ঢাকা ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

শান্তির প্রতিশ্রুতির পর রাশিয়ার নতুন হামলা শুরু

  • আপডেট সময় : ০২:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, ওই এলাকায় রাশিয়ার হামলার তীব্রতা কমেনি। যদিও ওই এলাকায় সামরিক কার্যক্রম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মস্কো। গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ চাউস এক টেলিগ্রাম বার্তায় রুশ প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেন। চেরনিহিভ অঞ্চলে রাশিয়া রাতভর বোমা বর্ষণ করেছে দাবি করে তিনি লেখেন, ‘আমরা কি এতে (রুশ প্রতিশ্রুতি) বিশ্বাস রাখবো? অবশ্যই না।’
গত মঙ্গলবার রাশিয়া জানায় চেরনিহিভ এবং রাজধানী কিয়েভ অঞ্চলে অভিযানের তীব্রতা কমানো হবে। তবে গতকাল বুধবার প্রথম প্রহরে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন শোনা যায়। কিয়েভের ডেপুটি মেয়র মাইকোলা পোভোরোজনিক জানিয়েছেন, রাজধানীতে রাতভর বোমা বর্ষণ হয়নি, কিন্তু আশেপাশের এলাকায় লড়াইয়ের বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিয়েভ এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। তাদের ধারণা পূর্বাঞ্চলে মনোনিবেশ করতেই এসব সেনা পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিন জানিয়েছেন, শান্তি আলোচনায় পারস্পারিক বোঝাপড়া বাড়াতে মস্কো ধারাবাহিকভাবে সামরিক কর্মকা- কমাবে। মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যুদ্ধের অবসানের লক্ষে তিন ঘণ্টা আলোচনায় করে মস্কো ও কিয়েভের প্রতিনিধিরা। ইউক্রেন নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বিনিময়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায় তারা। রুশ আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখা। রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনা ব্যবহারিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামরিক কর্মকা- কমানোর রুশ প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয়রা নির্বোধ মানুষ নয়।’ তিনি বলেন, শান্তি আলোচনার প্রাথমিক ইঙ্গিত ইতিবাচক।
সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে অন্য দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘কোনও পদক্ষেপ দেখার আগে আমি এর কোনও কিছুই পড়ে দেখবো না’। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালির নেতারাও জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাখা পাহারা এখনই প্রত্যাহার করা হবে না। সূত্র: বিবিসি
ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের নাম ঘোষণা : রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের উপর নির্বিচারে বোমা হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘ তিন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞের নাম দিয়েছে। জাতি সংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নরওয়ের এরিক মোসের নেতৃত্বে স্বাধীন প্যানেলটির ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ ফেডারেশনের আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন সম্পর্কিত সকল অভিযোগ ও অপরাধের তদন্ত করার আদেশ রয়েছে। ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা সমর্থকরা রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে গোলাবর্ষণ এবং শহর অবরোধ করে বাসিন্দাদের হত্যা ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ করেছে, বিশেষ করে মারিওপোলের দক্ষিণ বন্দরে। মস্কো বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় ইউক্রেনীয় বাহিনী আটক রাশিয়ান সৈন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করছে। কিয়েভ বলছে ছবিগুলি দেখতে নকল মনে হচ্ছে। তবে এটি সত্য প্রমাণিত হলে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার কথাও কিয়েভ জানিয়েছে। ইউক্রেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ মিত্রদের অনুরোধে ০৪ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল এক বছরের জন্য তদন্ত কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়।
সম্ভাব্য প্রসিকিউশন : ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং বহির্ভূত করার জন্য একটি ‘বিশেষ অভিযান‘ দাবি করে রাশিয়া এই তদন্তের বিরোধিতা করেছে। সিরিয়া, মায়ানমার এবং অন্যান্য সংঘাতে যুদ্ধাপরাধের জন্য জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানও রয়েছে। প্রতিবেদনগুলি সম্ভাব্য বিচারের জন্য মামলা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ৪৭ সদস্যের জেনেভা ফোরাম দ্বারা গৃহীত ইউক্রেনের নীতিমালার অধীনে প্যানেল সাক্ষীদের সাক্ষাৎকার নেবে এবং ভবিষ্যতের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ফরেনসিক উপাদান সংগ্রহ করবে। মোসে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের একজন প্রাক্তন বিচারক এবং রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন সভাপতি যিনি নরওয়ের সুপ্রিম কোর্টে বিচারক হিসেবেও কাজ করেছেন। প্যানেলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মানবাধিকার ন্যায়পাল জ্যাসমিনকা জুমহুর এবং কলম্বিয়ান পাবলো ডি গ্রিফ, যিনি প্রথম জাতিসংঘের বিচার তদন্তকারী ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আবু সাঈদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গণঅভ্যুত্থানের সূচনা

শান্তির প্রতিশ্রুতির পর রাশিয়ার নতুন হামলা শুরু

আপডেট সময় : ০২:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, ওই এলাকায় রাশিয়ার হামলার তীব্রতা কমেনি। যদিও ওই এলাকায় সামরিক কার্যক্রম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মস্কো। গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ চাউস এক টেলিগ্রাম বার্তায় রুশ প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেন। চেরনিহিভ অঞ্চলে রাশিয়া রাতভর বোমা বর্ষণ করেছে দাবি করে তিনি লেখেন, ‘আমরা কি এতে (রুশ প্রতিশ্রুতি) বিশ্বাস রাখবো? অবশ্যই না।’
গত মঙ্গলবার রাশিয়া জানায় চেরনিহিভ এবং রাজধানী কিয়েভ অঞ্চলে অভিযানের তীব্রতা কমানো হবে। তবে গতকাল বুধবার প্রথম প্রহরে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন শোনা যায়। কিয়েভের ডেপুটি মেয়র মাইকোলা পোভোরোজনিক জানিয়েছেন, রাজধানীতে রাতভর বোমা বর্ষণ হয়নি, কিন্তু আশেপাশের এলাকায় লড়াইয়ের বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিয়েভ এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। তাদের ধারণা পূর্বাঞ্চলে মনোনিবেশ করতেই এসব সেনা পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিন জানিয়েছেন, শান্তি আলোচনায় পারস্পারিক বোঝাপড়া বাড়াতে মস্কো ধারাবাহিকভাবে সামরিক কর্মকা- কমাবে। মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যুদ্ধের অবসানের লক্ষে তিন ঘণ্টা আলোচনায় করে মস্কো ও কিয়েভের প্রতিনিধিরা। ইউক্রেন নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বিনিময়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায় তারা। রুশ আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া থেকে বিরত রাখা। রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনা ব্যবহারিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামরিক কর্মকা- কমানোর রুশ প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয়রা নির্বোধ মানুষ নয়।’ তিনি বলেন, শান্তি আলোচনার প্রাথমিক ইঙ্গিত ইতিবাচক।
সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে অন্য দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘কোনও পদক্ষেপ দেখার আগে আমি এর কোনও কিছুই পড়ে দেখবো না’। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালির নেতারাও জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাখা পাহারা এখনই প্রত্যাহার করা হবে না। সূত্র: বিবিসি
ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের নাম ঘোষণা : রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের উপর নির্বিচারে বোমা হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘ তিন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞের নাম দিয়েছে। জাতি সংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নরওয়ের এরিক মোসের নেতৃত্বে স্বাধীন প্যানেলটির ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ ফেডারেশনের আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন সম্পর্কিত সকল অভিযোগ ও অপরাধের তদন্ত করার আদেশ রয়েছে। ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা সমর্থকরা রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে গোলাবর্ষণ এবং শহর অবরোধ করে বাসিন্দাদের হত্যা ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ করেছে, বিশেষ করে মারিওপোলের দক্ষিণ বন্দরে। মস্কো বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় ইউক্রেনীয় বাহিনী আটক রাশিয়ান সৈন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করছে। কিয়েভ বলছে ছবিগুলি দেখতে নকল মনে হচ্ছে। তবে এটি সত্য প্রমাণিত হলে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার কথাও কিয়েভ জানিয়েছে। ইউক্রেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ মিত্রদের অনুরোধে ০৪ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল এক বছরের জন্য তদন্ত কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়।
সম্ভাব্য প্রসিকিউশন : ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং বহির্ভূত করার জন্য একটি ‘বিশেষ অভিযান‘ দাবি করে রাশিয়া এই তদন্তের বিরোধিতা করেছে। সিরিয়া, মায়ানমার এবং অন্যান্য সংঘাতে যুদ্ধাপরাধের জন্য জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানও রয়েছে। প্রতিবেদনগুলি সম্ভাব্য বিচারের জন্য মামলা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ৪৭ সদস্যের জেনেভা ফোরাম দ্বারা গৃহীত ইউক্রেনের নীতিমালার অধীনে প্যানেল সাক্ষীদের সাক্ষাৎকার নেবে এবং ভবিষ্যতের আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ফরেনসিক উপাদান সংগ্রহ করবে। মোসে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের একজন প্রাক্তন বিচারক এবং রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন সভাপতি যিনি নরওয়ের সুপ্রিম কোর্টে বিচারক হিসেবেও কাজ করেছেন। প্যানেলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মানবাধিকার ন্যায়পাল জ্যাসমিনকা জুমহুর এবং কলম্বিয়ান পাবলো ডি গ্রিফ, যিনি প্রথম জাতিসংঘের বিচার তদন্তকারী ছিলেন।