ঢাকা ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্প যেন সন্ত্রাসীদের ‘সূতিকাগার’ না হয়, সতর্ক সরকার

  • আপডেট সময় : ০২:০০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৬২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো যেন সন্ত্রাসীদের ‘সূতিকাগারে’ পরিণত না হয়, সে বিষয়টি সরকার নজরদারিতে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন শৃঙ্খলা’ সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ষষ্ঠ সভায় কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের “তিনি বলেন, এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্প) সব কিছু সরকারের নজরদারিতে আছে। এই জায়গাটি যাতে টেরোরিস্টদের সূতিকাগার না হতে পারে সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। “রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতর যাতে রক্তপাতের ঘটনা না ঘটে, সে কারণে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।“
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার, টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের তৎকালীন সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও করে। এরপর ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
মন্ত্রী বলেন, “আমরা সবসময় বলে আসেছি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা আমি, সেখানেই যাই সেখানেই বলছি, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা, যারা জোরপূর্বক ডিসপ্লেসড হয়েছে। নিজের দেশে (মিয়ানমার) তারা এত নির্যাতিত হয়েছে যে, যে কোনো চ্যালেঞ্জ তারা ‘একসেপ্ট’ করতে পারে, যে কোন ‘অফার’ তারা ‘একসেপ্ট’ করতে পারে।
“তারা ইন্টারন্যাশনাল ‘টেররিস্টদের’ খপ্পরেও পড়তে পারে, এটা আমরা বহু আগের থেকে বলে আসছি।” এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে উদাহরণ নেই, কারণ এখনও আমাদের নজরদারির বাইরে যায়নি ।”
আসাদুজ্জামান খানের ভাষ্য, “যদি মিয়ানমার তাদের জনগোষ্ঠীকে নিজের দেশে ফেরত না নেয়, তাহলে তাদের নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।“
তিনি জানান, ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করে। তাদেরকে বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং এই কাজটি এগিয়ে নিতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে বলেও সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান চলছে সেখানে। ক্যাম্পগুলোতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তাদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে আসছে সরকার “
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশকে জন্মনিয়ন্ত্রণের আওতায় আানা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সেখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণ বিষয়েও কথাবার্তা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ‘নিরাপত্তা’ নিয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নাই। তার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশ্নই ওঠে না।“

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গা ক্যাম্প যেন সন্ত্রাসীদের ‘সূতিকাগার’ না হয়, সতর্ক সরকার

আপডেট সময় : ০২:০০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো যেন সন্ত্রাসীদের ‘সূতিকাগারে’ পরিণত না হয়, সে বিষয়টি সরকার নজরদারিতে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন শৃঙ্খলা’ সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ষষ্ঠ সভায় কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের “তিনি বলেন, এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্প) সব কিছু সরকারের নজরদারিতে আছে। এই জায়গাটি যাতে টেরোরিস্টদের সূতিকাগার না হতে পারে সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। “রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতর যাতে রক্তপাতের ঘটনা না ঘটে, সে কারণে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।“
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার, টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের তৎকালীন সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও করে। এরপর ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
মন্ত্রী বলেন, “আমরা সবসময় বলে আসেছি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা আমি, সেখানেই যাই সেখানেই বলছি, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা, যারা জোরপূর্বক ডিসপ্লেসড হয়েছে। নিজের দেশে (মিয়ানমার) তারা এত নির্যাতিত হয়েছে যে, যে কোনো চ্যালেঞ্জ তারা ‘একসেপ্ট’ করতে পারে, যে কোন ‘অফার’ তারা ‘একসেপ্ট’ করতে পারে।
“তারা ইন্টারন্যাশনাল ‘টেররিস্টদের’ খপ্পরেও পড়তে পারে, এটা আমরা বহু আগের থেকে বলে আসছি।” এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে উদাহরণ নেই, কারণ এখনও আমাদের নজরদারির বাইরে যায়নি ।”
আসাদুজ্জামান খানের ভাষ্য, “যদি মিয়ানমার তাদের জনগোষ্ঠীকে নিজের দেশে ফেরত না নেয়, তাহলে তাদের নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।“
তিনি জানান, ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করে। তাদেরকে বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং এই কাজটি এগিয়ে নিতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে বলেও সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান চলছে সেখানে। ক্যাম্পগুলোতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তাদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে আসছে সরকার “
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশকে জন্মনিয়ন্ত্রণের আওতায় আানা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সেখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণ বিষয়েও কথাবার্তা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ‘নিরাপত্তা’ নিয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নাই। তার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশ্নই ওঠে না।“