ঢাকা ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষকের ছোড়া ডাস্টারে মাথা ফাটল ছাত্রের, সহপাঠীদের বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪১ বার পড়া হয়েছে

উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে শিক্ষকের ছুড়ে মারা ডাস্টারের আঘাতে রাফিউর রহমান আহাদ নামে শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে গেছে। তার রক্তাক্ত জামা দিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে শিক্ষকের ছুড়ে মারা ডাস্টারের আঘাতে রাফিউর রহমান আহাদ নামে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৯ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। পরে সহপাঠীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করলে অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি কলেজের পৌরনীতি বিষয়ের অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহাদ বলেন, রফিকুল স্যার ক্লাস নিচ্ছিলেন। সামনের বেঞ্চে বসা এক ছাত্র পাশের জনের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন স্যার রেগে গিয়ে হাতে থাকা ডাস্টার ছুড়ে মারেন। কিন্তু যাকে উদ্দেশ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল, সে সরে যায়- ডাস্টারটি এসে আমার মাথায় লাগে। তিনি বলেন, আমি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যাই। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখি, ব্যাগ রক্তে ভিজে গেছে। মাথায় হাত দিতেই দেখি রক্ত ঝরছে। বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আহাদের বড় বোন খাদিজা রহমান হেরা বলেন, রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক অন্য ছাত্রকে শাসন করতে গিয়ে আমার ভাইয়ের মাথায় ডাস্টার ছুড়ে মেরেছেন। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই শিক্ষক ছাত্রকে ডাস্টার ছুড়ে আঘাত করেছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ক্লোজড করেছি এবং চেয়ারম্যান স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, রফিকুল ইসলাম ২০২৪ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। আজকের ঘটনার পর তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আর কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ঘটনায় শিক্ষককে বরখাস্ত করা সঠিক সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয় থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনার সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, একসময় মানসম্মত শিক্ষা ও সুনামের জন্য পরিচিত এই বিদ্যাপীঠ এখন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কলেজের টিউশন ফি বাড়লেও শিক্ষার মানের কোনো উন্নতি হয়নি। ফলাফলেও ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতির অবস্থা নাজুক, যা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পাসে ক্যান্টিনের মানও নিম্নমানের এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ট্যাপের পানি পানযোগ্য নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেছেন, কয়েকজন অদক্ষ শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের কোনো কার্যকর তদারকি নেই।
সানা/আপ্র/১০/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষকের ছোড়া ডাস্টারে মাথা ফাটল ছাত্রের, সহপাঠীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:১১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে শিক্ষকের ছুড়ে মারা ডাস্টারের আঘাতে রাফিউর রহমান আহাদ নামে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৯ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। পরে সহপাঠীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করলে অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি কলেজের পৌরনীতি বিষয়ের অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহাদ বলেন, রফিকুল স্যার ক্লাস নিচ্ছিলেন। সামনের বেঞ্চে বসা এক ছাত্র পাশের জনের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন স্যার রেগে গিয়ে হাতে থাকা ডাস্টার ছুড়ে মারেন। কিন্তু যাকে উদ্দেশ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল, সে সরে যায়- ডাস্টারটি এসে আমার মাথায় লাগে। তিনি বলেন, আমি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যাই। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখি, ব্যাগ রক্তে ভিজে গেছে। মাথায় হাত দিতেই দেখি রক্ত ঝরছে। বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আহাদের বড় বোন খাদিজা রহমান হেরা বলেন, রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক অন্য ছাত্রকে শাসন করতে গিয়ে আমার ভাইয়ের মাথায় ডাস্টার ছুড়ে মেরেছেন। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই শিক্ষক ছাত্রকে ডাস্টার ছুড়ে আঘাত করেছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ক্লোজড করেছি এবং চেয়ারম্যান স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, রফিকুল ইসলাম ২০২৪ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। আজকের ঘটনার পর তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আর কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ঘটনায় শিক্ষককে বরখাস্ত করা সঠিক সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয় থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনার সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, একসময় মানসম্মত শিক্ষা ও সুনামের জন্য পরিচিত এই বিদ্যাপীঠ এখন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কলেজের টিউশন ফি বাড়লেও শিক্ষার মানের কোনো উন্নতি হয়নি। ফলাফলেও ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতির অবস্থা নাজুক, যা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ক্যাম্পাসে ক্যান্টিনের মানও নিম্নমানের এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ট্যাপের পানি পানযোগ্য নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেছেন, কয়েকজন অদক্ষ শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের কোনো কার্যকর তদারকি নেই।
সানা/আপ্র/১০/১১/২০২৫