ঢাকা ০২:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

লুটের অভিযোগে ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লা সংবাদদাতা : কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। তারা ওই মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ আগস্ট ব্রাহ্মণপাড়ার চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খানের মেয়ে সালমা আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। মামলার আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলাম, জীবন কৃষ্ণ মজুমদার ও কামাল হোসেন; এএসআই কৃষ্ণ সরকার ও মতিউর রহমান এবং কনস্টেবল নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন। আরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকেও মামলার আসামি করা হয়েছে। কুমিল্লা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা এ মামলাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন। নাহার দাবি করেন, সালমা আক্তারের ভাই লোকমান হোসেন ডাকাতিসহ নয়টি মামলার আসামি। দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে তাকে গ্রেপ্তার জন্য তা বাড়িতে যান। সেখানে তারা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তবে পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মোতাবেক অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’ এদিকে মামলার বাদী সালমা আক্তার জানান, গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তার ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে আসেন। তারা বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করেন। কোনো মামলায় ওয়ারেন্ট আছে কি না, জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার তাকে গালাগাল করেন এবং লাঠি দিয়ে শোকেসের গ্লাস ভেঙে ফেলেন। এছাড়া, তল্লাশির নামে আলমিরার চাবি নিয়ে ড্রয়ারে থাকা ২ লাখ টাকা এবং দুই জোড়া কানের দুল, দুটি চেন ও তিনটি আংটিসহ ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মোবাইল ফোন লুটে নেন তারা।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় চিৎকার শুনে পাশের বাড়িতে থাকা আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদ এগিয়ে পার্শ্ববর্তী বিল্লাল খানের দোকানের সামনে আসেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আমার স্বামী আবুল কালাম আজাদকে দোকানের সামনে থেকে টেনেহিঁচড়ে আটকের চেষ্টা করলে বাবা জামাল আহাম্মদ খান নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের আপত্তি জানান। এ সময় এএসআই কৃষ্ণ সরকার আমার বাবার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এছাড়া, অন্য পুলিশ সদস্যরা আমার বাবা ও স্বামীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা আমার স্বামীকে আটক করে নিয়ে যান। এসব ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

লুটের অভিযোগে ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১

কুমিল্লা সংবাদদাতা : কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। তারা ওই মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ আগস্ট ব্রাহ্মণপাড়ার চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খানের মেয়ে সালমা আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। মামলার আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলাম, জীবন কৃষ্ণ মজুমদার ও কামাল হোসেন; এএসআই কৃষ্ণ সরকার ও মতিউর রহমান এবং কনস্টেবল নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন। আরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকেও মামলার আসামি করা হয়েছে। কুমিল্লা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা এ মামলাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন। নাহার দাবি করেন, সালমা আক্তারের ভাই লোকমান হোসেন ডাকাতিসহ নয়টি মামলার আসামি। দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে তাকে গ্রেপ্তার জন্য তা বাড়িতে যান। সেখানে তারা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তবে পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মোতাবেক অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’ এদিকে মামলার বাদী সালমা আক্তার জানান, গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তার ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে আসেন। তারা বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করেন। কোনো মামলায় ওয়ারেন্ট আছে কি না, জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার তাকে গালাগাল করেন এবং লাঠি দিয়ে শোকেসের গ্লাস ভেঙে ফেলেন। এছাড়া, তল্লাশির নামে আলমিরার চাবি নিয়ে ড্রয়ারে থাকা ২ লাখ টাকা এবং দুই জোড়া কানের দুল, দুটি চেন ও তিনটি আংটিসহ ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মোবাইল ফোন লুটে নেন তারা।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় চিৎকার শুনে পাশের বাড়িতে থাকা আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদ এগিয়ে পার্শ্ববর্তী বিল্লাল খানের দোকানের সামনে আসেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আমার স্বামী আবুল কালাম আজাদকে দোকানের সামনে থেকে টেনেহিঁচড়ে আটকের চেষ্টা করলে বাবা জামাল আহাম্মদ খান নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের আপত্তি জানান। এ সময় এএসআই কৃষ্ণ সরকার আমার বাবার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এছাড়া, অন্য পুলিশ সদস্যরা আমার বাবা ও স্বামীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা আমার স্বামীকে আটক করে নিয়ে যান। এসব ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’