নিজস্ব প্রতিবেদক : অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, তা ভবিষ্যতে যেন না হয়, তা রুখে দিতে হবে। এ জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
গতকাল রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নতুন ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি। শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার নতুন ভবনের ফলক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অতি সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে, সে ক্ষেত্রে আমরা যেন সবাই রুখে দাঁড়াই। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা কেউ ঘটাতে না পারে। এর জন্য সামাজিক সচেতনতা দরকার। প্রত্যেকটি মানুষকে অসাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন হতে হবে।’
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রতিবেশী যে ধর্মের লোকই হোন না কেন, তার নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। এটিই তো আমাদের কাম্য। একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন, লাখ লাখ মা-বোন নির্যাতিত হয়েছিলেন। কাজেই আমরা যেন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন সুখী সমৃদ্ধ শান্তিময় বাংলাদেশ গড়ার জন্য একযোগে কাজ করি। এর মধ্যদিয়ে সকল ধরনের সাম্প্রদায়িকতাকে আমাদের সমাজ থেকে পুরোপুরি দূর করে দিতে পারি।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা যেমন আনন্দের হবে, তেমনই শিক্ষার্থীদের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ যেন এই শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ঘটতে পারে। সে জন্য আমরা নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন থেকে শুরু করে বহু ধরনের নতুন উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষার্থীরা যেন পরীক্ষা সর্বস্ব, সনদ সর্বস্ব শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে আনন্দময় শিক্ষার মধ্য দিয়ে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে যেন গড়ে উঠতে পারে, আমাদের সে চেষ্টা রয়েছে। সেই চেষ্টা যেন সফল হয়, তার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
পরীক্ষা থাকবে, চাপ কমানো হবে: শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি কেমন হবে সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পরীক্ষা থাকবে কিন্তু সেটা যেন বোঝা না হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভীতিতে ফেলা যাবে না। মূল্যায়ন হবে, তবে সেটা যেন প্রতিযোগিতা না হয়।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভীতি থেকে বের করে আনা হবে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে। সেসবের আলোকে আমাদের কারিকুলাম আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডা. দীপু মনি বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে মানিকগঞ্জের কয়েকটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামীকাল সোমবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে। এজন্য টিকাদানকেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে। ধাপে ধাপে মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আটটি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল জেলায় স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরের যেসব শিক্ষার্থী নিবন্ধন করতে পারেনি তাদেরকে ধাপে ধাপে টিকার আওতায় আনা হবে। টিকাদান কেন্দ্রে যেন অভিভাবকরা ভিড় না করেন সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটানোর আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ