ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লালনকন্যার স্মরণানুষ্ঠানে ‘চুল কেটে’ প্রতীকী প্রতিবাদ সংস্কৃতিকর্মীদের

  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র পারে ফরিদা পারভীনের স্মরণ অনুষ্ঠানে চুল কেটে প্রতিকী প্রতিবাদ করেন সংস্কৃতিকর্মীরা- ছবি সংগৃহীত

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা: লালনগীতির কিংবদন্তি শিল্পী যিনি লালনকন্যা বা লালন সম্রাজ্ঞী নামে পরিচিত—সেই ফরিদা পারভীনকে স্মরণ করতে ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যান সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে শুরুতে আয়োজকের চুল কেটে প্রতীকী এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা।

ফরিদা পারভীন গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ের বড়ইতলায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পরম্পরা’ এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বড়ই গাছের নিচে সাদা কাপড় পেতে শিল্পীরা লালনগীতি পরিবেশন করেন।

তবে অতীতের অন্যান্য আয়োজনের মতো স্মরণানুষ্ঠানটি কেবল সংগীত পরিবেশনাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি বর্বরোচিত ঘটনার প্রতীকী প্রতিবাদে অনুষ্ঠানটি ভিন্ন মাত্রা লাভ করে।

ময়মনসিংহের তারাকান্দার কাশিগঞ্জ বাজার এলাকার হালিম উদ্দিন আকন্দকে কয়েকজন লোক ধরে জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি সম্প্রতি ভাইরাল হয়, তার প্রতিবাদস্বরূপ আয়োজক শামীম আশরাফের চুলও অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে কেটে দেওয়া হয়। সংস্কৃতি কর্মীদের মতে, এটি ছিল মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী ও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। একটি ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ।

অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা শামীম আশরাফ বলেন, লালন কন্যা ফরিদা পারভীনের মহাপ্রয়াণে দেশে কোনো বড় আয়োজন আমরা দেখিনি। তাকে স্মরণ করে আমরা একটি ছোট আয়োজনের চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি মাজার ভাঙা, সংস্কৃতিতে আঘাত এবং মানুষের ওপর অত্যাচারকারীদের প্রতি ঘৃণা জানাতে চেয়েছি।

অনুষ্ঠানে গবেষক স্বপন ধর বলেন, লালন মানব মানবতাবাদ ছড়িয়ে গেছেন। মানুষ যদি জন্ম না নিতো তাহলে পৃথিবীর সবটাই বিফলে যেতো। আগে মানুষ জন্ম নিয়েছে, তারপর নানা মতভেদ হয়েছে। যতবার যতো ধরনের সংকীর্ণ চিন্তাধারা এসেছে, সমস্তকে জোয়ারের জলের মতো ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মানবতাবাদ।

উপস্থিত সংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, লালনের বাণীকে ধারণ করে এবং ফরিদা পারভীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘পরম্পরা’ সংগঠনটি সংস্কৃতিতে আঘাত ও মানুষের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অবস্থান জানাতেই ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এ আয়োজন করে।

ওআ/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

লালনকন্যার স্মরণানুষ্ঠানে ‘চুল কেটে’ প্রতীকী প্রতিবাদ সংস্কৃতিকর্মীদের

আপডেট সময় : ০৮:২০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা: লালনগীতির কিংবদন্তি শিল্পী যিনি লালনকন্যা বা লালন সম্রাজ্ঞী নামে পরিচিত—সেই ফরিদা পারভীনকে স্মরণ করতে ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যান সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে শুরুতে আয়োজকের চুল কেটে প্রতীকী এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা।

ফরিদা পারভীন গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ের বড়ইতলায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পরম্পরা’ এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বড়ই গাছের নিচে সাদা কাপড় পেতে শিল্পীরা লালনগীতি পরিবেশন করেন।

তবে অতীতের অন্যান্য আয়োজনের মতো স্মরণানুষ্ঠানটি কেবল সংগীত পরিবেশনাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি বর্বরোচিত ঘটনার প্রতীকী প্রতিবাদে অনুষ্ঠানটি ভিন্ন মাত্রা লাভ করে।

ময়মনসিংহের তারাকান্দার কাশিগঞ্জ বাজার এলাকার হালিম উদ্দিন আকন্দকে কয়েকজন লোক ধরে জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি সম্প্রতি ভাইরাল হয়, তার প্রতিবাদস্বরূপ আয়োজক শামীম আশরাফের চুলও অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে কেটে দেওয়া হয়। সংস্কৃতি কর্মীদের মতে, এটি ছিল মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী ও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। একটি ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ।

অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা শামীম আশরাফ বলেন, লালন কন্যা ফরিদা পারভীনের মহাপ্রয়াণে দেশে কোনো বড় আয়োজন আমরা দেখিনি। তাকে স্মরণ করে আমরা একটি ছোট আয়োজনের চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি মাজার ভাঙা, সংস্কৃতিতে আঘাত এবং মানুষের ওপর অত্যাচারকারীদের প্রতি ঘৃণা জানাতে চেয়েছি।

অনুষ্ঠানে গবেষক স্বপন ধর বলেন, লালন মানব মানবতাবাদ ছড়িয়ে গেছেন। মানুষ যদি জন্ম না নিতো তাহলে পৃথিবীর সবটাই বিফলে যেতো। আগে মানুষ জন্ম নিয়েছে, তারপর নানা মতভেদ হয়েছে। যতবার যতো ধরনের সংকীর্ণ চিন্তাধারা এসেছে, সমস্তকে জোয়ারের জলের মতো ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মানবতাবাদ।

উপস্থিত সংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, লালনের বাণীকে ধারণ করে এবং ফরিদা পারভীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘পরম্পরা’ সংগঠনটি সংস্কৃতিতে আঘাত ও মানুষের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অবস্থান জানাতেই ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এ আয়োজন করে।

ওআ/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫