ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত বড় ভূমিকা রাখতে পারে :প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখন বাংলাদেশের জন্য ‘বড় বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশকে এই সমস্যা থেকে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চারদিনের ভারত সফরের আগে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, আমাদের জন্য এটা এখন একটা বড় বোঝা। ভারত একটি বিশাল দেশ। আপনারা আশ্রয় দিতে পারেন। যদিও ভারতে খুব বেশি রোহিঙ্গা নেই। কিন্তু আমাদের দেশে বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আছে। সে কারণে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। রোহিঙ্গারা যেন নিজ দেশে ফিরতে পারেন সে বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার মানবিকতার দিকটি মাথায় রেখেই বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়কে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবিকতার খাতিরে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব ধরনের সহায়তা দিয়েছি। এমনকি কোভিড মহামারির সময়ে আমরা এখানকার সব রোহিঙ্গাকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। কিন্তু আমরা তাদের আর কতদিন আশ্রয় দেবো? তারা আর কতদিন এখানে থাকবে? তারা বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছে। সেখানকার পরিবেশ অনিরাপদ হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক পাচার, নারী পাচার এবং সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন এসব আরও বাড়ছে। তারা যত দ্রুত নিজেদের দেশে ফিরে যাবে তা মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ দু’দেশের জন্যই ভালো হবে। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা মিয়ানমার এবং আসিয়ান বা ইউএনও’র মতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করছি। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফর যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ৫-৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন এই ভারত সফরকে সামনে রেখে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে এএনআই।
ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আমাদের ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় তাদের অবদানের কথা সবসময় স্মরণ করি। এমনকি ১৯৭৫ সালে যখন আমার পরিবারের সব সদস্যকে হারালাম, তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী (ইন্দিরা গান্ধী) আমাদেরকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাছাড়া আমরা ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেই।’
তিস্তার পানি বণ্টন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এটি এখনও ঝুলে আছে। ভারত থেকে আমাদের এখানে পানি আসে, তাই তাদের আরও উদারতা দেখাতে হবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। পানির অভাবে কখনও কখনও আমাদের জনগণও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি। আরও নানা সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে এই বিষয়টির একটি সমাধান হওয়া উচিত। আমরা দেখেছি, এই সংকটের সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ রয়েছে। তবে সমস্যাটি আপনাদের দেশেই। আশা করি এর সমাধান হবে এবং সেটি হওয়া উচিত।
ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কে ভারসাম্য রাখা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত পরিষ্কার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে জোরালোভাবে এটা বলেছিলেন। আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করি। আমাদের উচিৎ জনগণকে নিয়ে কাজ করা। তাদেরকে কীভাবে আরও ভালো একটি জীবন উপহার দেওয়া যায়, তাদের জীবনমান কীভাবে আরও ভালো করা যায়।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীকে (নরেন্দ্র মোদি) ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আটকে পড়েছিল। তারা আশ্রয়ের জন্য পোল্যান্ডে গিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার সময় আপনি তাদেরও নিয়ে এসেছিলেন। শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরেছে। আপনি স্পষ্টতই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছেন। এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়বে না বাংলাদেশ : বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে পারে এমন আশঙ্কার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোভিড মহামারি পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানেই রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করা হয় এবং চিন্তা-ভাবনা করা হয়। এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই বর্তমানে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আমাদের অর্থনীতি এখনও বেশ শক্তিশালী। আমরা করোনা মহামারির সময় আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম, এখন আবার রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। এসব কিছুরই প্রভাব পড়বে। কিন্তু ঋণের দিক থেকে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট সময়েই ঋণ মিটিয়ে দেয়। আমাদের ঋণের হারও খুব কম। আমাদের অর্থনীতির গতিপথ ও উন্নয়ন খুব বেশি হিসেব করেই করা হয়। সে কারণে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়বে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত বড় ভূমিকা রাখতে পারে :প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখন বাংলাদেশের জন্য ‘বড় বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশকে এই সমস্যা থেকে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চারদিনের ভারত সফরের আগে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, আমাদের জন্য এটা এখন একটা বড় বোঝা। ভারত একটি বিশাল দেশ। আপনারা আশ্রয় দিতে পারেন। যদিও ভারতে খুব বেশি রোহিঙ্গা নেই। কিন্তু আমাদের দেশে বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আছে। সে কারণে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। রোহিঙ্গারা যেন নিজ দেশে ফিরতে পারেন সে বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার মানবিকতার দিকটি মাথায় রেখেই বাস্তুচ্যুত এই সম্প্রদায়কে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবিকতার খাতিরে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব ধরনের সহায়তা দিয়েছি। এমনকি কোভিড মহামারির সময়ে আমরা এখানকার সব রোহিঙ্গাকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। কিন্তু আমরা তাদের আর কতদিন আশ্রয় দেবো? তারা আর কতদিন এখানে থাকবে? তারা বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছে। সেখানকার পরিবেশ অনিরাপদ হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক পাচার, নারী পাচার এবং সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন এসব আরও বাড়ছে। তারা যত দ্রুত নিজেদের দেশে ফিরে যাবে তা মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ দু’দেশের জন্যই ভালো হবে। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা মিয়ানমার এবং আসিয়ান বা ইউএনও’র মতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করছি। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফর যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ৫-৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন এই ভারত সফরকে সামনে রেখে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে এএনআই।
ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আমাদের ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় তাদের অবদানের কথা সবসময় স্মরণ করি। এমনকি ১৯৭৫ সালে যখন আমার পরিবারের সব সদস্যকে হারালাম, তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী (ইন্দিরা গান্ধী) আমাদেরকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাছাড়া আমরা ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেই।’
তিস্তার পানি বণ্টন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এটি এখনও ঝুলে আছে। ভারত থেকে আমাদের এখানে পানি আসে, তাই তাদের আরও উদারতা দেখাতে হবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। পানির অভাবে কখনও কখনও আমাদের জনগণও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি। আরও নানা সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে এই বিষয়টির একটি সমাধান হওয়া উচিত। আমরা দেখেছি, এই সংকটের সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ রয়েছে। তবে সমস্যাটি আপনাদের দেশেই। আশা করি এর সমাধান হবে এবং সেটি হওয়া উচিত।
ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কে ভারসাম্য রাখা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত পরিষ্কার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে জোরালোভাবে এটা বলেছিলেন। আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করি। আমাদের উচিৎ জনগণকে নিয়ে কাজ করা। তাদেরকে কীভাবে আরও ভালো একটি জীবন উপহার দেওয়া যায়, তাদের জীবনমান কীভাবে আরও ভালো করা যায়।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীকে (নরেন্দ্র মোদি) ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আটকে পড়েছিল। তারা আশ্রয়ের জন্য পোল্যান্ডে গিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার সময় আপনি তাদেরও নিয়ে এসেছিলেন। শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরেছে। আপনি স্পষ্টতই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছেন। এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়বে না বাংলাদেশ : বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে পারে এমন আশঙ্কার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোভিড মহামারি পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানেই রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করা হয় এবং চিন্তা-ভাবনা করা হয়। এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই বর্তমানে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আমাদের অর্থনীতি এখনও বেশ শক্তিশালী। আমরা করোনা মহামারির সময় আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম, এখন আবার রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। এসব কিছুরই প্রভাব পড়বে। কিন্তু ঋণের দিক থেকে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট সময়েই ঋণ মিটিয়ে দেয়। আমাদের ঋণের হারও খুব কম। আমাদের অর্থনীতির গতিপথ ও উন্নয়ন খুব বেশি হিসেব করেই করা হয়। সে কারণে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়বে না।