ক্রীড়া ডেস্ক: মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান দিমুথ কারুনারাত্নে। ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট দিয়ে এক যুগের ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন শ্রীলঙ্কার এই অভিজ্ঞ ওপেনার। ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে তিনটি ব্যাপার। আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত আর কেবল দুটি টেস্ট খেলবে শ্রীলঙ্কা।
গত ১৪ মাস ধরে রান করতে ভুগছেন তিনি। ২০২৪ সালের শুরু থেকে তার গড় কেবল ২৭.০৫। গলে অস্ট্রলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কার শেষ ম্যাচ। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে নিজের সিদ্ধান্তের পেছনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন কারুনারাত্নে। “তিন বা চার জন তরুণ খেলোয়াড় পরবর্তী টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য আসতে পারে, তাই বিদায়ের এটাই সঠিক সময়। এর পাশাপাশি এই ম্যাচ হবে গলে, যেখানে আমার অভিষেক হয়েছিল।
তাই সেখানেই শেষ করা হবে চমৎকার একটি ব্যাপার।” কারুনারাত্নে জানান, চলমান সিরিজের প্রথম ম্যাচের পরেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে বলেছিলেন যে, পরেরটি হবে তার শেষ টেস্ট। ২০১২ সালের নভেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে গলে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল কারুনারাত্নের। ২০১৪ সালে কিছু দিনের জন্য বাদ পড়েছিলেন তিনি। তবে ওই বছরের শেষ দিকে সেঞ্চুরি করার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। কমবেশি নিয়মিতই দলে ছিলেন তিনি। পরে তো একসময়ে সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়েই পরিণত হন। ১২ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৬টি সেঞ্চুরি করেছেন কারুনারাত্নে। অনেক এগিয়ে থেকে এই সংস্করণে শ্রীলঙ্কান ওপেনারদের মধ্যে রানের চূড়ায় আছেন তিনি। ৩৯.৯৯ গড়ে করেছেন ৭ হাজার ৭৯ রান। তিনি হবেন একশ টেস্ট খেলা শ্রীলঙ্কার সপ্তম ক্রিকেটার। এর আগে এই মাইলফলক ছুঁতে পেরেছেন সানাৎ জায়াসুরিয়া, মুত্তাইয়া মুরালিদারান, চামিন্দা ভাস, মাহেলা জায়াওয়ার্দেনে, কুমার সাঙ্গাকারা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
বিদায়ের আগে পেছনে ফিরে তাকালেন কারুনারাত্নে, বললেন আক্ষেপের কথাও। “একশ টেস্ট খুব কঠিন কাজ। বিশেষ করে একজন ওপেনারের জন্য, যে দলের হয়ে কঠিন কাজটা করে।” “যদি আক্ষেপের কথা বলি তো, টেস্টে ১০ হাজার রান করতে না পারার কথা বলতে হবে। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সাল যেমন কেটেছিল, ভেবেছিলাম আমি সেটা করার সুযোগ পাব। এরপর তো কোভিড এলো, আর শ্রীলঙ্কাও এখন বেশি টেস্ট খেলে না।” এর পাশাপাশি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে না পারারও একটি আক্ষেপ কারুনারাত্নের। ২০১৯ সালে দিনেশ চান্দিমাল বাদ পড়ার টেস্ট দলের নেতৃত্ব পান তিনি। তার সময়েই দক্ষিণ আফ্রিকায় ২-০ ব্যবধানে জেতে শ্রীলঙ্কা।
সেই বছরই ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি, এই সংস্করণে খেলেন ৫০ ম্যাচ। দেশের হয়ে কখনও টি-টোয়েন্টিতে খেলা হয়নি তার। আপাতত মেলবোর্নে স্থায়ী হওয়া কারুনারাত্নে অবসরের পর কিছু দিন সময় কাটাতে চান পরিবারের সঙ্গে। এরপর মনোযোগ দেবেন কোচিংয়ে।