স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : লিভার সিরোসিস, একটি কঠিন রোগ। যা একদিনে হয় না। বরং দীর্ঘদিন কোনো ইনফেকশন, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, মদ্যপান সহ নানা কারণে হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে অসুখ ধরা পড়লে সুস্থ থাকা সম্ভব।
যে যে লক্ষণ থাকে: সমস্যা হচ্ছে, প্রাথমিক পর্যায়ে বেশিরভাগেরই তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। বরং রোগ কিছুটা এগলে এই উপসর্গ দেখা যায় বলে জানাচ্ছে এনএইচএস.ইউকে।
- সারা দিন ক্লান্তি থাকতে পারে
- বমি বমি ভাব থাকে
- শরীর খারাপ লাগতে পারে
- খিদে পায় না
- হঠাৎ করেই ওজন কমে যেতে পারে
- হাতের তালুতে লাল লাল ছোট ছোট প্যাচ দেখা দিতে পারে।
এই পর্যায়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে রোগ অনায়াসে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
সিরোসিস বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে: অনেক ক্ষেত্রে অবহেলার দরুন রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। তখন সমস্যা চেপে ধরে। এই পরিস্থিতিতে দেখা দিতে পারে- - চোখ ও ত্বক হলুদ হয়
- রক্ত বমি হতে পারে
- ত্বকে চুলকানি
- সামান্য আঘাতেই রক্তপাত হতে পারে
- পা ফুলতে পারে
- পেটে পানি জমতে পারে
- শারীরিক ঘনিষ্ঠতার ইচ্ছে কমতে পারে ইত্যাদি।
কেন হয়: এই অসুখের পিছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে- - অনেকে প্রচুর মদ্যপান করেন, এর থেকে তৈরি হয় সমস্যা
- কিছুজনের থাকে নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, এই অসুখের চিকিৎসা না হলেও হতে পারে সিরোসিস
- হেপাটাইটিস বি ও সি রোগীদেরও এই অসুখের আশঙ্কা থাকে বেশি
- সিস্টিক ফাইব্রোসিস
- শরীরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন জমলে
- উইলসন ডিজিজ
- কিছু ওষুধ খেয়ে
- বাইল ডাক্টে ব্লকেজ
- কিছু অটোইমিউন অসুখ
- কিছু জিনগত অসুখ থেকে হতে পারে সিরোসিস।
কীভাবে রোগ নির্ণয় : উপরে বলে দেওয়া কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি আপনার রোগ লক্ষণগুলো জেনে কিছু টেস্ট করতে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা দেওয়া হয় কিছু। এছাড়া প্রয়োজন মতো করতে হতে পারে আলট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান, এমআরআই। এ ছাড়াও চিকিৎসকের প্রয়োজন মনে করলে লিভার বায়োপসি দিতে পারেন। এই টেস্টগুলো অনায়াসে রোগ ধরিয়ে দেয়। এরপর আসে চিকিৎসার পালা। তবে যত দ্রুত রোগ ধরা পড়ে তত চিকিৎসায় সুবিধা হয়।
রোগের চিকিৎসা : এই অসুখের চিকিৎসা রয়েছে। তবে রোগ থেকে যে একদম সেরে উঠবেন, এমন আশা কম। বরং রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়। মূলত রোগীর লক্ষণগুলি যাতে হ্রাস পায়, সেই বিষয়ে জোর দেন চিকিৎসকরা। সেই মতো কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। এ ছাড়া মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া, ওজন কমানোর মতো কিছু পদক্ষেপ রোগীকেও গ্রহণ করতে হয়।