নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘কোনো পরিশ্রমী জাতি কখনো পিছিয়ে থাকে না’-শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত’র এই আত্মপ্রত্যয়ী স্লোগানকে স্মরণ করে প্রথমবারের মতো ‘অনুপ্রেরণামূলক সভা’র আয়োজন করে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন।
গতকাল রোববার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরার ৪৫ সোনারগাঁও জনপথ রোডস্থ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ও দৈনিক আজকের প্রত্যাশার সম্পাদক ডা. মোঃ আহসানুল কবির।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকারী শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত’র স্বপ্ন ও জনকল্যাণমূলক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং ধারাবাহিক কার্যক্রম সংক্ষেপে তুলে ধরে বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. মোঃ আহসানুল কবির বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে এই ফাউন্ডেশন গঠন করে গেছেন, তার সেই স্বপ্নকে সফলভাবে বাস্তবায়নে এর সাথে যুক্ত সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যেতে হবে।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর মহলবিশেষের অপতৎপরতায় একটি সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বল আকাশে আজ ‘কালো মেঘ’ উল্লেখ করে ডা. মোঃ আহসানুল কবির বলেন, আমি আজ আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবো এবং ওয়াদা আশা করবো। সম্প্রতি একাধিক চুরির ঘটনা উল্লেখ করে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো তথ্য আদান-প্রদান থেকে সবাই বিরত থাকবেন এবং কারো কোনোরকম খারাপ প্রস্তাব পেলে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। এটাই হোক আমাদের সম্মিলিত প্রতিজ্ঞা।
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর করোনা মহামারির বিশাল ধাক্কা মোকাবিলা করেও ফাউন্ডেশনের নির্ধারিত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে এবং সবার পেশাদারি মনোভাব ও কাজের মধ্য দিয়ে এটি ক্রমেই এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ডা. মোঃ আহসানুল কবির।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দিবস উপলক্ষ্যে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে; যেখানে বরেণ্য শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হবে বলে জানান শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের বর্তমান চেয়ারম্যান।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে কিশোর বয়সেই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত। যুদ্ধজয়ের পর দেশে ফিরে এক বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলে যান বিদেশে। প্রায় ৯ বছর নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বদেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণের উদ্যোগ হিসেবে তিনি আমাদের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির চিন্তা থেকে দেশের প্রথম কুরিয়ার কোম্পানি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রাঃ) লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এই অঞ্চলের প্রথম টেকনোলজিক্যাল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করেন। কর্মসংস্থান ও জনকল্যাণমুখী নানা প্রতিষ্ঠানের প্রয়াস হিসেবে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি জনকল্যাণ ও দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা করেও দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়াচ্ছে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন। প্রযুক্তি, ফ্যাশন ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রসার ও বিস্তারে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি আজ একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত।
২০২০ সালের ৩০ মে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন বরেণ্য শিক্ষানুরাগী, শিল্পপতি ও জনহিতৈষী শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইমামুল কবীর শান্ত। তার মৃত্যুর পর এই ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তারই কনিষ্ঠ সহোদর
ডা. মোঃ আহসানুল কবির।
শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের অনুপ্রেরণামূলক সভা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ