ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

র‌্যাবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছাড়ানোর নামে অর্থ আদায় চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার

  • আপডেট সময় : ১১:০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে জাল স্ট্যাম্পসহ গ্রেপ্তার এক ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে র‌্যাব পরিচয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারি ক্যাম্প কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রুবেল হোসেন (৪২), তার ছোট ভাই মানিক হোসেন (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৫), মিজানুর রহমান (৩৪), মো. নীরব (২১), আবু তৈয়ব সিদ্দিকী ওরফে মিঠু (৪৯)। র‌্যাবের দাবি, তারা ‘সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র’। কখনও সাংবাদিক, কখনও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন, গত ২৬ জুন নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্পসহ ইদ্রিস পাটোয়ারি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই অভিযানে র‌্যাবকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিল নজরুল, মিজানুর ও নীরব। “তারা তিনজন গ্রেপ্তার ইদ্রিসের বিষয়ে সবকিছু জানতেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের নম্বর ছিল। যার কারণে তারা র‌্যাবকে তথ্য দিয়েছিল জাল স্ট্যাম্পের বিষয়ে।”
মাহফুজুর জানান, র‌্যাবকে সহায়তার পর গ্রেপ্তার ইদ্রিসের পরিবারের কাছ থেকে তারা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা তিনজন রুবেলকে দিয়ে র‌্যাব পরিচয়ে ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন করে টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়ানোর কথা বলেন। তিনি বলেন, “অভিযানের দিন সন্ধ্যায় রুবেল নিজেকে র‌্যাব-৭ এর ক্যাম্প কমান্ডারের গাড়িচালক পরিচয়ে ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তার স্বামীর কাছে কোনো জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়নি। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, যার জন্য পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। “ইদ্রিসের স্ত্রী এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে এক পর্যায়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন তারা; যদিও পরে দুই পক্ষ ৭০ হাজার টাকায় সম্মত হয়।” র‌্যাব জানায়, রুবেলের দেওয়া পাঁচটি নম্বরে ইদ্রিসের স্ত্রী মোট ৭০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু পরদিন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ইদ্রিসের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে টালবাহানা শুরু করেন।
মাহফুজুর রহমান জানান, র‌্যাবের নামে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানতে পেরে তারা খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার বায়েজিদ এলাকায় রুবেলের অবস্থান নিশ্চিত করে পরদিন শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, “রুবেল ও মানিকের বিরুদ্ধে সাধারণ লোকজনকে মামলায় ফাঁসানো এবং ছাড়িয়ে নেওয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অনেক অভিযোগ আছে। আবার তারা বিভিন্ন সময়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও প্রতারণা করে থাকেন।” জাল স্ট্যাম্পসহ গ্রেপ্তার ইদ্রিস কারাগারে রয়েছেন। র‌্যাব পরিচয়ে তার পরিবারের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

র‌্যাবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছাড়ানোর নামে অর্থ আদায় চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ১১:০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে জাল স্ট্যাম্পসহ গ্রেপ্তার এক ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে র‌্যাব পরিচয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারি ক্যাম্প কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রুবেল হোসেন (৪২), তার ছোট ভাই মানিক হোসেন (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৫), মিজানুর রহমান (৩৪), মো. নীরব (২১), আবু তৈয়ব সিদ্দিকী ওরফে মিঠু (৪৯)। র‌্যাবের দাবি, তারা ‘সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র’। কখনও সাংবাদিক, কখনও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন, গত ২৬ জুন নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্পসহ ইদ্রিস পাটোয়ারি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই অভিযানে র‌্যাবকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিল নজরুল, মিজানুর ও নীরব। “তারা তিনজন গ্রেপ্তার ইদ্রিসের বিষয়ে সবকিছু জানতেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের নম্বর ছিল। যার কারণে তারা র‌্যাবকে তথ্য দিয়েছিল জাল স্ট্যাম্পের বিষয়ে।”
মাহফুজুর জানান, র‌্যাবকে সহায়তার পর গ্রেপ্তার ইদ্রিসের পরিবারের কাছ থেকে তারা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা তিনজন রুবেলকে দিয়ে র‌্যাব পরিচয়ে ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন করে টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়ানোর কথা বলেন। তিনি বলেন, “অভিযানের দিন সন্ধ্যায় রুবেল নিজেকে র‌্যাব-৭ এর ক্যাম্প কমান্ডারের গাড়িচালক পরিচয়ে ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তার স্বামীর কাছে কোনো জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়নি। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, যার জন্য পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। “ইদ্রিসের স্ত্রী এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে এক পর্যায়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন তারা; যদিও পরে দুই পক্ষ ৭০ হাজার টাকায় সম্মত হয়।” র‌্যাব জানায়, রুবেলের দেওয়া পাঁচটি নম্বরে ইদ্রিসের স্ত্রী মোট ৭০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু পরদিন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ইদ্রিসের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে টালবাহানা শুরু করেন।
মাহফুজুর রহমান জানান, র‌্যাবের নামে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানতে পেরে তারা খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার বায়েজিদ এলাকায় রুবেলের অবস্থান নিশ্চিত করে পরদিন শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, “রুবেল ও মানিকের বিরুদ্ধে সাধারণ লোকজনকে মামলায় ফাঁসানো এবং ছাড়িয়ে নেওয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অনেক অভিযোগ আছে। আবার তারা বিভিন্ন সময়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও প্রতারণা করে থাকেন।” জাল স্ট্যাম্পসহ গ্রেপ্তার ইদ্রিস কারাগারে রয়েছেন। র‌্যাব পরিচয়ে তার পরিবারের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।