নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চেষ্টা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর, এটা সব থেকে বড় সংকট। এ সংকট সমাধানের জন্য এনসিপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেছে বলেও জানান তিনি।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন। একশনএইড বাংলাদেশ ও প্রথম আলোর আয়োজনে সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এ গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দেশের নয়টি জেলায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকের প্রাপ্ত সুপারিশ তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশ উইমেন রাইটস লিড মরিয়ম নেছা। গোলটেবিল বৈঠকটি পরিচালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। আখতার হোসেন বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতে পারে, এই ধারণাটাই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও ওই অর্থে আমরা অতীতের সময়গুলোতে দেখি নাই। এটা দেখেছি যে, যারা ক্ষমতায় এসেছেন তারা আসলে কীভাবে সামনে ফেসবুকে দীর্ঘ সময় তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করে রাখা যায়, সে চেষ্টাটাই তারা করেছেন। সেই জায়গাটাতে আমরা একটি ছেদ নিয়ে আসতে চাই।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসছে উল্লেখ করে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘সেখানে আমরা কিছু আলাদা প্রস্তাব দিয়েছি। যার মধ্য দিয়ে আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফরমেশন (গঠন), সেটা কীভাবে সকল দলের অংশগ্রহণে হতে পারে, এবং কীভাবে এটা একদলের অর্থাৎ যারা ক্ষমতাসীন থাকেন, তাদের প্রভাবমুক্ত হতে পারে, সে বিষয়গুলো রয়েছে।’
বাংলাদেশে আসলে রাজনীতির কোনো পরিবেশ ছিল না উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে আসলে রাজনীতি হয় নাই। বাংলাদেশে এক ধরনের মাস্তানি, এক ধরনের গুন্ডামি–সেটাই বাংলাদেশের প্রধানতম রাজনীতি হিসেবে মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’
‘বাংলাদেশে ক্ষমতার হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে হওয়াটা বেশি জরুরি বিষয়’ উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এখন এই জায়গাটাতেই সব থেকে বড় সংকট। আমরা যখন তরুণদের অংশগ্রহণের কথা বলছি, নারীদের অংশগ্রহণের কথা বলছি নির্বাচনে; সেই সময়টাতে আসলে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সঙ্গে এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’
নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা অনেক দিন এটা নিয়ে বিতর্ক করেছি। কিন্তু শেষে রাজনৈতিক দলগুলো আমরা একমত হয়েছি যে নারীরা সরাসরি তারা ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন। কিন্তু কোনো পদ্ধতিতে সেটা, সেটা কি ক্লাস্টার করে হবে নাকি ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে হবে, এই পদ্ধতির বেড়াজালে গিয়ে আমরা এত সুন্দর একটা প্রস্তাবনাকে বাস্তবায়ন করতে পারি নাই।’
এনসিপি নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টিতে তরুণেরা যেমন আছেন, নারীদের একটা বড় ধরনের অংশগ্রহণ আমাদের দলে রয়েছে। আমরা দলের নীতি নির্ধারণী জায়গাতেও নারীদের অংশগ্রহণ আমরা সুনিশ্চিত রাখার চেষ্টা করেছি।
সানা/আপ্র/২৭/১০/২০২৫




















