ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

লিভারপুলের কষ্টের জয়

  • আপডেট সময় : ১২:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : স্কোর লাইন ৩-১। তবে এই স্কোর লাইনে ফুটে উঠছে না ম্যাচের সত্যিকারের চিত্র। লিভারপুলের বিপক্ষে সমানে-সমানে লড়াই করেছে অ্যাস্টন ভিলা। ওলি ওয়াটকিন্স, লিওন বেইলিরা অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া না করলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত। বিশ্বকাপ বিরতির পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে লিভারপুল। মোহামেদ সালাহ শুরুতে সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার পর তার পাস থেকেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভার্জিল ফন ডাইক। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ওয়াটকিন্স ব্যবধান কমালেও বদলি নামার দুই মিনিটের মধ্যে গোল করে তিন পয়েন্ট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন স্তেফান বাইচেতিচ। প্রথম ১৭ মিনিটেই হয়তো হ্যাট্রিক হয়ে যেতে পারত ওয়াটকিন্সের! গোলমুখে বারবার ব্যর্থ হলেন তিনি। অ্যাস্টন ভিলার অন্যরাও নষ্ট করলেন অসংখ্য সুযোগ। গোলমুখে ব্যর্থতায় পিছিয়ে ছিলেন না লিভারপুলের দারউইন নুনেসও। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ হাতছাড়া হয় উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকারের ব্যর্থতায়।
ঘরের মাঠে প্রথম মিনিটেই সুযোগ পায় অ্যাস্টন ভিলা। এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়ার পাসে ওয়াটকিন্সের ভলি ঠেকিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন। পরের মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত লিভারপুল। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের নিচু ক্রসে সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি নুনেস। গোলের জন্য ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। পঞ্চম মিনিটে রবার্টসনের কাছ থেকে বল পেয়ে অনায়াসে জাল খুঁজে নেন সালাহ। প্রিমিয়ার লিগে এটি রবার্টসনের ৫৪তম অ্যাসিস্ট। এতে ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতিযোগিতাটিতে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়লেন তিনি। ছাড়িয়ে গেলেন লেইটন বাইনেসের ৫৩ অ্যাসিস্ট। নবম মিনিটে বেইলির চেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়ে লিভারপুলের ত্রাতা আলিসন। চার মিনিট পর হয়তো তিনিও বাঁচাতে পারতেন না। তবে ভারসাম্য হারিয়ে ১২ গজ দূর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বেইলি। হাতছাড়া হয়ে যায় সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ। ১৭তম মিনিটে দূরের পোস্টে ওয়াটকিন্সের ডাইভিং হেড ব্যর্থ করে দেন আলিসন। নষ্ট হয় অ্যাস্টন ভিলার আরেকটি দারুণ সুযোগ। দুই মিনিট পর ফ্রি কিক থেকে চমৎকার হেডে জালে বল পাঠান জোয়েল মাতিপ। তবে অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল। ২৫তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি অরক্ষিত নুনেস। তিন মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েও উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার কাজে লাগাতে পারেননি চমৎকার সুযোগ। ৩৬তম মিনিটে দূরের পোস্টে নুনেসের শট থেকে সুযোগ এসেছিল সালাহর সামনে। তবে কোনোমতে রক্ষা করেন টাইরন মিঙ্গস। একটু হলে অবশ্য নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি! পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিভারপুল। অ্যাস্টন ভিলা কর্নার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল পান সালাহ। তিনি দেন ফন ডাইককে। ডাচ ডিফেন্ডারের বুলেট গতির শট মিঙ্গসের পায়ে লেগে একটু দিক পাল্টে জড়ায় জালে। ২০১৮-১৯ মৌসুমের শুরু থেকে প্রিমিয়ার লিগে এটি ফন ডাইকের ১৫তম গোল। এই সময়ে ডিফেন্ডারদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বাড়তে পারত ব্যবধান। তবে ফ্রি কিকে পা ছোঁয়ালেও গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি নুনেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জালে বল পাঠান ওয়াটকিন্স। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। ৫১তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন সালাহ। তার শট পা বাড়িয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক। ফিরতি বল দগলাস লুইসের পায়ে গেলে পোস্টের বাইরের দিক ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটে ফাবিনিয়োর চমৎকার বাঁকানো শট দূরের পোস্টে একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৫৮তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি বেইলি। তার দৃষ্টিকটু ব্যর্থতায় নষ্ট হয় দারুণ সুযোগ। পরের মিনিটে ব্যবধান কমায় অ্যাস্টন ভিলা। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার লুইসের চমৎকার ক্রসে দারুণ হেডে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন ওয়াটকিন্স। এরপর লিভারপুলের উপর চাপ আরও বাড়ায় অ্যাস্টন ভিলা। তার মাঝেই ৭৫তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে গোল প্রায় পেয়ে যাচ্ছিলেন নুনেস। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্স পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে, দূরের পোস্ট দিয়ে শট নেন তিনি। আবারও পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় তার শট। ৮১তম মিনিটে আরেকটি প্রতি-আক্রমণে ব্যবধান বাড়ায় লিভারপুল। নুনেসের শট কোনোমতে ঠেকান অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। ছুটে গিয়ে আলগা বল ধরে বাঁদিকে এগিয়ে গিয়ে জালে পাঠান বাইচেতিচ। এই গোলের পর যেন স্বস্তি ফেরে লিভারপুল শিবিরে আর হতোদ্যম হয়ে পড়ে অ্যাস্টন ভিলা। বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। ১৫ ম্যাচে সপ্তম জয়ে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে লিভারপুল। ১৪ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে আর্সেনাল। টানা দুই জয়ের পর হারের তেতো স্বাদ পাওয়া অ্যাস্টন ভিলা ১৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১২ নম্বরে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

লিভারপুলের কষ্টের জয়

আপডেট সময় : ১২:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : স্কোর লাইন ৩-১। তবে এই স্কোর লাইনে ফুটে উঠছে না ম্যাচের সত্যিকারের চিত্র। লিভারপুলের বিপক্ষে সমানে-সমানে লড়াই করেছে অ্যাস্টন ভিলা। ওলি ওয়াটকিন্স, লিওন বেইলিরা অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া না করলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত। বিশ্বকাপ বিরতির পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে লিভারপুল। মোহামেদ সালাহ শুরুতে সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার পর তার পাস থেকেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভার্জিল ফন ডাইক। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ওয়াটকিন্স ব্যবধান কমালেও বদলি নামার দুই মিনিটের মধ্যে গোল করে তিন পয়েন্ট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন স্তেফান বাইচেতিচ। প্রথম ১৭ মিনিটেই হয়তো হ্যাট্রিক হয়ে যেতে পারত ওয়াটকিন্সের! গোলমুখে বারবার ব্যর্থ হলেন তিনি। অ্যাস্টন ভিলার অন্যরাও নষ্ট করলেন অসংখ্য সুযোগ। গোলমুখে ব্যর্থতায় পিছিয়ে ছিলেন না লিভারপুলের দারউইন নুনেসও। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ হাতছাড়া হয় উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকারের ব্যর্থতায়।
ঘরের মাঠে প্রথম মিনিটেই সুযোগ পায় অ্যাস্টন ভিলা। এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়ার পাসে ওয়াটকিন্সের ভলি ঠেকিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন। পরের মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত লিভারপুল। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের নিচু ক্রসে সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি নুনেস। গোলের জন্য ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। পঞ্চম মিনিটে রবার্টসনের কাছ থেকে বল পেয়ে অনায়াসে জাল খুঁজে নেন সালাহ। প্রিমিয়ার লিগে এটি রবার্টসনের ৫৪তম অ্যাসিস্ট। এতে ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতিযোগিতাটিতে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়লেন তিনি। ছাড়িয়ে গেলেন লেইটন বাইনেসের ৫৩ অ্যাসিস্ট। নবম মিনিটে বেইলির চেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়ে লিভারপুলের ত্রাতা আলিসন। চার মিনিট পর হয়তো তিনিও বাঁচাতে পারতেন না। তবে ভারসাম্য হারিয়ে ১২ গজ দূর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বেইলি। হাতছাড়া হয়ে যায় সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ। ১৭তম মিনিটে দূরের পোস্টে ওয়াটকিন্সের ডাইভিং হেড ব্যর্থ করে দেন আলিসন। নষ্ট হয় অ্যাস্টন ভিলার আরেকটি দারুণ সুযোগ। দুই মিনিট পর ফ্রি কিক থেকে চমৎকার হেডে জালে বল পাঠান জোয়েল মাতিপ। তবে অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল। ২৫তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি অরক্ষিত নুনেস। তিন মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েও উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার কাজে লাগাতে পারেননি চমৎকার সুযোগ। ৩৬তম মিনিটে দূরের পোস্টে নুনেসের শট থেকে সুযোগ এসেছিল সালাহর সামনে। তবে কোনোমতে রক্ষা করেন টাইরন মিঙ্গস। একটু হলে অবশ্য নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি! পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিভারপুল। অ্যাস্টন ভিলা কর্নার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল পান সালাহ। তিনি দেন ফন ডাইককে। ডাচ ডিফেন্ডারের বুলেট গতির শট মিঙ্গসের পায়ে লেগে একটু দিক পাল্টে জড়ায় জালে। ২০১৮-১৯ মৌসুমের শুরু থেকে প্রিমিয়ার লিগে এটি ফন ডাইকের ১৫তম গোল। এই সময়ে ডিফেন্ডারদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বাড়তে পারত ব্যবধান। তবে ফ্রি কিকে পা ছোঁয়ালেও গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি নুনেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জালে বল পাঠান ওয়াটকিন্স। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। ৫১তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন সালাহ। তার শট পা বাড়িয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক। ফিরতি বল দগলাস লুইসের পায়ে গেলে পোস্টের বাইরের দিক ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটে ফাবিনিয়োর চমৎকার বাঁকানো শট দূরের পোস্টে একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৫৮তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি বেইলি। তার দৃষ্টিকটু ব্যর্থতায় নষ্ট হয় দারুণ সুযোগ। পরের মিনিটে ব্যবধান কমায় অ্যাস্টন ভিলা। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার লুইসের চমৎকার ক্রসে দারুণ হেডে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন ওয়াটকিন্স। এরপর লিভারপুলের উপর চাপ আরও বাড়ায় অ্যাস্টন ভিলা। তার মাঝেই ৭৫তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে গোল প্রায় পেয়ে যাচ্ছিলেন নুনেস। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্স পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে, দূরের পোস্ট দিয়ে শট নেন তিনি। আবারও পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় তার শট। ৮১তম মিনিটে আরেকটি প্রতি-আক্রমণে ব্যবধান বাড়ায় লিভারপুল। নুনেসের শট কোনোমতে ঠেকান অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। ছুটে গিয়ে আলগা বল ধরে বাঁদিকে এগিয়ে গিয়ে জালে পাঠান বাইচেতিচ। এই গোলের পর যেন স্বস্তি ফেরে লিভারপুল শিবিরে আর হতোদ্যম হয়ে পড়ে অ্যাস্টন ভিলা। বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। ১৫ ম্যাচে সপ্তম জয়ে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে লিভারপুল। ১৪ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে আর্সেনাল। টানা দুই জয়ের পর হারের তেতো স্বাদ পাওয়া অ্যাস্টন ভিলা ১৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১২ নম্বরে।