নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর ও আবাসনের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ডাকা চলমান শাটডাউন কর্মসূচিতে দ্বিতীয় দিনে স্থবির হয়ে আছে ক্যাম্পাস।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে সরজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। নেই শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। বন্ধ রয়েছে সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবন, কন্ট্রোলার অফিস ও মেডিক্যাল সেন্টার শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকায় কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।
এদিন সকালে ভিসি ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা, দ্বিতীয় ফটকটি কর্মকর্তারা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করছেন। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে ঢিলে-ঢালাভাবে কার্যক্রম চলছে। দুপুর ১২টা নাগাদ কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা যায় ক্যাম্পাসে। তবে শিক্ষকদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে উন্মুক্ত লাইব্রেরিতেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
এরআগে গত রোববার তিন দাবিতে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীর। পরে গতকাল সোমবার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষ গতকাল রাত ৮টা নাগাদ শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবির দুটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয় মন্ত্রণালয়। পরে ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তবে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ বিভাগের আওতাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে এ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।
সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে, প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা; প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে নির্মাণ; আবাসন সমস্যা নিরসন বিষয়ে আলোচনা এবং বিবিধ প্রসঙ্গ।
অনশনে অংশ নেওয়া ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাকসুদুল হক বলেন, ‘ভিসি ভবনের মেইন গেটে আমরা তালা দিয়েছি। শুধু মেডিক্যাল ও কন্ট্রোলার অফিস খোলা। শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা আগামীকাল বৈঠকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শাখা সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান আকাশ বলেন, ‘আগামীকাল সভার সিদ্ধান্তের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আবারও কঠোর আন্দোলনে যাবো।’
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সই করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে দীর্ঘসূত্রতা করা চলবে না।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।