রাজশাহী সংবাদদাতা : লিবিয়ায় গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছেন ওয়াসিম আলী নামে প্রবাসী যুবক। সেখানে নির্যাতনের পর তার কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওয়াসিম রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার সায়বাড় গ্রামের সাত্তার আলীর ছেলে। অপহৃত ছেলেকে ফিরে পেতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে (আরইউজে) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওয়াসিমের মা পেমালা বেগম বলেন, পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় আমার ছেলে এক বছর আগে তাদের গ্রামের মিলনের মাধ্যমে চার লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে লিবিয়ায় যায়। সেখানে হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ নেয়। তিন মাস সেখানে কাজ করার পরে লিবিয়া প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের ছেলে ইসমাইল সেখান থেকে তাকে ইতালিতে আরও ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। আর সেখানে যাওয়ার পর থেকে ছেলের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এর প্রায় ১৫ দিন পর ছেলে ফোন দিয়ে বলে, ‘মা আমাকে বাঁচাও, এরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে অপহরণের পর জিম্মি করে রেখেছে। ’ তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে প্রায় ছয় মাস থেকে অপহৃত। তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, আমাকে ভিডিওকলে দেখায় ছেলেকে মারধর করা হচ্ছে। ছেলে কান্না করে কিন্তু আমি কিছুই করতে পারি না। ওরা ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল আমি আট লাখ টাকা ইসমাইলের কাছে দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার ছেলেকে তারা ছাড়েনি। তারা আরও টাকা দাবি করছেন। সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসিমের মামা আব্দুল জলিল বলেন, ওই মাফিয়া চক্র আমার ভাগ্নেকে অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছেন ইসমাইল। কিন্তু আমরা মনে করছি এ ঘটনায় ইসমাইল নিজেই জড়িত আছে। আমরা দুবারে আট লাখ টাকা দিয়েছি অনেক কষ্ট করে। কিন্তু এরপরও তাকে ছাড়েনি। আমরা দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ করতে গেছি কয়েকবার। কিন্তু থানায় গেলে পুলিশ বলে বাইরের দেশে অপহরণ হয়েছে আমরা কী করবো। তারা অভিযোগ নেন না। আমরা ফিরে আসি। সংবাদ সম্মেলনে লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার ওয়াসিমকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তার পরিবার এবং ইসমাইল ও নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।