ঢাকা ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

শখের বশে দুম্বার খামারে বাদলের ভাগ্যবদল

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: শখের বশে দুম্বা লালন-পালন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বরিশালের রেজাউল করিম বাদল। এখন তার খামারে রয়েছে ৭০টি তুর্কি দুম্বা। এসব দুম্বা কোরবানিতে বিক্রি করার কথা জানান তিনি।
রেজাউল করিম বাদল বরিশাল নগরীর লোহারপোল এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন।

শখের বশে ২০১৬ সালে খুলনা থেকে তিনটি তুরস্ক প্রজাতির দুম্বা সংগ্রহ করেন রেজাউল করিম। ছয় মাস যেতে না যেতেই বাচ্চা দেওয়া শুরু করে দুম্বাগুলো। ধীরে ধীরে তিনটি থেকে বেড়ে এখন তার খামারে ৭০টি দুম্বা।

সদর উপজেলার কর্নকাঠি গ্রামে বাদলের খামার ঘুরে দেখা গেছে, দুম্বার পাশাপাশি শতাধিক ব্লাক বেঙ্গল, তোতাপাড়ি, বৃটল, গুজরি ও দেশি বিভিন্ন প্রজাতির উন্নত মানের ছাগল রয়েছে তার খামারে। ছয় শ্রমিক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব প্রাণীর সেবায় কাজ করছেন। শ্রমিকদের পেছনে মাসে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। দুম্বা ও ছাগলের জন্য তিন বেলা দেশিয় ঘাস, গম, ভুট্টার ভুষিসহ মাসে খাবার খরচ মিলিয়ে ব্যয় হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।

রেজাউল করিম বাদল বলেন, ‘লালন-পালনের পর তিন মাস পরপর দুম্বা ও ছাগল বিক্রি করে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা আয় হয়। তবে এসব দুম্বা ও ছাগল খাওয়ার জন্য মানুষ কিনছেন না, সবাই পালন করার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা নিজস্ব বা বাণিজ্যিক খামার গড়ছেন তারা এখান থেকে বাচ্চা নিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দুম্বা আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে ছাগলের সঙ্গে একই খাবার খাচ্ছে। পাশাপাশি ৬-৮ মাসের মধ্যে বাচ্চা দিচ্ছে। বাচ্চাগুলো এক বছরের মধ্যে প্রায় ৮০ কেজি পর্যন্ত ওজন হওয়ার পর সেটি বিক্রির উপযোগী হয়।’

বাদলের স্ত্রী আসমত আরা জানান, ‘স্বামীর উদ্যোগে দুম্বা পালন করে তারা এখন স্বাবলম্বী। সফলতা দেখে অনেক তরুণ উদ্যোক্তারা প্রতিদিন ভিড় করছেন খামারে। প্রয়োজন অনুযায়ী সবাইকে সহযোগিতার কথাও বলেন তিনি।’

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মইনুল হক বলেন, ‘দুম্বার খামারের খবর পেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম কর্নকাঠি এলাকায়। কিন্তু দুম্বা পছন্দ হলেও দামে মিলানো যাচ্ছে না। ৮০ থেকে ৯০ কেজি ওজনের একটি দুম্বার যে দাম পড়ে সে দামে ২০০ কেজি ওজনের একটি গরু কিনতে পাওয়া যায়।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাদলের খামারটি সার্বক্ষণিক অবজারভেশনে রেখেছি। মরু দেশের এ প্রাণী আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গে মিলে গেছে। দুম্বা পালনে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শখের বশে দুম্বার খামারে বাদলের ভাগ্যবদল

আপডেট সময় : ০৭:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: শখের বশে দুম্বা লালন-পালন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বরিশালের রেজাউল করিম বাদল। এখন তার খামারে রয়েছে ৭০টি তুর্কি দুম্বা। এসব দুম্বা কোরবানিতে বিক্রি করার কথা জানান তিনি।
রেজাউল করিম বাদল বরিশাল নগরীর লোহারপোল এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন।

শখের বশে ২০১৬ সালে খুলনা থেকে তিনটি তুরস্ক প্রজাতির দুম্বা সংগ্রহ করেন রেজাউল করিম। ছয় মাস যেতে না যেতেই বাচ্চা দেওয়া শুরু করে দুম্বাগুলো। ধীরে ধীরে তিনটি থেকে বেড়ে এখন তার খামারে ৭০টি দুম্বা।

সদর উপজেলার কর্নকাঠি গ্রামে বাদলের খামার ঘুরে দেখা গেছে, দুম্বার পাশাপাশি শতাধিক ব্লাক বেঙ্গল, তোতাপাড়ি, বৃটল, গুজরি ও দেশি বিভিন্ন প্রজাতির উন্নত মানের ছাগল রয়েছে তার খামারে। ছয় শ্রমিক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব প্রাণীর সেবায় কাজ করছেন। শ্রমিকদের পেছনে মাসে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। দুম্বা ও ছাগলের জন্য তিন বেলা দেশিয় ঘাস, গম, ভুট্টার ভুষিসহ মাসে খাবার খরচ মিলিয়ে ব্যয় হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।

রেজাউল করিম বাদল বলেন, ‘লালন-পালনের পর তিন মাস পরপর দুম্বা ও ছাগল বিক্রি করে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা আয় হয়। তবে এসব দুম্বা ও ছাগল খাওয়ার জন্য মানুষ কিনছেন না, সবাই পালন করার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা নিজস্ব বা বাণিজ্যিক খামার গড়ছেন তারা এখান থেকে বাচ্চা নিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দুম্বা আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে ছাগলের সঙ্গে একই খাবার খাচ্ছে। পাশাপাশি ৬-৮ মাসের মধ্যে বাচ্চা দিচ্ছে। বাচ্চাগুলো এক বছরের মধ্যে প্রায় ৮০ কেজি পর্যন্ত ওজন হওয়ার পর সেটি বিক্রির উপযোগী হয়।’

বাদলের স্ত্রী আসমত আরা জানান, ‘স্বামীর উদ্যোগে দুম্বা পালন করে তারা এখন স্বাবলম্বী। সফলতা দেখে অনেক তরুণ উদ্যোক্তারা প্রতিদিন ভিড় করছেন খামারে। প্রয়োজন অনুযায়ী সবাইকে সহযোগিতার কথাও বলেন তিনি।’

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মইনুল হক বলেন, ‘দুম্বার খামারের খবর পেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম কর্নকাঠি এলাকায়। কিন্তু দুম্বা পছন্দ হলেও দামে মিলানো যাচ্ছে না। ৮০ থেকে ৯০ কেজি ওজনের একটি দুম্বার যে দাম পড়ে সে দামে ২০০ কেজি ওজনের একটি গরু কিনতে পাওয়া যায়।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাদলের খামারটি সার্বক্ষণিক অবজারভেশনে রেখেছি। মরু দেশের এ প্রাণী আমাদের আবহাওয়ার সঙ্গে মিলে গেছে। দুম্বা পালনে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ