ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

শাটডাউন’ কাটিয়ে ট্র্যাকে রেমিট্যান্স

  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বৈদেশিক কর্মসংস্থানে (বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি) ভাটা পড়ে। এ সময় হাসিনার পতনের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অনেক প্রবাসী রেমিট্যান্স ‘শাটডাউন’ ডেকে অর্থ পাঠানোও বন্ধ করে দেন। অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আগস্টের শেষ দিক থেকে রেমিট্যান্সে ফের গতি আসতে থাকে। দুই মাস পর থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বৈদেশিক কর্মসংস্থানও। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নভেম্বরের পর্যালোচনায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় রেমিট্যান্স কমলেও ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরদিন থেকেই প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন এক হাজার ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। যা আগের বছরেরই একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ৮৮০ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে প্রবাসী আয় দুই বিলিয়নের নিচে নেমে যায়; আসে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আবার ৫ আগস্ট সরকার পতনের মাসে প্রবাসী আয় আসা আবারও দুই বিলিয়ন (দুই শ কোটি) ডলার অতিক্রম করে। আগস্ট মাসে আসে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার; সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং নভেম্বর মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসেই প্রবাসী আয় দুই বিলিয়ন ডলারের নিচে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশে বেশ কয়েকদিন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকা, বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রবাসীরা সংহতি জানিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দেওয়ায় জুলাই মাসে এ আয় তলানিতে নামে। ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে এবং ইন্টারনেট সমস্যা দূর হলে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। চলতি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। প্রবাসী আয়ে টান এবং আবার গতি ফেরার বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, রেমিট্যান্সের বিষয়টি হলো জুলাই-আগস্টে রেমিট্যান্সের শাটডাউন ছিল; ব্যাংক-ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এ কারণে রেমিট্যান্স কমেছিল, এখন আবার বেড়েছে। জুলাই-আগস্ট একটি ট্রান্সজিশন পিরিয়ড ছিল। এ সময় শাটডাউনের প্রভাব ছিল। এদিকে অভ্যুত্থানের সময় টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে ধাক্কা খেয়েছে বৈদেশিক কর্মসংস্থানও। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর; পাঁচ মাসে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে তিন লাখ ৯৭ হাজার ৩৭৭ জনের। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে কাজের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫০ জন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে কাজের সন্ধানে বিদেশে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যায়। বিদেশে কম লোক যাওয়া সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। জুলাই মাসে যান ৭১ হাজার ৪৪১ জন, আগস্টে ৫৩ হাজার ৪৬২ জন এবং সেপ্টেম্বর ৬৪ হাজার ৬৭৭ জন। তবে অক্টোবর মাসে এসে বিদেশে যাওয়া লোকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অক্টোবরে যান এক লাখ চার হাজার ৮১০ জন এবং নভেম্বের মাসে বিদেশে যান এক লাখ দুই হাজার ৯৮৭ জন। আগের অর্থ বছরের পাঁচ মাসের প্রতি মাসে গড়ে প্রায় এক লাখ আট হাজার মানুষ বিদেশে কাজের সন্ধানে গেছেন। আগের অর্থবছরের পাঁচ মাসের তুলনায় এবারের অর্থবছরের পাঁচ মাসে বিদেশে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া ও ওমানে লোক যেতে না পারাকে কারণ হিসেবে দেখছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, মালয়েশিয়ায় লোক যাওয়া বন্ধ আছে, ওমানেও লোক যাচ্ছে না। গত বছর দেশ দুটিতে বেশি বেশি লোক গেছে। এ কারণে গত বছর বেশি লোক গেছে। এ বছর দেশ দুটিতে লোক না যাওয়ার কারণে লোক সংখ্যা কমেছে বলে মনে হতে পারে। তিনি বলেন, প্রবাসী আয় অনেকদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের ওপরের নির্ভরশীল ছিল। এই বাজার অন্যান্য দেশে সম্প্রসারিত হলে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। গত চার বছরে মধ্যপ্রাচ্যে ২০ লাখ জনশক্তি গেছে। কিন্তু একই সময়ে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স কমেছে। তার মানে হলো বেশি লোক পাঠালেও রেমিট্যান্স কমলো। অর্থাৎ অদক্ষ লাখ লাখ লোক পাঠিয়ে লাভ নেই। দক্ষ এক লাখ লোক সেই রেমিট্যান্স আনতে পারে। লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে সংখ্যার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই, নজর দিতে হবে দক্ষতায়।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাটডাউন’ কাটিয়ে ট্র্যাকে রেমিট্যান্স

আপডেট সময় : ০৫:৪১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বৈদেশিক কর্মসংস্থানে (বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি) ভাটা পড়ে। এ সময় হাসিনার পতনের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অনেক প্রবাসী রেমিট্যান্স ‘শাটডাউন’ ডেকে অর্থ পাঠানোও বন্ধ করে দেন। অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আগস্টের শেষ দিক থেকে রেমিট্যান্সে ফের গতি আসতে থাকে। দুই মাস পর থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বৈদেশিক কর্মসংস্থানও। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নভেম্বরের পর্যালোচনায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় রেমিট্যান্স কমলেও ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরদিন থেকেই প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন এক হাজার ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। যা আগের বছরেরই একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ৮৮০ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে প্রবাসী আয় দুই বিলিয়নের নিচে নেমে যায়; আসে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আবার ৫ আগস্ট সরকার পতনের মাসে প্রবাসী আয় আসা আবারও দুই বিলিয়ন (দুই শ কোটি) ডলার অতিক্রম করে। আগস্ট মাসে আসে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার; সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং নভেম্বর মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসেই প্রবাসী আয় দুই বিলিয়ন ডলারের নিচে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশে বেশ কয়েকদিন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকা, বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রবাসীরা সংহতি জানিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দেওয়ায় জুলাই মাসে এ আয় তলানিতে নামে। ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে এবং ইন্টারনেট সমস্যা দূর হলে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। চলতি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। প্রবাসী আয়ে টান এবং আবার গতি ফেরার বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, রেমিট্যান্সের বিষয়টি হলো জুলাই-আগস্টে রেমিট্যান্সের শাটডাউন ছিল; ব্যাংক-ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এ কারণে রেমিট্যান্স কমেছিল, এখন আবার বেড়েছে। জুলাই-আগস্ট একটি ট্রান্সজিশন পিরিয়ড ছিল। এ সময় শাটডাউনের প্রভাব ছিল। এদিকে অভ্যুত্থানের সময় টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে ধাক্কা খেয়েছে বৈদেশিক কর্মসংস্থানও। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর; পাঁচ মাসে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে তিন লাখ ৯৭ হাজার ৩৭৭ জনের। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে কাজের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫০ জন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে কাজের সন্ধানে বিদেশে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যায়। বিদেশে কম লোক যাওয়া সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। জুলাই মাসে যান ৭১ হাজার ৪৪১ জন, আগস্টে ৫৩ হাজার ৪৬২ জন এবং সেপ্টেম্বর ৬৪ হাজার ৬৭৭ জন। তবে অক্টোবর মাসে এসে বিদেশে যাওয়া লোকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অক্টোবরে যান এক লাখ চার হাজার ৮১০ জন এবং নভেম্বের মাসে বিদেশে যান এক লাখ দুই হাজার ৯৮৭ জন। আগের অর্থ বছরের পাঁচ মাসের প্রতি মাসে গড়ে প্রায় এক লাখ আট হাজার মানুষ বিদেশে কাজের সন্ধানে গেছেন। আগের অর্থবছরের পাঁচ মাসের তুলনায় এবারের অর্থবছরের পাঁচ মাসে বিদেশে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া ও ওমানে লোক যেতে না পারাকে কারণ হিসেবে দেখছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, মালয়েশিয়ায় লোক যাওয়া বন্ধ আছে, ওমানেও লোক যাচ্ছে না। গত বছর দেশ দুটিতে বেশি বেশি লোক গেছে। এ কারণে গত বছর বেশি লোক গেছে। এ বছর দেশ দুটিতে লোক না যাওয়ার কারণে লোক সংখ্যা কমেছে বলে মনে হতে পারে। তিনি বলেন, প্রবাসী আয় অনেকদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের ওপরের নির্ভরশীল ছিল। এই বাজার অন্যান্য দেশে সম্প্রসারিত হলে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। গত চার বছরে মধ্যপ্রাচ্যে ২০ লাখ জনশক্তি গেছে। কিন্তু একই সময়ে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স কমেছে। তার মানে হলো বেশি লোক পাঠালেও রেমিট্যান্স কমলো। অর্থাৎ অদক্ষ লাখ লাখ লোক পাঠিয়ে লাভ নেই। দক্ষ এক লাখ লোক সেই রেমিট্যান্স আনতে পারে। লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে সংখ্যার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই, নজর দিতে হবে দক্ষতায়।