ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

লকডাউন নয়, দরকার সচেতনতা

  • আপডেট সময় : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

শান্তনু চেšধুরী : বিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন, বাঙালির কাছ কোনো নতুন বিষয় এলে সেটিকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেই তবে শান্তি। একথা কেন বলেন কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা যেতে পারে, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক বা অন্য অনেক কিছু, বাঙালির হাতে পড়ে একপ্রকার লাঞ্ছিত হয়ে মর্যাদা হারিয়েছে বলা যায়। এ প্রসঙ্গে ঢাকার অদূরে গাজীপুরে গেল বছরের কোনো এক সময়ে গিয়ে নাজেহাল হয়েছিলাম এলাকার দোকানদারকে মাস্ক পরতে বলায়।
আমাদের মাস্ক পরাতে উনারা যারপরনাই বিস্মিত এবং করোনা বলে যে কিছু আছে সেটা বিশ্বাস করানোটাই যেন মুশকিল হয়ে পড়েছিল। তাহলে বুঝতেই পারেন মফস্বল বা আরো দূর দূর গ্রামগুলোর কী অবস্থা! তবে শহরে এসেও যে শব্দটি বেইজ্জতের শিকার হয়েছে সেটির নাম ‘লকডাউন’। অন্তত বাংলাদেশে এসে কেউ যদি দেখে লকডাউন এর এই অবস্থা তাহলে বিরমি খাওয়ার জোগাড় হবে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন চলছে। যদিও এর জন্য সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কাগজকে দায়ী করা যাবে না। সর্বত্মক লকডাউন বা আশিংক লকডাউন না বলে কৌশলে সেটিকে বলা হচ্ছে বিধিনিষেধ।
অবিলম্বে উচিত হবে জনগণের মাঝে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। যেমনটি আমরা অন্যান্য রোগ সম্পর্কে, টিকা সম্পর্কে আগে করেছি। ওই রোগগুলো নির্মূল হয়েছে। দেশকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। যে কথাগুলো আমরা সংবাদ মাধ্যম বা অন্য মাধ্যমে বলছি বিশেষ করে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া সেটি যাতে প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সবশেষ ২৩ মে যে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটি বহাল থাকবে ৩০ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, হোটেল ও খাবারের দোকানে আসনসংখ্যার অর্ধেক মানুষকে খাওয়ানো যাবে হোটেলে বসেই। আগে যেটা ছিল বসে না খেয়ে বাড়িতে নেয়া যেত। এর আগে বিধিনিষেধে একই জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলেছে। তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এ ছাড়া যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনও আগের মতো বন্ধ ছিল। এবার এসবও উন্মুক্ত। ঈদের আগে লকডাউনের মধ্যে দোকান ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা আছে ব্যাংকও।
এ ছাড়া জরুরি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অফিসগুলোও খোলা রয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা আবার বাড়ল। মূলত শুরুতে লকডাউন বলি বা বিধিনিষেধ বলি বেশ কার্যকর থাকে। পথে পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও বেশ কঠোর হন। এরে মারেতো ওরে ধরে। আস্তে আস্তে তারাও ধীর লয়ে চলতে থাকে। নানা গোষ্ঠির নানা চাহিদার কথা চিন্তা করে সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমাদের সবার ধারণা ছিল লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ। আমাদের দেশেও শুরুর কয়েকদিন সেটাই থাকে। কিন্তু পরে সবকিছু খুলে যায়।
তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে মনে করি না লকডাউন কোনো সমাধান। কারণ এখানে জনসংখ্যা বেশি আবার এই জনসংখ্যাকে বসিয়ে রেখে মৌলিক চাহিদার যোগান দেয়াও সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই লকডাউন দিলেই এখানকার মানুষকে মানানো বেশ বেগ পেতে হয়। আবার সরকার যেহেতু এসব নিয়ে সমালোচনাও পছন্দ করে না তাই লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো বেশি সমালোচনা শুরু করে এবং আমলারা লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি করে ফেলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লকডাউন বিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বান্দরবানে এক যুবককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। আর লকডাউন যদি কোথাও আছে বলে মনে হয় সেটি রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনা একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ঘুরছে। প্রকৃতপক্ষে একথা হয়তো বারবার অনেকে বলেছেন তারপরও বলি গেল বছরের মার্চ থেকে যে ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগুনোর কথা ছিল তেমনটি পদক্ষেপ নিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
এখনো যে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি সেটি আমাদের কোনো পদক্ষেপের কারণে নয়, আমাদের আবহাওয়া হয়তো আমাদের পক্ষে সহায় অথবা কোনো বিচিত্র কারণে এখনো বেঁচে আছি। এখন আমাদের যেটির প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার সেটি হলো সচেতনতা। লকডাউন বা বিধিনিষেধের কথা বলে মনে হয় না বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যাবে। যিনি মাস্ক পকেটে বা থুতুনির নিচে রেখে দোকানে যাওয়ার তিনি যাবেনই। তাহলে কী করতে হবে? দেড় বছর ধরে করোনার সঙ্গে আমাদের বসবাস। কিন্তু মনে হয় যতোটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছি। শহরের মানুষ কিছুটা সচেতন হলেও গ্রাম এলাকায় সচেতনতার বালাই নেই। হয়তো কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের হরিলুট হয়েছে কিন্তু মানুষকে বোঝানো যায়নি।
এর জন্য যে ধরনের প্রচার প্রচারণা দরকার সেটি হয়নি। যেমনটি এর মধ্যে হয়নি হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন, সরকারি হাসপাতালের যেসব আইসিইউ শয্যা অকেজো আছে, তা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থাও হয়নি। মানুষকে প্রয়োজনে ডোর টু ডোর গিয়ে বোঝাতে হবে। আর যদি তারা নাও বুঝে থাকে, কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেটিকেও বিবেচনায় নিতে হবে। তার কারণ এটি হতে পারে তারা প্রশাসনের ওপর আস্থা হারিয়েছে। যেটিই হোক না কেন, অবিলম্বে উচিত হবে জনগণের মাঝে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। যেমনটি আমরা অন্যান্য রোগ সম্পর্কে, টিকা সম্পর্কে আগে করেছি। ওই রোগগুলো নির্মূল হয়েছে। দেশকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। যে কথাগুলো আমরা সংবাদ মাধ্যম বা অন্য মাধ্যমে বলছি বিশেষ করে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া সেটি যাতে প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

লকডাউন নয়, দরকার সচেতনতা

আপডেট সময় : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

শান্তনু চেšধুরী : বিজ্ঞজনেরা বলে থাকেন, বাঙালির কাছ কোনো নতুন বিষয় এলে সেটিকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেই তবে শান্তি। একথা কেন বলেন কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা যেতে পারে, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক বা অন্য অনেক কিছু, বাঙালির হাতে পড়ে একপ্রকার লাঞ্ছিত হয়ে মর্যাদা হারিয়েছে বলা যায়। এ প্রসঙ্গে ঢাকার অদূরে গাজীপুরে গেল বছরের কোনো এক সময়ে গিয়ে নাজেহাল হয়েছিলাম এলাকার দোকানদারকে মাস্ক পরতে বলায়।
আমাদের মাস্ক পরাতে উনারা যারপরনাই বিস্মিত এবং করোনা বলে যে কিছু আছে সেটা বিশ্বাস করানোটাই যেন মুশকিল হয়ে পড়েছিল। তাহলে বুঝতেই পারেন মফস্বল বা আরো দূর দূর গ্রামগুলোর কী অবস্থা! তবে শহরে এসেও যে শব্দটি বেইজ্জতের শিকার হয়েছে সেটির নাম ‘লকডাউন’। অন্তত বাংলাদেশে এসে কেউ যদি দেখে লকডাউন এর এই অবস্থা তাহলে বিরমি খাওয়ার জোগাড় হবে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন চলছে। যদিও এর জন্য সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কাগজকে দায়ী করা যাবে না। সর্বত্মক লকডাউন বা আশিংক লকডাউন না বলে কৌশলে সেটিকে বলা হচ্ছে বিধিনিষেধ।
অবিলম্বে উচিত হবে জনগণের মাঝে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। যেমনটি আমরা অন্যান্য রোগ সম্পর্কে, টিকা সম্পর্কে আগে করেছি। ওই রোগগুলো নির্মূল হয়েছে। দেশকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। যে কথাগুলো আমরা সংবাদ মাধ্যম বা অন্য মাধ্যমে বলছি বিশেষ করে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া সেটি যাতে প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সবশেষ ২৩ মে যে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটি বহাল থাকবে ৩০ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, হোটেল ও খাবারের দোকানে আসনসংখ্যার অর্ধেক মানুষকে খাওয়ানো যাবে হোটেলে বসেই। আগে যেটা ছিল বসে না খেয়ে বাড়িতে নেয়া যেত। এর আগে বিধিনিষেধে একই জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলেছে। তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এ ছাড়া যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনও আগের মতো বন্ধ ছিল। এবার এসবও উন্মুক্ত। ঈদের আগে লকডাউনের মধ্যে দোকান ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা আছে ব্যাংকও।
এ ছাড়া জরুরি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অফিসগুলোও খোলা রয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা আবার বাড়ল। মূলত শুরুতে লকডাউন বলি বা বিধিনিষেধ বলি বেশ কার্যকর থাকে। পথে পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও বেশ কঠোর হন। এরে মারেতো ওরে ধরে। আস্তে আস্তে তারাও ধীর লয়ে চলতে থাকে। নানা গোষ্ঠির নানা চাহিদার কথা চিন্তা করে সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমাদের সবার ধারণা ছিল লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ। আমাদের দেশেও শুরুর কয়েকদিন সেটাই থাকে। কিন্তু পরে সবকিছু খুলে যায়।
তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে মনে করি না লকডাউন কোনো সমাধান। কারণ এখানে জনসংখ্যা বেশি আবার এই জনসংখ্যাকে বসিয়ে রেখে মৌলিক চাহিদার যোগান দেয়াও সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই লকডাউন দিলেই এখানকার মানুষকে মানানো বেশ বেগ পেতে হয়। আবার সরকার যেহেতু এসব নিয়ে সমালোচনাও পছন্দ করে না তাই লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো বেশি সমালোচনা শুরু করে এবং আমলারা লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি করে ফেলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লকডাউন বিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বান্দরবানে এক যুবককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। আর লকডাউন যদি কোথাও আছে বলে মনে হয় সেটি রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনা একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ঘুরছে। প্রকৃতপক্ষে একথা হয়তো বারবার অনেকে বলেছেন তারপরও বলি গেল বছরের মার্চ থেকে যে ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এগুনোর কথা ছিল তেমনটি পদক্ষেপ নিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
এখনো যে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি সেটি আমাদের কোনো পদক্ষেপের কারণে নয়, আমাদের আবহাওয়া হয়তো আমাদের পক্ষে সহায় অথবা কোনো বিচিত্র কারণে এখনো বেঁচে আছি। এখন আমাদের যেটির প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার সেটি হলো সচেতনতা। লকডাউন বা বিধিনিষেধের কথা বলে মনে হয় না বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যাবে। যিনি মাস্ক পকেটে বা থুতুনির নিচে রেখে দোকানে যাওয়ার তিনি যাবেনই। তাহলে কী করতে হবে? দেড় বছর ধরে করোনার সঙ্গে আমাদের বসবাস। কিন্তু মনে হয় যতোটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছি। শহরের মানুষ কিছুটা সচেতন হলেও গ্রাম এলাকায় সচেতনতার বালাই নেই। হয়তো কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের হরিলুট হয়েছে কিন্তু মানুষকে বোঝানো যায়নি।
এর জন্য যে ধরনের প্রচার প্রচারণা দরকার সেটি হয়নি। যেমনটি এর মধ্যে হয়নি হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন, সরকারি হাসপাতালের যেসব আইসিইউ শয্যা অকেজো আছে, তা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থাও হয়নি। মানুষকে প্রয়োজনে ডোর টু ডোর গিয়ে বোঝাতে হবে। আর যদি তারা নাও বুঝে থাকে, কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেটিকেও বিবেচনায় নিতে হবে। তার কারণ এটি হতে পারে তারা প্রশাসনের ওপর আস্থা হারিয়েছে। যেটিই হোক না কেন, অবিলম্বে উচিত হবে জনগণের মাঝে রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। যেমনটি আমরা অন্যান্য রোগ সম্পর্কে, টিকা সম্পর্কে আগে করেছি। ওই রোগগুলো নির্মূল হয়েছে। দেশকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। যে কথাগুলো আমরা সংবাদ মাধ্যম বা অন্য মাধ্যমে বলছি বিশেষ করে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া সেটি যাতে প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।