ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

শত্রুতার বিষে নষ্ট ১৯ হাজার ফুলকপি গাছ

  • আপডেট সময় : ১১:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সীতাকু-ে রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগে দুই কৃষকের ১৯ হাজার ফুলকপির গাছ নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকূল সাগর উপকূলে এমনই ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাতের আধাঁরে আবু বক্কর সিদ্দিক ও দিদারুল আলম নামের দুই কৃষকের ফুলকপি ক্ষেতে কে বা কারা আগাছা দমনের বিষ ছিটিয়ে দেন। এর কয়েকদিন পর থেকে গাছগুলো ধীরে ধীরে মরতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে কোনো ছত্রাকের আক্রমণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে ধারণা করে প্রতিকার হিসেবে কয়েক হাজার টাকার কীটনাশক ছিটান তারা। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি ফুলকপির গাছের পাতা বিষের প্রভাবে জ্বলে লালচে আকার ধারণ করেছে। জমির পাশে মাথায় হাত দিয়ে অসহায়ের মতো বসে আছেন কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক ও দিদারুল আলম। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার চোখ ভিজে যাচ্ছিল দুই কৃষকের। আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার জমিতে ১০ হাজার ফুলকপি ও দুই হাজার ওলকপি গাছ ছিল। গাছগুলোর ফসল দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন লাখ টাকার ফুলকপি ও ওলকপি বিক্রি করতে পারতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ক্ষেতে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর বেশিরভাগই এনজিও থেকে ঋণ ও স্থানীয়ভাবে ধার করা টাকা। এখন আমি দিশেহারা। কীভাবে ধারকর্জ পরিশোধ করবো, কীভাবে সংসার চালাবো?’ অপর কৃষক দিদারুল আলম বলেন, ‘সাগর পাড়ের মাটি লবণাক্ত হওয়ায় এখানে ফসল ফলানো অনেক কষ্টের। আমাদের নিজের কোনো জমি না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানে এসে চাষ করতে হয়। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র মাছের প্রজেক্টে বিষ ঢেলে সবগুলো মাছ মেরে ফেলে কে বা কারা। আর এখন সাত হাজার ফুলকপির গাছ জ্বালিয়ে দিলো।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার সবটাই ঋণের টাকা। এখন আমি ঋণ শোধ করবো কীভাবে, পরিবার নিয়ে খাবো কী? বাড়িতে তিনটি মেয়ের মুখের দিকে তাকালে আমার খালি কান্না আসছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বলেন, বিষ প্রয়োগে ফসল নষ্ট করা চরম গর্হিত কাজ। ফসল কৃষকের কাছে সন্তানের মতো। ফসলের কোনো ক্ষতি হলে কৃষকদের অনেক কষ্ট হয়। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শত্রুতার বিষে নষ্ট ১৯ হাজার ফুলকপি গাছ

আপডেট সময় : ১১:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সীতাকু-ে রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগে দুই কৃষকের ১৯ হাজার ফুলকপির গাছ নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকূল সাগর উপকূলে এমনই ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাতের আধাঁরে আবু বক্কর সিদ্দিক ও দিদারুল আলম নামের দুই কৃষকের ফুলকপি ক্ষেতে কে বা কারা আগাছা দমনের বিষ ছিটিয়ে দেন। এর কয়েকদিন পর থেকে গাছগুলো ধীরে ধীরে মরতে শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে কোনো ছত্রাকের আক্রমণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে ধারণা করে প্রতিকার হিসেবে কয়েক হাজার টাকার কীটনাশক ছিটান তারা। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি ফুলকপির গাছের পাতা বিষের প্রভাবে জ্বলে লালচে আকার ধারণ করেছে। জমির পাশে মাথায় হাত দিয়ে অসহায়ের মতো বসে আছেন কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক ও দিদারুল আলম। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার চোখ ভিজে যাচ্ছিল দুই কৃষকের। আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার জমিতে ১০ হাজার ফুলকপি ও দুই হাজার ওলকপি গাছ ছিল। গাছগুলোর ফসল দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন লাখ টাকার ফুলকপি ও ওলকপি বিক্রি করতে পারতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ক্ষেতে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর বেশিরভাগই এনজিও থেকে ঋণ ও স্থানীয়ভাবে ধার করা টাকা। এখন আমি দিশেহারা। কীভাবে ধারকর্জ পরিশোধ করবো, কীভাবে সংসার চালাবো?’ অপর কৃষক দিদারুল আলম বলেন, ‘সাগর পাড়ের মাটি লবণাক্ত হওয়ায় এখানে ফসল ফলানো অনেক কষ্টের। আমাদের নিজের কোনো জমি না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানে এসে চাষ করতে হয়। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র মাছের প্রজেক্টে বিষ ঢেলে সবগুলো মাছ মেরে ফেলে কে বা কারা। আর এখন সাত হাজার ফুলকপির গাছ জ্বালিয়ে দিলো।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার সবটাই ঋণের টাকা। এখন আমি ঋণ শোধ করবো কীভাবে, পরিবার নিয়ে খাবো কী? বাড়িতে তিনটি মেয়ের মুখের দিকে তাকালে আমার খালি কান্না আসছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বলেন, বিষ প্রয়োগে ফসল নষ্ট করা চরম গর্হিত কাজ। ফসল কৃষকের কাছে সন্তানের মতো। ফসলের কোনো ক্ষতি হলে কৃষকদের অনেক কষ্ট হয়। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ।