ঢাকা ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা

  • আপডেট সময় : ০৭:১৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

যশোর সংবাদদাতা : বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে এসব দিবস ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান ঘিরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা। ফুলের দাম বেশি হওয়ায় গতবারের তুলনায় এবার ফুল চাষ বাড়িয়ে দিয়েছেন চাষিরা। ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালী অঞ্চলে বছরজুড়ে ফুলচাষ হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস ফুলের ভরা মৌসুম। এবার এই অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ১২০০ হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুল চাষ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে ৪-৫ হাজার পরিবার ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত।

প্রতিবছর এই অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার ফুল। দেশে ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে সাধারণত ইংরেজি নববর্ষ, বাংলা নববর্ষ, বিজয় দিবস, বড়দিন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে। এসব দিবসে চাহিদা মেটাতে দেশের অধিকাংশ ফুল সরবরাহ করা হয় এই অঞ্চল থেকে। গদখালীর চাষিরা এসব দিবসকে টার্গেট করেই ফুল চাষ করে থাকেন। উপজেলার শিমুলিয়া, পানিসারা, হাড়িয়া, শরীফপুর ও গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষিরা দেশের মোট চাহিদার অন্তত ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ করে থাকেন। চলতি বছরে অতি তাপমাত্রা আর অতিবৃষ্টির ধকল কাটিয়ে এই মৌসুমে চাষিরা শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গদখালী বাজারে খুব ভোরে এসব অঞ্চলের ফুলচাষিরা হরেক রকম ফুলের পসরা নিয়ে বসেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা এখান থেকে ফুল কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গদখালীর পানিসারায় মাঠের পর মাঠজুড়ে শুধু গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নানা ধরনের ফুলের সমারোহ। গদখালী ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস রজনীগন্ধা ৫ থেকে ৭ টাকা, গোলাপ ৬ থেকে ৭ টাকা, গøাডিওলাস ১৩ থেকে ১৫ টাকা, জারবেরা ১২ থেকে ১৪ টাকা, ১০০ পিস চন্দ্রমল্লিকা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, এক হাজার গাঁদা ফুল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলচাষি পলাশ হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে গোলাপ ও এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন।

চারা রোপণ থেকে গাছে ফুল আসা পর্যন্ত গোলাপ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৭০ হাজার ও রজনীগন্ধা ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার এ বছর প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন। তনি আরও জানান, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে চলতি মৌসুমে গদখালীর ফুলচাষিরা রেকর্ড পরিমাণ টাকার ফুল বিক্রি ও বাজারজাত করতে পারবেন। ফুলের পাইকারি বিক্রেতা শাহজাহান আলী জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর ও ইংরেজি নববর্ষে বিক্রি খুব ভালো হয়েছে। দামও ভালো পেয়েছি।

তবে সামনে দিবসগুলোতে ফুলের চাহিদা ও দাম দুটোই আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর জানান, গত বছরের তুলনায় চাষিরা এবার ফুলের ভালো দাম পাচ্ছে। বাজার মূল্য যদি এভাবে থাকে তাহলে সামনে বিভিন্ন দিবসে এবং সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান ঘিরে গদখালী থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছি।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দাভোসে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা

আপডেট সময় : ০৭:১৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

যশোর সংবাদদাতা : বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে এসব দিবস ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান ঘিরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা। ফুলের দাম বেশি হওয়ায় গতবারের তুলনায় এবার ফুল চাষ বাড়িয়ে দিয়েছেন চাষিরা। ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালী অঞ্চলে বছরজুড়ে ফুলচাষ হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস ফুলের ভরা মৌসুম। এবার এই অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ১২০০ হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুল চাষ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে ৪-৫ হাজার পরিবার ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত।

প্রতিবছর এই অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার ফুল। দেশে ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে সাধারণত ইংরেজি নববর্ষ, বাংলা নববর্ষ, বিজয় দিবস, বড়দিন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে। এসব দিবসে চাহিদা মেটাতে দেশের অধিকাংশ ফুল সরবরাহ করা হয় এই অঞ্চল থেকে। গদখালীর চাষিরা এসব দিবসকে টার্গেট করেই ফুল চাষ করে থাকেন। উপজেলার শিমুলিয়া, পানিসারা, হাড়িয়া, শরীফপুর ও গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষিরা দেশের মোট চাহিদার অন্তত ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ করে থাকেন। চলতি বছরে অতি তাপমাত্রা আর অতিবৃষ্টির ধকল কাটিয়ে এই মৌসুমে চাষিরা শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গদখালী বাজারে খুব ভোরে এসব অঞ্চলের ফুলচাষিরা হরেক রকম ফুলের পসরা নিয়ে বসেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা এখান থেকে ফুল কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গদখালীর পানিসারায় মাঠের পর মাঠজুড়ে শুধু গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নানা ধরনের ফুলের সমারোহ। গদখালী ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস রজনীগন্ধা ৫ থেকে ৭ টাকা, গোলাপ ৬ থেকে ৭ টাকা, গøাডিওলাস ১৩ থেকে ১৫ টাকা, জারবেরা ১২ থেকে ১৪ টাকা, ১০০ পিস চন্দ্রমল্লিকা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, এক হাজার গাঁদা ফুল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলচাষি পলাশ হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে গোলাপ ও এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন।

চারা রোপণ থেকে গাছে ফুল আসা পর্যন্ত গোলাপ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৭০ হাজার ও রজনীগন্ধা ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার এ বছর প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন। তনি আরও জানান, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে চলতি মৌসুমে গদখালীর ফুলচাষিরা রেকর্ড পরিমাণ টাকার ফুল বিক্রি ও বাজারজাত করতে পারবেন। ফুলের পাইকারি বিক্রেতা শাহজাহান আলী জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর ও ইংরেজি নববর্ষে বিক্রি খুব ভালো হয়েছে। দামও ভালো পেয়েছি।

তবে সামনে দিবসগুলোতে ফুলের চাহিদা ও দাম দুটোই আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর জানান, গত বছরের তুলনায় চাষিরা এবার ফুলের ভালো দাম পাচ্ছে। বাজার মূল্য যদি এভাবে থাকে তাহলে সামনে বিভিন্ন দিবসে এবং সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠান ঘিরে গদখালী থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির আশা করছি।