ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : আসন্ন বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট আয়ের ন্যূনতম ১৫% এবং তিন বছরের মধ্যে ২০% বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)। গত সোমবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু লিখিত বক্তব্যে এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনায় শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা কোনভাবেই পোষাবার নয়। এই ক্ষতি দীর্ঘদিন জাতিকে বয়ে বেড়াতে হবে।
“করোনায় নি¤œআয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ ইতিমধ্যে শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়েছে। অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। দরিদ্র পরিবারের অনেক শিশু বিদ্যালয় ত্যাগ করে শিশু শ্রমে যুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ ১৪ মাস শ্রেণিকক্ষের বাইরে থাকায় হতাশায় অনেক শিক্ষার্থীরা মোবাইল ও ইন্টারনেট আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বিভিন্ন অপরাধেও জড়িয়ে পড়েছে।”
তিনি বলেন, করোনায় শুধু শিক্ষার্থীই নন শিক্ষকরাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিশেষ করে ননএমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা চরম অর্থ সংকটে নিপতিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকেই পেটের তাগিতে শিক্ষকতা পেশা ত্যাগ করে অসম্মানজনক পেশায় নাম লিখিয়েছেন। এসব দিক বিবেচনায় করোনা পরবর্তী পরিস্হিতি মোকাবেলায় একটি টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু একটি টেকসই শিক্ষার লক্ষ্যে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ, বেসরকারি শিক্ষকদের পুর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, সরকারি অনুরূপ মেডিকেল ও বাড়ি ভাড়া প্রদান, করোনায় ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গণে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্হা, সর্বোপরি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং ঐতিহাসিক মুজিব জন্মশতবর্ষে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের সূচনার লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট আয়ের ন্যূনতম ১৫% এবং ২০% পর্যায়ক্রমে অর্থ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাশিপ সহ-সভাপতি প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু নি¤েœাক্ত পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এক. এফিলিয়েশনপ্রাপ্ত নন-এমপিও মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা (স্বতন্ত্র এবতেদায়ীসহ) ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখা। দুই. এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি অনুরূপ বাড়ি ভাড়া, মেডিকেল ভাতা, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কল্যাণ ট্রাস্ট এবং অবসর বোর্ডের আর্থিক সংকট নিরসনের জন্য আসন্ন বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা। তিন. শিক্ষাকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে বাজেটে মোট আয়ের ন্যূনতম ১৫% অর্থ বরাদ্দ করতে হবে এবং ক্রমশঃ তা ২০% এ উন্নীত করতে হবে। এ অর্থ বছরের বাজেটেই তা পুরোপুরি বাস্তবায়ান সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন অর্থ বছরে উক্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সমগ্র শিক্ষাকে জাতীয়করণের আওতায় আনতে হবে। তবে জাতীয়করণের সূচনা অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরেই করা। চার. আর্থিক কারণে ঝড়ে পড়া রোধ করতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অতি দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা চালু করা। পাঁচ. বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি অবিলম্বে কার্যকর করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক সাইদুর রহমান পান্না, হরিচাঁদ মন্ডল সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মোকসেদুর রহমান, অধ্যক্ষ তেলোয়াত হোসেন খান, অধ্যক্ষ সলিম উল্লাহ সেলিম, অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, আকলিমা জাহান, অধ্যক্ষ দিলারা খানম, সঙ্গীতা বিশ্বাস, অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মুকুল, উপাধ্যক্ষ আ ন ম শাহীন, এ কে এম ওবায়দুল্লাহ, অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র, ডক্টর আবু বকর প্রমুখ।
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের বৃত্তি, আবেদন করেছেন কি?
ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষেও বৃত্তি দেবে আইসিসিআর। এ জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে এ বৃত্তির জন্য। এ বৃত্তির আবেদনের সময় আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাবেন। তবে মেডিসিন, প্যারামেডিকেল, ফ্যাশন কোর্স বাদে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বৃত্তির জন্য এ আবেদন করা যাবে। ৩০ এপ্রিল আইসিসিআর বৃত্তির জন্য এ আবেদনের শেষ সময় ছিল। করোনার কারণে আবেদন করার সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে।
আইসিসিআর বৃত্তির আবেদন করতে আগ্রহী প্রার্থীদেও যঃঃঢ়://ধ২ধংপযড়ষধৎংংযরঢ়ং.রপপৎ.মড়া.রহ লিংকে লগইন করে আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে। আবেদনকারীদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদনের যোগ্যতা কী কী
বিই-বিটেক আবেদনকারী প্রার্থীদের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও রসায়ন থাকতে হবে। ভর্তির পর শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে থাকতে হবে। আবেদনকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটে আবেদন করতে পারবেন। ইংরেজির দক্ষতা যাচাইয়ে ৫০০ শব্দে ইংরেজিতে প্রবন্ধ লিখতে হবে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা তাঁর টোফেল–আইইএলটিএস স্কোরও ইংরেজির দক্ষতা নির্ধারণে জমা দিতে পারবেন। যদিও এসব কোর্সের জন্য টোফেল-আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক নয়। আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নম্বরপত্র আপলোড করতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইংরেজিতে না থাকলে তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে তবেই সাবমিট করতে হবে। অনুবাদ করা কাগজপত্র ছাড়া আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
আইসিসিআর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক ন্যূনতম ৫ লাখ ভারতীয় রুপির বা ৬ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলারের মেডিকেল বিমা করা বাধ্যতামূলক। এ বৃত্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে ভারতীয় হাইকমিশনের শিক্ষা উইংয়ে (প্লট নম্বর: ১-৩, পার্ক রোড, বারিধারা, ঢাকা ১২১২; ফোন-৫৫০৬৭৩০১-৩০৮ এক্সটেনশন-১০৯৬/১১১২; ই-মেইল: বফঁ১.ফযধশধ@সবধ.মড়া.রহ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শিক্ষাখাতে বাজেটের ১৫% বরাদ্দের দাবিঃ স্বাশিপ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ