নিজস্ব প্রতিবেদক : হাই কোর্টের রায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৪ জনকে শাহবাগ মোড়ের অবরোধ কর্মসূচি থেকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “ওরা বয়সে ছোট, বারবারই একই ভুল করছে। আমরা চেষ্টা করছিলাম রাস্তাটা ফাঁকা করার জন্য। তাই কয়েকজনকে নিয়ে আসছি। তবে যাচাইবাছাই শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
“আপাতত সাতজন পুরুষ ও সাতজন নারী আন্দোলনকারীকে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা তাদের ছেড়ে দেব।” হাই কোর্টের রায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা গত কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আন্দোলনকারীরা বিকালে ফের শাহবাগে আসেন এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থী আবু হানিফ বলেন, “আমরা এখন জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
নিয়োগ নিশ্চিত না হওয়া আমরা রাজপথ ছাড়ব না।” ‘সড়ক না আটকানোর’ ঘোষণা দিয়েও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিলেন প্রার্থীরা। এর আগে গত বুধবার মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এই আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার সকালে তারা শাহবাগে এসে অবস্থান নেন। পরে দুপুরে তারা শাহাবাগ মোড় অবরোধ করেন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ‘সড়ক না আটকে’ শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ইতোমধ্যে আপিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়োগ বাতিল হওয়া নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচিত প্রার্থী আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা বৈষম্যমূলক।” সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের কাছে আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “হাই কোর্টে একটা রায় হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি রায় পুনর্বিবেচনার জন্য।”