চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাজুড়ে গতকাল সোমবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৭ দিনের ‘বিশেষ লকডাউন’ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টের তুলনায় শনাক্তের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি হওয়ায় এই বিশেষ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনাক্রমে জনগণকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে শেষ এই লকডাউন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। এতে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত জেলা থেকে কেউ বাইরে যেতে এবং বাইরে থেকে কেউ জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না। তবে জরুরি পরিষেবা কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানানো হয় প্রেস ব্রিফিংয়ে।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। গত এক সপ্তাহের করোনা শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের অধিক হওয়ায় জেলাজুড়ে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সর্বাত্মক বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, জরুরী পরিষেবা ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় আম বাজারজাত করা যাবে বলে তিনি জানান। এদিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব জানান,‘স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনকে সহায়তায় মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সুপার বলেন, আগামীকাল থেকে জেলায় প্রবেশের সকল পথ সিলগালা করা হবে যাতে কেউ জেলায় প্রবেশ করতে এবং জেলা থেকে বাইরে যেতে না পারে। পাশাপাশি সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন মেনে চলতে বাধ্য করা জবে জনগণকে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১২৯১ জন এবং মারা গেছেন ২৯ জন। আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ হাজার ৫’শ জনের। যার মধ্যে গত এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৪৪৭ জন। যার মধ্যে গত ৯ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে ১৯৪ জন।
করোনা ও উপসর্গে এক দিনে রামেকে ১০ মৃত্যু : করোনাভাইরাস ও উপসর্গে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বাকি সাতজনের উপসর্গ ছিল।
গত শনিবার থেকে রোববার রাতের বিভিন্ন সময় হাসপাতালের আইসিইউ ও করোনা পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গতরাতে আইসিইউতেই মারা গেছেন চারজন। এছাড়া করোনা পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড ১৬ নম্বরে মারা গেছেন আরও তিনজন। দুইজনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে। এছাড়া ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে আরেকজন মারা গেছেন। করোনার উপসর্গে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে মরদেহ দাফনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিশেষ লকডাউন’
ট্যাগস :
শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ
জনপ্রিয় সংবাদ