কক্সবাজার সংবাদদাতা : কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের দেখতে গেছেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর–এর দুই সহকারী হাইকমিশনার। এ সময় রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
রোহিঙ্গারা বলছেন, সেখানে থাকতে চান না, কষ্টে আছেন। কক্সবাজারের ক্যাম্পে ফিরতে চান। এসব দাবি জানিয়ে প্রতিনিধি দলের সামনে নানা স্লোগান দেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
গতকাল সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো ভাসানচরে যান ইউএনএইচসিআর–এর কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজাও এবং সুরক্ষা বিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার গিলিয়ান ট্রিগস।
রোহিঙ্গারা ভাসানচরে কেমন আছেন, তা দেখার জন্য যান ওই দুই কর্মকর্তা। জানা ও বোঝার চেষ্টা করবেন নোয়াখালীর চরটিতে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া প্রকল্পটি কেমন। কিন্তু তাদের বিক্ষোভে ক্যাম্পগুলো ঘুরে দেখতে পারেননি দুই হাইকমিশনার।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি দল ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেখতে যান। এ সময় রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালান।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খোরশেদ আলম খান বলেন, প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। সেখানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে কি না এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তারা বিক্ষোভ করেছেন।
ভাসানচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি গুচ্ছগ্রামের ‘ফোকাল’ (সমন্বয়ক) এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় রোহিঙ্গারা ইটপাটকেল ছুড়ে একটি সরকারি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ডিসেম্বরে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হওয়ার পর এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা পৌঁছান। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, রোহিঙ্গারা সেখানে স্বেচ্ছায় গেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। আগের ও তখনকার মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বসবাস করছেন। ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ