ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে সুপারিশ হাফিজ উদ্দিনের

র‌্যাব বিলুপ্তি চায় বিএনপি

  • আপডেট সময় : ০৬:২৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি জনবান্ধব-মানবিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে ‘পুলিশ কমিশন’ গঠন করারও আহ্বান রেখেছেন তিনি।
পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে জমা দেওয়া সুপারিশমালা তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন হাফিজ। এলিট ফোর্স র‌্যাব গঠন করা হয় বিএনপি-জামায়ত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে। বাহিনীর সংস্কার না করে কেন বিলুপ্তি চাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, র‌্যাব বাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দনীয় হয়েছে। আর দেশের মধ্যে তো র‌্যাব মানেই একটা দানব সৃষ্টি করেছে। তারা যত ধরনের খুন-গুম, যত এক্সট্টা জুডিশিয়াল কিলিং অধিকাংশই এই র‌্যাব বাহিনীর মাধ্যমে হয়েছে। সেজন্য আমরা এটিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছি। বিলুপ্ত হলে র‌্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান এবং থানা পুলিশ যেন দায়িত্ব পালন করতে পরে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন হাফিজ। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যদি র‌্যাবকে বিলুপ্ত করা হয়, তাহলে জনগণের কাছে একটা ভালো সিগন্যাল যাবে বলে আমরা মনে করছি।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে, নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রক্রিয়া বেশ ‘জটিল’।
বাংলাদেশ হয়েছিল পুলিশ স্টেট: হাফিজের কথায়, পুলিশকে বাদ দিয়ে কোনো রাষ্ট্র বা সমাজ কল্পনা করা কাম্য নয়। তাই এই বাহিনীকে ছেঁটে ফেলার কোনো সুযোগ নাই। পুলিশ বাহিনীকে সংশোধন করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। হাফিজ বলেন, বাংলাদেশকে পতিত সরকারের আমলে একটা পুলিশ স্টেটে পরিণত করা হয়েছিল। এই পুলিশ স্টেটের আওতা থেকে বের করে এই বাহিনী যাতে জনগণের প্রতি সংবেদনশীল হয়, জনগণকে মান্য করে, তাদের মগজে যেন এই ধারণাটি প্রথিত হয় যে, দেশের মালিক জনগণ এবং তারা জনগণের প্রভু নয় সেবক, সেটি সুপারিশ করেছি।
হাফিজ বলেছেন, তাদের সুপারিশমালায় আছে পুলিশ বাহিনীকে নিবিঢ়ভাবে নজরদারি করার জন্য একটি পুলিশ কমিশন থাকবে। যে কমিশন ‘ওয়াচ ডক’ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি করা যেতে পারে। সেখানে স্থানীয় জনগণ মিলে পুলিশের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য রাখবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে। গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কথাও বলছেন হাফিজ। হাফিজ বলেন, আশা করা যায়, এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে পুলিশ বিভাগের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নানাবিধ অসঙ্গতি ও অনিয়ম দূর হয়ে যাবে।
দলের সুপারিশ নিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতপূর্বক মানবাধিকারের প্রতি আরও সচেতন করা এবং দুর্নীতিমুক্ত দক্ষ করে এই বাহিনীকে গড়ে তোলার জন্য আমরা বিভিন্ন সুপারিশমালা তৈরি করেছি যা পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনকেও দিয়েছি। অন্তবর্তীকালীন সরকারের গঠিত পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেনের কাছে গত ৫ ডিসেম্বর সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দেয় বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব এসএম জহিরুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম, আশরাফুল হুদা, সাবেক উধর্তন কর্মকর্তা সাঈদ হাসান খান ও আনসার উদ্দিন খান পাঠান উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে সুপারিশ হাফিজ উদ্দিনের

র‌্যাব বিলুপ্তি চায় বিএনপি

আপডেট সময় : ০৬:২৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি জনবান্ধব-মানবিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে ‘পুলিশ কমিশন’ গঠন করারও আহ্বান রেখেছেন তিনি।
পুলিশ সংস্কার কমিটির কাছে জমা দেওয়া সুপারিশমালা তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন হাফিজ। এলিট ফোর্স র‌্যাব গঠন করা হয় বিএনপি-জামায়ত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে। বাহিনীর সংস্কার না করে কেন বিলুপ্তি চাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, র‌্যাব বাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দনীয় হয়েছে। আর দেশের মধ্যে তো র‌্যাব মানেই একটা দানব সৃষ্টি করেছে। তারা যত ধরনের খুন-গুম, যত এক্সট্টা জুডিশিয়াল কিলিং অধিকাংশই এই র‌্যাব বাহিনীর মাধ্যমে হয়েছে। সেজন্য আমরা এটিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছি। বিলুপ্ত হলে র‌্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান এবং থানা পুলিশ যেন দায়িত্ব পালন করতে পরে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন হাফিজ। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যদি র‌্যাবকে বিলুপ্ত করা হয়, তাহলে জনগণের কাছে একটা ভালো সিগন্যাল যাবে বলে আমরা মনে করছি।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে, নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রক্রিয়া বেশ ‘জটিল’।
বাংলাদেশ হয়েছিল পুলিশ স্টেট: হাফিজের কথায়, পুলিশকে বাদ দিয়ে কোনো রাষ্ট্র বা সমাজ কল্পনা করা কাম্য নয়। তাই এই বাহিনীকে ছেঁটে ফেলার কোনো সুযোগ নাই। পুলিশ বাহিনীকে সংশোধন করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। হাফিজ বলেন, বাংলাদেশকে পতিত সরকারের আমলে একটা পুলিশ স্টেটে পরিণত করা হয়েছিল। এই পুলিশ স্টেটের আওতা থেকে বের করে এই বাহিনী যাতে জনগণের প্রতি সংবেদনশীল হয়, জনগণকে মান্য করে, তাদের মগজে যেন এই ধারণাটি প্রথিত হয় যে, দেশের মালিক জনগণ এবং তারা জনগণের প্রভু নয় সেবক, সেটি সুপারিশ করেছি।
হাফিজ বলেছেন, তাদের সুপারিশমালায় আছে পুলিশ বাহিনীকে নিবিঢ়ভাবে নজরদারি করার জন্য একটি পুলিশ কমিশন থাকবে। যে কমিশন ‘ওয়াচ ডক’ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি করা যেতে পারে। সেখানে স্থানীয় জনগণ মিলে পুলিশের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য রাখবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে। গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কথাও বলছেন হাফিজ। হাফিজ বলেন, আশা করা যায়, এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে পুলিশ বিভাগের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নানাবিধ অসঙ্গতি ও অনিয়ম দূর হয়ে যাবে।
দলের সুপারিশ নিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতপূর্বক মানবাধিকারের প্রতি আরও সচেতন করা এবং দুর্নীতিমুক্ত দক্ষ করে এই বাহিনীকে গড়ে তোলার জন্য আমরা বিভিন্ন সুপারিশমালা তৈরি করেছি যা পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনকেও দিয়েছি। অন্তবর্তীকালীন সরকারের গঠিত পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেনের কাছে গত ৫ ডিসেম্বর সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দেয় বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব এসএম জহিরুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুম, আশরাফুল হুদা, সাবেক উধর্তন কর্মকর্তা সাঈদ হাসান খান ও আনসার উদ্দিন খান পাঠান উপস্থিত ছিলেন।