প্রত্যাশা ডেস্ক : ঢাকার বেসরকারি মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১২টা থেকে মোল্লা কলেজের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টার এ সংঘর্ষ-সংঘাতে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় মোল্লা কলেজ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদেরকে নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেল, ন্যাশনাল মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে। সংঘাতে মোল্লা কলেজের তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এ হামলায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের কিছু ছাত্র নামধারী ব্যক্তি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মদদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। হামলাকারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী নয়, বরং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গ।” তবে সংঘাতে কোনো প্রাণহানির খবর পুলিশের তরফে নিশ্চিত করা হয়নি। এদিকে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মোল্লা কলেজ ও আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মোতায়েন করা হয়েছে ছয় প্লাটুন বিজিবি সদস্য।
পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার (২৪ নভেম্বর) ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ও পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। গণ্ডগোলের মধ্যে নিরাপত্তার কারণে মাঝপথে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ওই হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে এদিন সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রওনা হন ডেমরা সড়ক সংলগ্ন মোল্লা কলেজে। সেখানে তাদের সঙ্গে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাতুল সরকার বলেন, “ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছিল তারা- এটা সবাই জানে। তারা হামলা করলে আমরা পুলিশকে আসতে বলি ৯৯৯ এ কল দিয়ে। পুলিশ এসেছে অনেক পরে।”
সেনাবাহিনীও আড়াইটার পরে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, “অল্প কয়েকজন পুলিশ ছিল প্রথমে। তারা হামলার শুরুতে দূরে সরে যায়। সেনাবাহিনী, পুলিশ আগে আসলে কোনো ক্ষতি হতো না।’ হামলায় মূল সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ১০ তলা উঁচু ভবনের সামনের অংশের কাঁচ ভেঙে দেয়। আর পেছনের তিনটি ভবনের বেশিরভাগ কক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়; বেঞ্চ, সিলিং ফ্যান, সিসি ক্যামেরা, চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে অধ্যক্ষের অফিস, ল্যাবরেটরি ও ল্যাবও আছে। মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষে ৪ কিলোমিটার দূরের সানারপাড় রওশন আরা কলেজ থেকে আসেন শিক্ষার্থী সাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, “আমাদের ফেসবুক গ্রুপ আছে কলেজের ছাত্রদের নিয়ে। সেখানেই ঘোষণা করা হয়েছিল গতকাল রাতে আজকে এই কলেজে হামলা হবে।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, “প্রথম দফার হামলায় আমরা কম ছিলাম। তারা তো শত শত ছিল। কয়েক হাজারের মত। “পুলিশও চলে গিয়েছিল। পড়ে আমরা এলাকাবাসীদের নিয়ে তাদের উপর হামলা করলে চলে যায়। তাদের সঙ্গে বাইরের লোকও (অছাত্র) ছিল।” তবে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী তুহিন বলেন, “গতকালকে (রোববার) মোল্লা কলেজের নেতৃত্বে ঢাকার বেশ কয়েকটি কলেজ একত্রিত হয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় সোহরাওয়ার্দী কলেজের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। “আমরা গতকাল রাত থেকে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম এ ঘটনার সুষ্ঠু একটা সমাধান করার জন্য। কিন্তু আমাদের দেয়া সময়ের ভেতর তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। তাই আজ সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আমরা দুইটি কলেজের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে সেখানে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।” তুহিনের ভাষ্য, “আমাদের কিছু শিক্ষার্থী তাদের ধাওয়া করে মোল্লা কলেজের দ্বিতীয় তলায় উঠলে তারা আমাদের অনেক শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। রুমের ভেতর তাদের ওপর নারকীয় তাণ্ডব চালায়।” সোহরাওয়ার্দী কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ফাহিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা সুষ্ঠু বিচারের দাবি নিয়ে সেখানে গেলে- তাদের পোলাপান প্রস্তুত ছিল আমাদের ওপর হামলা করার জন্য। “আমদের বেশ কিছু শিক্ষার্থী সেখানে অবরুদ্ধ হলে আহতদের নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে চলে আসি। তাদের মধ্যে যারা গুরুতর আহত তাদের ঢাকা মেডিকেলে আর বাকিদের ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’
মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল হাই শিকদার বলেন, “হামলা করতে আসারা তো অনেক বড়। কারো কারো আইডি কার্ড ছিল গলায়। বাকিদের ছিল না। তারা হামলায় করে আমাদের কলেজ ভাঙছে। কিছু রাখে নাই। উপর থেকে ফেলে দিয়েছে সব।” বেলা সোয়া ৪টার দিকে সেনাবাহিনী মাইকে ঘোষণা দেয় পথচারী ও এলাকাবাসীদের চলে যেতে অনুরোধ করে। এসময় সেনাবাহিনীর গাড়িকে অনুসরণ করে ছোট ছোট যান চলাচল করতে দেখা যায়।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এদিন সকাল ৭টা থেকে সূত্রাপুর ও ডেমরা এলাকায় ‘পর্যাপ্ত জনবল’ মোতায়েন করা হয়। তারা অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। “এরপরও উচ্ছৃঙ্খল ও মারমুখী শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে অগ্রসর হয়ে সেখানে হামলা চালায়।” তিনি বলেন, “সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ এবং মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের জেরে প্রায় ২৫ শিক্ষার্থী আহত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইজন নিহত হয়েছে মর্মে অনেকেই অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা মোটেই সঠিক নয়।”
৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা: ভাঙচুর, গুলিভর্তি ম্যাগজিন চুরির অভিযোগে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। গত রোববার পুলিশের উপ-পরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর বাদী হয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় এই মামলা করেছেন। সোমবার (২৫ নভেম্বর) আদালতের সূত্রাপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখারুম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৪ নভেম্বর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের ৭/৮ হাজার শিক্ষার্থী বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্রসহ দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। সরকারি অস্ত্রের (পিস্তল) গুলি ভর্তি ম্যাগজিন চুরি, সরকারি ডিউটিতে ব্যবহৃত এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করা, জীবননাশের হুমকি দেওয়া এবং ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে। এছাড়া পুলিশের আর্মড পুলিশ কার (এপিসি) ও ডিউটিরত পুলিশের মটরসাইকেল ভাঙচুর করে সর্বমোট দুই লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে পেনাল কোড ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারার অপরাধ আনা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা: ‘ভুল চিকিৎসায়’ অভিজিৎ হালদার নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর ও সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে সোহরাওয়ার্দী কলেজে দুদিন এবং কবি নজরুল কলেজে একদিন শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সাত কলেজের পরীক্ষা স্থগিত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের মঙ্গলবারের (২৬ নভেম্বর) চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২০২৩ সালের চতুর্থ বর্ষের স্নাতক পরীক্ষার সময়সূচি থেকে মঙ্গলবারের (২৬ নভেম্বর) পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হলো। স্থগিত করা পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি শিগগির ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া পূর্বঘোষিত সময়সূচির অন্যান্য পরীক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে। রোববার রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ ক্যাম্পাসে হামলায় অবকাঠামোগত বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। আর এ কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে যে ক্ষতি হয়েছে সেখানে ক্লাস করারও পরিস্থিতি নেই। সব কলেজে একই পরীক্ষা। একটি কলেজে পরীক্ষা না নেওয়া গেলে সাতটি কলেজের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে।
মোল্লা কলেজ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে: রাজধানী ডেমরায় অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) দিনভর সংঘর্ষের পর বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সন্ধ্যার আগেই পুরো কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে দিনভর সংঘর্ষে কলেজটির বিভিন্ন অংশের ভাঙাচোরা দেখতে বিকেল থেকে সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে।
সংঘর্ষের দায়ভার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা-পুলিশ প্রধানের, পদত্যাগ দাবি: ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সঙ্গে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাদের দাবি, একদিন আগে ঘোষণা দিয়ে একদল শিক্ষার্থী এসে ভাঙচুর করল, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু চেয়ে চেয়ে দেখল! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারার সব দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের। অবিলম্বে এই দায় নিয়ে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে সংঘর্ষের কারণ এবং প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব কথা বলেন।
৩ জন মারা যাওয়ার দাবি: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজটির বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যান হামলাকারীরা। হামলায় কলেজটির তিন শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার খবর দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে মারা যাওয়ার তথ্য নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-অপপ্রচার।
হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ চেষ্টা করেছে, তবে পর্যাপ্ত বুলেটপ্রুফ হেলমেট-জ্যাকেট নেই: পুলিশের দাবি, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করা হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বুলেটপ্রুফ হেলমেট-জ্যাকেটসহ অন্যান্য সাপোর্ট নেই। সংঘর্ষ থামার পরে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী মোড়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমাদেরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। কারণ ৫ আগস্টের ঘটনায় পুলিশের অনেক থানায় বুলেটপ্রুফ হেলমেট-জ্যাকেট নেই, পর্যাপ্ত সাপোর্ট পুলিশের এই মুহূর্তে নেই। সীমিত সাপোর্ট দিয়ে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডিসি ছালেহ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য আছেন। সবার সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহত-নিহতের ঘটনায় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নিহতের কোনো সংবাদ আমরা এখনো পায়নি। তবে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে শিক্ষক ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।