ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘিরে সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর মারমুখী শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

ছবি আজকের প্রত্যাশা

আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: চার দফা দাবিতে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে সাতক্ষীরার চারটি সরকারি স্কুলে দ্বিতীয় দিনেও বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এদিকে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে মতানৈক্যের ফলে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফুটেজ নেওয়ায় সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।

শিক্ষকরা বলছেন, চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি এবং দাবি পূরণ না হলে চলমান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে বুধবার বেলা এগারটার দিকে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের দুটি দল তৈরি হয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়।

মারামারির ফুটেজ ফটোসাংবাদিকরা ধারণ করলে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন তেড়ে আসে। এমনকি তারা ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ সাংবাদিকদের মুছে দিতে বাধ্য করে। এতেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। পরে শহরের মিনি মার্কেটে অবস্থিত সাংবাদিকদের অফিসে গিয়ে তারা সাংবাদিকদের ওপরে চড়াও হয় ও আস্ফালন করতে থাকে। এমনকি সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্যও করতে শোনা যায় শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে।

হাবিবুর রহমান নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘বছরের শেষে পরীক্ষা বন্ধ রেখে যারা ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন করছেন, তাদের উচিত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করা। প্রথমে একটি নির্বাচিত সরকার আসুক, তারপর আন্দোলন করুন। বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা শিক্ষকদের রাস্তায় নামাচ্ছে, তারা প্রকৃত শিক্ষাদস্যু।’

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘নভেম্বরের ২০ তারিখ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা চলছিল। প্রস্তুতি থাকলেও আজ শিক্ষকরা পরীক্ষা নিতে রাজি হননি। পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে দুই গ্রুপ হওয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমি শিক্ষকদের দাবির পক্ষে, কিন্তু পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন হওয়া ঠিক নয়।’

সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আবুল খায়ের বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব স্কুলে আমরা তা পাঠিয়েছি। কিন্তু কিছু শিক্ষক বলছেন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ছাড়া আন্দোলন স্থগিত করতে পারবেন না। যারা পরীক্ষা বন্ধ করেছে তাদের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনাও দুঃখজনক।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলেছি- পরীক্ষা অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করে পরীক্ষা নেননি। সাংবাদিকদের হেনস্তার ঘটনাও দুঃখজনক। যারা এতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সানা/ওআ/আপ্র/৪/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘিরে সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর মারমুখী শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: চার দফা দাবিতে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে সাতক্ষীরার চারটি সরকারি স্কুলে দ্বিতীয় দিনেও বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এদিকে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে মতানৈক্যের ফলে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফুটেজ নেওয়ায় সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে আসে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।

শিক্ষকরা বলছেন, চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি এবং দাবি পূরণ না হলে চলমান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে বুধবার বেলা এগারটার দিকে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের দুটি দল তৈরি হয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়।

মারামারির ফুটেজ ফটোসাংবাদিকরা ধারণ করলে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন তেড়ে আসে। এমনকি তারা ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ সাংবাদিকদের মুছে দিতে বাধ্য করে। এতেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। পরে শহরের মিনি মার্কেটে অবস্থিত সাংবাদিকদের অফিসে গিয়ে তারা সাংবাদিকদের ওপরে চড়াও হয় ও আস্ফালন করতে থাকে। এমনকি সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্যও করতে শোনা যায় শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে।

হাবিবুর রহমান নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘বছরের শেষে পরীক্ষা বন্ধ রেখে যারা ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন করছেন, তাদের উচিত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করা। প্রথমে একটি নির্বাচিত সরকার আসুক, তারপর আন্দোলন করুন। বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা শিক্ষকদের রাস্তায় নামাচ্ছে, তারা প্রকৃত শিক্ষাদস্যু।’

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘নভেম্বরের ২০ তারিখ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা চলছিল। প্রস্তুতি থাকলেও আজ শিক্ষকরা পরীক্ষা নিতে রাজি হননি। পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে দুই গ্রুপ হওয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমি শিক্ষকদের দাবির পক্ষে, কিন্তু পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন হওয়া ঠিক নয়।’

সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আবুল খায়ের বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব স্কুলে আমরা তা পাঠিয়েছি। কিন্তু কিছু শিক্ষক বলছেন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ছাড়া আন্দোলন স্থগিত করতে পারবেন না। যারা পরীক্ষা বন্ধ করেছে তাদের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনাও দুঃখজনক।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলেছি- পরীক্ষা অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করে পরীক্ষা নেননি। সাংবাদিকদের হেনস্তার ঘটনাও দুঃখজনক। যারা এতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সানা/ওআ/আপ্র/৪/১২/২০২৫