ঢাকা ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

রোহিঙ্গাদের মোবাইল সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি

  • আপডেট সময় : ০২:২২:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গাদের সহজ শর্তে মোবাইল সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী মন্তব্য করে তাদের সিম না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি। সিমের অপব্যবহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অপরাধ আরও বেপরোয়া হয়ে যাবে। যা স্থানীয় বাসিন্দাসহ গোটা বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হবে বলেও মনে করছেন তারা।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, কোনোভাবে রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে পাঁচটি করে সিম দেওয়া যাবে না। আমরা দেখেছি মহিবুল্লাহ এ অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কীভাবে লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমাবেশ করেছিল। রোহিঙ্গারা অবৈধ নেটওয়ার্ক সিম ব্যবহার করে মাদক পাচার, অর্থপাচার, চোরা চালান এবং অসামাজিক কার্যে লিপ্ত হয়। তিনি বলেন, তার মানে আমরা অমানবিক এ কথা বলা যাবে না। তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার্থে সাবেক ডাক ও টেলিযোগ মন্ত্রী যেভাবে টেলিফোন বুথ তৈরি করে সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, সেটি কেন বন্ধ হলো। সব সিম উদ্ধার করে সঠিক মালিকদের কাছে সে সিম বুঝিয়ে দিতে হবে। সে সঙ্গে টেলিফোন বুথের মাধ্যমে তাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের অবৈধ কারবারের ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী যে সব মামলা-হামলার শিকার হয়েছে তার যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উখিয়ার পালংখািল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা কক্সবাজারের নাগরিকরা আজ মহাবিপদে। তাদের প্রতি যে মানবতা দেখানো হয়েছিল তা যে আমাদের জন্য এত বড় কাল হয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারিনি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে। খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, শিশু পাচার, ডাকাতি, অপহরণসহ সব ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গারা।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পাঁচ বছর ধরে শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের পাশাপাশি এখান থেকে সে দেশের এমটিএমসির টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আসছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মাঝে মধ্যে বিটিআরসির কিছু কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে পাঠানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সরকার দেশে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। তখন সে নীতিমালায় বলা হয় ১৮ বছরের ওপরে বাংলাদেশের বৈধ নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট দিয়ে বায়োামেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। অথচ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা আমাদের দেশের নাগরিকদের নামে ব্যবহৃত সিম অবৈধভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি মিয়ানমারের টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন, এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমার মতামত হচ্ছে সবার আগে অবৈধ নেটওয়ার্ক বন্ধ ও সব অবৈধ সিম জব্দ করা। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে বসে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রেক্ষিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন সাবেক ডিআইজি ও এসপি মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আজম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম সবুজ, এম মোস্তাক আহমেদ, কক্সবাজার লবণ চাষী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শাহাবু্িদ্দন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক এম এইচ আরমান চৌধুরী, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক ছিদ্দিক আহমদ আতিক প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গাদের মোবাইল সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি

আপডেট সময় : ০২:২২:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গাদের সহজ শর্তে মোবাইল সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী মন্তব্য করে তাদের সিম না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি। সিমের অপব্যবহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অপরাধ আরও বেপরোয়া হয়ে যাবে। যা স্থানীয় বাসিন্দাসহ গোটা বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হবে বলেও মনে করছেন তারা।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, কোনোভাবে রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে পাঁচটি করে সিম দেওয়া যাবে না। আমরা দেখেছি মহিবুল্লাহ এ অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কীভাবে লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমাবেশ করেছিল। রোহিঙ্গারা অবৈধ নেটওয়ার্ক সিম ব্যবহার করে মাদক পাচার, অর্থপাচার, চোরা চালান এবং অসামাজিক কার্যে লিপ্ত হয়। তিনি বলেন, তার মানে আমরা অমানবিক এ কথা বলা যাবে না। তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার্থে সাবেক ডাক ও টেলিযোগ মন্ত্রী যেভাবে টেলিফোন বুথ তৈরি করে সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, সেটি কেন বন্ধ হলো। সব সিম উদ্ধার করে সঠিক মালিকদের কাছে সে সিম বুঝিয়ে দিতে হবে। সে সঙ্গে টেলিফোন বুথের মাধ্যমে তাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের অবৈধ কারবারের ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী যে সব মামলা-হামলার শিকার হয়েছে তার যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উখিয়ার পালংখািল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা কক্সবাজারের নাগরিকরা আজ মহাবিপদে। তাদের প্রতি যে মানবতা দেখানো হয়েছিল তা যে আমাদের জন্য এত বড় কাল হয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারিনি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে। খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, শিশু পাচার, ডাকাতি, অপহরণসহ সব ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গারা।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পাঁচ বছর ধরে শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের পাশাপাশি এখান থেকে সে দেশের এমটিএমসির টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আসছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মাঝে মধ্যে বিটিআরসির কিছু কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে পাঠানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সরকার দেশে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। তখন সে নীতিমালায় বলা হয় ১৮ বছরের ওপরে বাংলাদেশের বৈধ নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট দিয়ে বায়োামেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। অথচ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা আমাদের দেশের নাগরিকদের নামে ব্যবহৃত সিম অবৈধভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি মিয়ানমারের টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন, এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমার মতামত হচ্ছে সবার আগে অবৈধ নেটওয়ার্ক বন্ধ ও সব অবৈধ সিম জব্দ করা। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে বসে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রেক্ষিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন সাবেক ডিআইজি ও এসপি মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আজম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম সবুজ, এম মোস্তাক আহমেদ, কক্সবাজার লবণ চাষী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শাহাবু্িদ্দন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক এম এইচ আরমান চৌধুরী, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক ছিদ্দিক আহমদ আতিক প্রমুখ।