রাজবাড়ী সংবাদদাতা : দীর্ঘদিন ধরে রাজবাড়ী সদর আর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার বিস্তীর্ণ চরজুড়ে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন চাষিরা। এ বছর আশানুরূপ ফলন না পেয়ে লোকসানের শঙ্কায় আছেন তারা। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গেলাম রাসুল বলেন, লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর জেলায় টমেটোর আবাদ বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় এ বছর জেলায় ৬১৬ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরজুড়ে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ করছেন চাষিরা। তবে এবার ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’য়ের কারণে জমিতে রস থাকায় টমেটো রোপন দেরিতে হয়েছে। যে কারণে কৃষকেরা ফলনটা কম পাচ্ছেন বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা। সরেজমিন সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকায় দেখা যায়, পদ্মার বিস্তীর্ণ চরজুড়ে শুধুই টমেটো খেত। বিউটি ফুল, বিপুল প্লাসসহ উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ করেছেন চাষিরা। গাছে থোকায় থোকায় ধরে আছে কাচা-পাকা টমেটো। জমি থেকে পাকা টমেটো তুলে কৃষক ও কৃষানীরা পাটের বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য সেগুলো বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। চাষিরা বলছেন, সাধারণত বিঘা প্রতি টমেটোর ফলন হয় ১৫০ থেকে ২০০ মণ। তাতে খরচ উঠিয়ে লাভবান হতেন তারা। তাই এই এলাকার কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে চরের জমিতে টমেটো আবাদ করছেন। তবে এবার ফলন কম হয়েছে। টমেটো চাষি মোহাম্মদ সিদ্দিক শেখ বলেন, “এ বছর টমেটো রোপনের সময় ঝড়ের কারণে ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ফলন কম হচ্ছে। যাও কিছু হতো ঘনকুয়াশায় আরও কমে গেছে।
“অন্যদিকে এখন বাজারেও টমেটোর দাম কম। আমাদের যা খরচ হয়েছে তা উঠাতে পারবো কিনা জানি না।” কৃষক মান্নান শেখ বলেন, “জমি লিজে লেগেছে ৪০ হাজার টাকা, টমেটোতে খরচ হয়েছে আরও ৩০-৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এবছর ফলনও কম, দামও কম।“গত বছর বিঘা প্রতি ২০০ মণ টমেটো পেয়েছি। দামও ভালো ছিলো। এ বছর ফলন পাচ্ছি ১০০ মণ, আবার দামও কম। তাই এ বছর লোকসান যাবে আমাদের।” টমেটো পাটের বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা। আরেক চাষি বছির বলেন, বীজ, চারা রোপন, সেচ, চাষ, কীটনাশক প্রয়োগ, শ্রমিকের মজুরিসহ এক বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর লিজের জমি হলে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার। “কিন্তু যে খরচ হয়েছে এবার সেই অনুপাতে দাম পাচ্ছি না। শুরুতে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি করতে পারলেও এখন ১৩-১৪ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।” তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গেলাম রাসুল আশা প্রকাশ করে বলেন, এই জেলায় উৎপাদিত টমেটো রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হয়। বাজারে টমেটোর দাম এখনো সন্তোষজনক রয়েছে। তাই আশা করছি চাষিরা লোকসানে পড়বে না।
লোকসানের শঙ্কায় টমেটো চাষিরা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ