প্রত্যাশা ডেস্ক : পবিত্র হজের মূল পর্ব শুরু হয়েছে। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়াননিমাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাকা’ ধ্বনিতে গতকাল সোমবার সারাদিন মুখর ছিল আরাফাতের ময়দান।
সৌদি আরবে থাকা ১৫০টি দেশের নাগরিকসহ এবার হজ পালন করছেন ভাগ্যবান ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
আরাফাত ময়দানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজে মুসলিম জাতির উদ্দেশে নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। এছাড়া মুসলমানদের আদি পিতা হযরত আদম (আ.) এবং মা হাওয়ার স্মৃতি বিজড়িত মিলনস্থলও এই আরাফাত ময়দান।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন: আরাফাত ময়দানে অবস্থান মানে হজ। যে মুসলমান মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করে ফজরের নামাজের পূর্বে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছাবে তার হজ পূর্ণ হয়ে যাবে।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দ্বিতীয়বারের মতো দীর্ঘ ৯০ বছরের মধ্যে এবারও সৌদি আরবের বাইরে থেকে কোনো হজযাত্রীকে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। গত বছর ১০ হাজার হজযাত্রী দিয়ে হজ সম্পাদন হলেও এ বছর ৬০ হাজার হজযাত্রীকে লটারির মাধ্যমে হজ পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন সৌদি সরকার, সেজন্য নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধ, বিগ্রহ, বন্যা ও অন্যান্য কারণে ৪০ বারের মতো হজ বন্ধ ছিল। করোনার কারণে এবারও হজযাত্রীরা যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে তাওয়াফ, নামাজে অংশ নেওয়া ও সায়ির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করবে পবিত্র হজ।
ধবধবে সাদা দুই টুকরো কাপড় পরে ইহরাম অবস্থায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় সূর্যোদয়ের পরই হজযাত্রীরা মিনা থেকে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। হজের তিন ফরজের মধ্যে ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। হজযাত্রীরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পবিত্র এই স্থানে অবস্থান করবেন। কেউ পাহাড়ের কাছে, কেউ ইবাদত করবেন সুবিধাজনক জায়গায় বসে। আরাফাত ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন কাবা শরীফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বালিলাহ। বাংলা ভাষাসহ ১০টি ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করে প্রচার করা হবে। প্রথমবারের মতো খুতবা বাংলা অনুবাদ করবেন মক্কা ইসলামিক সেন্টারে কর্মরত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মাওলানা আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান। খুতবা শেষে হজযাত্রীরা জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকির-আসকারে ব্যস্ত থাকবেন তাঁরা।
এরপর হজযাত্রীদের গন্তব্য মুজদালিফার দিকে। মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে সেখানেই রাতযাপন করবেন তাঁরা। মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করে তারা আবারও মিনায় ফিরবেন। ১০ জিলহজ সেখানে পৌঁছানোর পর হজযাত্রীরা পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করবেন। প্রথমে মিনাকে ডানদিকে রেখে দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। এরপর দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। তৃতীয় পর্বে মাথা মুন্ডন করতে হবে। আর চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত করা। হজযাত্রীরা মক্কায় ফিরে কাবা শরীফ তাওয়াফ ও সায়ি (কাবার চারদিকে সাতবার ঘোরা ও সাফা মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানো) করে আবারও মিনায় ফিরে যাবেন। ১১ জিলহজ সেখানকার খিমায় (তাঁবু) রাতযাপন করবেন। দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে মোট ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে একইভাবে তিনটি শয়তানের ওপর নিক্ষেপ করবেন সাতটি করে মোট ২১টি পাথর। এ কাজ শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।
লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাতের ময়দান

Muslim pilgrims on the second day of the Hajj pilgrimage 2009....epa01946397 Muslim pilgrims gather on the Mountain of Mercy at Arafat, Saudi Arabia, on the second day of the Hajj pilgrimage 2009, 26 November 2009. The Hajj pilgrimage is one of the five pillars of Islam, it gathers over 2 million worshippers who complete various rituals. It started on 25 November. Seventy-seven people were killed in flash floods as the annual hajj pilgrimage began in the desert kingdom of Saudi Arabia, the Saudi government reported 26 November. The civil defence authority for the holy Muslim city of Mecca said that 25 Novembers 'torrential rains and thunderstorms' had turned streets into rivers of mud, destroyed homes and swept away cars. EPA/AHMAD TAHON
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ