন বেছে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৫:১২:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

কাজী সুমন

ডাকসুতে ২৮ পদের ২৫টিতে শিবির। জাকসুতেও ২৫ পদের ২০টিতেই শিবির। চাকসুতে ২৬ পদের ২৪টিতেই শিবির। একেবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অনেকে বলছেন ভূমিধস বিজয়। বাকি রাকসুর ফলাফল। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তো একেবারে শিবিরের ক্যান্টনমেন্ট। ফলাফল কী হবে তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কেন শিবিরের এই বিস্ময়কর উত্থান। আর শিবিরকেই কেন বেছে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে পাওয়ার পলিটিক্স। অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি। ক্যাম্পাসে আধিপত্য নিয়ে মারামারি, খুনাখুনি। তুচ্ছ ঘটনায় পড়েছে লাশ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দাদাগিরি। হলের সিট নিয়ন্ত্রণ, প্রকাশ্যে বাণিজ্য। গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি। ভর্তি কোটায় বৈষম্য। প্রচলিত রাজনীতির এসব ধারা দেখে বর্তমান প্রজন্ম আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অনেকটা বিরক্ত এই প্রজন্মের তরুণরা। এ ছাড়া যে ন্যারেটিভের ওপর দাঁড়িয়ে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে সেই একই ‘রাজাকার’ কার্ড দিয়ে বিরোধীরা চালিয়েছে প্রচারণা। এতে হয়েছে হীতে বিপরীত। এছাড়া ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ধর্মভিরু। এতদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে আসা ছাত্রসংগঠনগুলো এসব বিষয়ে ছিল উদাসীন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে বড় দুটি ছাত্র সংগঠন থেকে অনেকটা আলাদা ছাত্রশিবির। সংগঠনটির মূল বিউটি হলো ডিসিপ্লিন। কৌশলী, বৈচিত্র্যময় ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনানির্ভর রাজনীতি। সারাদেশব্যাপী সংগঠনটির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে ফোকাস, রেটিনা, উন্মেষসহ বেশ কয়েকটি ভর্তি কোচিং সেন্টার। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুনো অজপাড়া গাঁ থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে শিবির। এসব কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নানাভাবে সহায়তা করে সংগঠনটি। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ফ্রিতে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও শিক্ষার্থীদের গাইড করেন শিবির নেতারা। ভর্তির ফরম কেটে দেওয়া, কোথায় সিট পড়েছে বের করে দেওয়া, কী ধরনের প্রশ্ন আসবে- তা বাতলে দেওয়া। আর এসব কোচিং সেন্টার থেকেই বেশির ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী বুয়েট, মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির সুযোগ পান। এতে সংগঠনটির নেতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে পটপরিবর্তনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত গত ১৬ বছর শাসন করে আসা ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই সুযোগে গোপনে ফাঁকা ক্যাম্পাসে নানা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে শিবির। সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। হলের পানির সমস্যা দূর করতে বসিয়েছে পানির ট্যাংক। আর এতেই হলে হলে নিজেদের অবস্থান শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছে। ধর্মভিরু শিক্ষার্থীদের টেনে নিয়েছে কাছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণায় শিবিরের রয়েছে ফেসবুক গ্রুপ। নানা নামে রয়েছে ফেক আইডি। এসব গ্রুপ ও আইডির রয়েছে লাখ লাখ ফলোয়ার। যেকোন ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণায় সহজেই বিরোধীদের ঘায়েল করেছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলো।

শিবিরের কৌশলের বিপরীতে পাল্টা কোনো কৌশলই নিতে পারেনি প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল। সংগঠনটির রাজনীতি অনেকটা সেøাগাননির্ভর। ওমুক ভাই-তমুক ভাই সিন্ডিকেটে আবদ্ধ। কমিটিতে মেধাবীদের জায়গা নেই। এর উপর গত ১৭ বছর ঢাবি ক্যাম্পাসেই প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রদল। ঢাবি, জাবি, চবির কোন হলেই কার্যক্রম চালাতে পারেনি সংগঠনটি। কমিটির বাইরে নেই নতুন রিক্রুট।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখার কোন জ্যেষ্ঠ নেতার ছাত্রত্ব নেই। কনিষ্ঠ অপরিচিত মুখদের প্রার্থীদের করা হয়েছে। পুরো প্যানেল দিতে পারেনি অধিকাংশ হলে। তার ওপরে ডাকসু নির্বাচনের আগে হল কমিটি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে সংগঠনটি। তা ছাড়া গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাধারণ ছাত্রদের মনস্তত্ত্বে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটি বিবেচনা করা হয়নি। শীর্ষ পদে যে তিনজন ভালো ভোট পেয়েছেন তাও নিজের ক্যারিশমায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা ভোট দিয়েছেন তারা যে সবাই শিবিরের আদর্শ চিন্তা করে ভোট দিয়েছেন তা নয়, তারা ক্যাম্পাসে দখলদারীর ছাত্র রাজনীতির আশঙ্কা থেকে ভোট দিয়েছেন। কারণ তারা অতীতে অনেক ছাত্র সংগঠনের দখলদারিত্বের রাজনীতি দেখেছেন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই বিবেচনায় শিবিরের রেকর্ড নাই। আর ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে তাদের বড় একটা ভূমিকা ছিলো। তারা মনে করেছে, ছাত্রদল জিতলে তারা ছাত্রলীগের মতোই ক্যাম্পাসে আধিপত্য ও দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। গেস্টরুম কালচার তৈরি করবে। সাধারণ ছাত্ররা নির্যাতনের শিকার হবে। সেই বিবেচনায় ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের ইমেজ ভালো ছিলো। আর ছাত্রদলের মধ্যে একট দাম্ভিক ভাব চলে এসেছে। যা ছাত্ররা খেয়াল করেছে। ছাত্রদল জিতলে তারাও ওই রকম হবে। তারও একটা জবাব দিয়েছে তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিবিরকে মোকাবিলা করতে হলে রাজনীতির কৌশল বদলাতে হবে ছাত্রদলকে। পুরনো চিরাচরিত রাজনীতির ধারার পরিবর্তে বাস্তবভিত্তিক নতুন ধারার রাজনীতি করতে হবে। জেন-জি প্রজন্মের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যৎ রাজনীতির কৌশল ঠিক করতে হবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটিকে।

লেখক: সাংবাদিক
(মতামত লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব)

আজকের প্রত্যাশা/ কেএমএএ