ঢাকা ০৫:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বিশ্বব্যাংক যেন ‘ধানাইপানাই’ না করে: সংসদীয় কমিটি

  • আপডেট সময় : ০১:০৬:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশে অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিশ্বব্যাংকের একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেছে সংসদীয় কমিটি। এই প্রস্তাবনাকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবারের সুযোগ দেওয়ার অভিপ্রায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কমিটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়ি তৈরি বা শিক্ষার সুযোগের নামে বিশ্বব্যাংক যেন ধানাইপানাই না করতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কমিটিকে বলেছি, বিশ্বব্যাংক এ ধরনের ধানাইপানাই করে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায়। রোহিঙ্গাদের সেলেটমেন্টের জন্য এটা-সেটা প্রস্তাবনা মানা যাবে না। আমরা স্পষ্টতই এর বিরোধিতা করেছি। আমরা খুব কঠোরভাবে বলেছি, বিশ্বব্যাংকের ঘাপলার চক্করে যেন আমরা না পড়ি।’
তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি, আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হবে— আমরা তাদের সাময়িক জায়গা দিয়েছি। আপনারা তাদের মিয়ানমারে ফেরতের যাবতীয় ব্যবস্থা করুন। আমাদের এখানে থাকার জন্য তাদেরকে ভবন তৈরি করে দেবেন, তাদের চাকরির সুযোগ করে দেবেন, জমি কেনার সুযোগ দেবেন— এসব ধানাইপানাই নয়। তাদের পড়াশুনার কথা বলছে। সেটা আমাদের এখানকার রোহিঙ্গাদের কেন? মিয়ানমারেই তো এখন ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে, তাদেরকে আগে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করুন। সেখানে দুই বছর এটা চালু করলে দেখা যাবে, এটার পরিণতি।’
তিনি জানান, সংসদীয় কমিটির অবস্থান হচ্ছে— রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে কোনও ধরনের আলোচনায় মন্ত্রণালয় যেন বলে— তারা শরণার্থী নয়, বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী। কাজেই আলোচনার প্রথম এজেন্ডা হবে তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যাবে।’
মিয়ানমারে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন— নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি নাকি বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। তবে, কবে নাগাদ হতে পারে তার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ব ব্যাংককে বলেছে, তারা আমাদেরকে এসব টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে কেন? এখানে তাদের জমি কেনার কথা বলা হচ্ছে কেন? এই প্রস্তাবগুলো আপনারা মিয়ানমারকে দেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমাদের এখানে ৯/১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে তিনশ’ জনেরও কম আছেন— যারা গ্র্যাজুয়েট। তাদের তো সেই দেশেই পড়াশুনা করার অধিকার নেই। বিশ্বব্যাংক চাইলে মিয়ানমারকে টাকা দিক সেদেশের রোহিঙ্গাদের পড়াতে।’
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা ভাসান চর পরিদর্শনে গিয়ে খুশি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ এ রকম করার কথা বলেছে। কিন্তু আমরা সেটা কেন করবো। এখানকার জায়গা সংকটের কারণেই আমরা ভাসান চরে তাদের নিচ্ছি। তাছাড়া এটা আমাদের বনের জমি। তাদের কারণে আমাদের বন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশে অন্তর্ভুক্ত করাসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবসহ ’রিফিউজি পলিসি রিফর্ম ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে ১৬টি দেশের শরণার্থী ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয় থেকে ফ্রেমওয়ার্কের বিষয়ে মতামত চেয়ে জুনের ৩০ তারিখ অর্থমন্ত্রীর বরাবর পাঠানো হয়।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক আব্দুল মোমেন জানান, সরকার ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে। প্রতিবেদনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, কাজ করা, চলাফেরা, জমি কেনা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত হওয়াসহ সব ধরনের আইনি অধিকার শরণার্থীদের দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া আসিয়ান থেকে ব্রুনাইয়ের একজন কূটনীতিককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা চেয়েছেন বলে কমিটির সভাপতি জানান।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ছোট টিম জাতিসংঘ সম্মেলনে যাবেন বলে তিনি জানান। তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আসবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জীবনমান সীমিত পর্যায়ে রাখার সিদ্ধান্ত
এদিকে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়ন এদেশে তাদের স্থায়ী বসবাসে উৎসাহিত করবে বলে বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্যাম্পগুলোকে জীবনমান ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নানাবিধ বহুবার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে বেশি তৎপর হয়ে উঠছে। এ ধরনের কর্মকা- বিশেষত ক্যাম্পের জীবনমানের ক্রমাগত উন্নয়ন বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাসে উৎসাহিত করতে পারে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাবাসনের স্বার্থে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জীবনমান ও সুযোগ-সুবিধাগুলো যৌক্তিক ও সীমিত পর্যায়ে রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব করা হলে প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন দিয়েছেন।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান এবং হাবিবে মিল্লাত অংশ নেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বিশ্বব্যাংক যেন ‘ধানাইপানাই’ না করে: সংসদীয় কমিটি

আপডেট সময় : ০১:০৬:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশে অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিশ্বব্যাংকের একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেছে সংসদীয় কমিটি। এই প্রস্তাবনাকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবারের সুযোগ দেওয়ার অভিপ্রায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কমিটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়ি তৈরি বা শিক্ষার সুযোগের নামে বিশ্বব্যাংক যেন ধানাইপানাই না করতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কমিটিকে বলেছি, বিশ্বব্যাংক এ ধরনের ধানাইপানাই করে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায়। রোহিঙ্গাদের সেলেটমেন্টের জন্য এটা-সেটা প্রস্তাবনা মানা যাবে না। আমরা স্পষ্টতই এর বিরোধিতা করেছি। আমরা খুব কঠোরভাবে বলেছি, বিশ্বব্যাংকের ঘাপলার চক্করে যেন আমরা না পড়ি।’
তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি, আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হবে— আমরা তাদের সাময়িক জায়গা দিয়েছি। আপনারা তাদের মিয়ানমারে ফেরতের যাবতীয় ব্যবস্থা করুন। আমাদের এখানে থাকার জন্য তাদেরকে ভবন তৈরি করে দেবেন, তাদের চাকরির সুযোগ করে দেবেন, জমি কেনার সুযোগ দেবেন— এসব ধানাইপানাই নয়। তাদের পড়াশুনার কথা বলছে। সেটা আমাদের এখানকার রোহিঙ্গাদের কেন? মিয়ানমারেই তো এখন ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে, তাদেরকে আগে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করুন। সেখানে দুই বছর এটা চালু করলে দেখা যাবে, এটার পরিণতি।’
তিনি জানান, সংসদীয় কমিটির অবস্থান হচ্ছে— রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে কোনও ধরনের আলোচনায় মন্ত্রণালয় যেন বলে— তারা শরণার্থী নয়, বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী। কাজেই আলোচনার প্রথম এজেন্ডা হবে তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যাবে।’
মিয়ানমারে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন— নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি নাকি বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তারা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। তবে, কবে নাগাদ হতে পারে তার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ব ব্যাংককে বলেছে, তারা আমাদেরকে এসব টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে কেন? এখানে তাদের জমি কেনার কথা বলা হচ্ছে কেন? এই প্রস্তাবগুলো আপনারা মিয়ানমারকে দেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমাদের এখানে ৯/১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে তিনশ’ জনেরও কম আছেন— যারা গ্র্যাজুয়েট। তাদের তো সেই দেশেই পড়াশুনা করার অধিকার নেই। বিশ্বব্যাংক চাইলে মিয়ানমারকে টাকা দিক সেদেশের রোহিঙ্গাদের পড়াতে।’
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা ভাসান চর পরিদর্শনে গিয়ে খুশি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ এ রকম করার কথা বলেছে। কিন্তু আমরা সেটা কেন করবো। এখানকার জায়গা সংকটের কারণেই আমরা ভাসান চরে তাদের নিচ্ছি। তাছাড়া এটা আমাদের বনের জমি। তাদের কারণে আমাদের বন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশে অন্তর্ভুক্ত করাসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবসহ ’রিফিউজি পলিসি রিফর্ম ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে ১৬টি দেশের শরণার্থী ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয় থেকে ফ্রেমওয়ার্কের বিষয়ে মতামত চেয়ে জুনের ৩০ তারিখ অর্থমন্ত্রীর বরাবর পাঠানো হয়।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক আব্দুল মোমেন জানান, সরকার ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে। প্রতিবেদনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, কাজ করা, চলাফেরা, জমি কেনা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত হওয়াসহ সব ধরনের আইনি অধিকার শরণার্থীদের দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া আসিয়ান থেকে ব্রুনাইয়ের একজন কূটনীতিককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা চেয়েছেন বলে কমিটির সভাপতি জানান।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ছোট টিম জাতিসংঘ সম্মেলনে যাবেন বলে তিনি জানান। তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আসবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জীবনমান সীমিত পর্যায়ে রাখার সিদ্ধান্ত
এদিকে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়ন এদেশে তাদের স্থায়ী বসবাসে উৎসাহিত করবে বলে বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্যাম্পগুলোকে জীবনমান ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নানাবিধ বহুবার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে বেশি তৎপর হয়ে উঠছে। এ ধরনের কর্মকা- বিশেষত ক্যাম্পের জীবনমানের ক্রমাগত উন্নয়ন বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাসে উৎসাহিত করতে পারে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাবাসনের স্বার্থে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জীবনমান ও সুযোগ-সুবিধাগুলো যৌক্তিক ও সীমিত পর্যায়ে রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব করা হলে প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন দিয়েছেন।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান এবং হাবিবে মিল্লাত অংশ নেন।