ঢাকা ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারাল ভারত

  • আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : বরাবরের মতোই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। মাঠের লড়াইও হলো জমজমাট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং প্রদর্শনীর দেখা যদিও মিলল না। কম পুঁজি নিয়ে পাকিস্তান লড়াই করল দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না তারা। রবীন্দ্র জাদেজার কার্যকর ইনিংস ও হার্দিক পান্ডিয়ার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিতল ভারত। এশিয়া কাপে দুই দলের প্রথম ম্যাচে রোববার ভারতের জয় ৫ উইকেটে। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ১৪৮ রানের লক্ষ্য রোহিত শর্মার দল ছুঁয়ে ফেলে ২ বাকি থাকতে। বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উইকেট নেওয়ার পর ১৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভারতের জয়ের নায়ক পান্ডিয়া। শেষ ৩ বলে দরকার যখন ৬ রান, ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে দেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
এই মাঠেই গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর এই প্রথম মুখোমুখি হয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল ভারত। এশিয়া কাপে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারত এগিয়ে গেল ৯-৫ ব্যবধানে। সবশেষ চার ম্যাচেই জয়ের হাসি তাদের। এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান পাচ্ছে না তাদের মূল স্ট্রাইক বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত বোলিংয়ে যিনি সুর বেঁধে দিয়েছিলেন দলের জয়ের। আসরে ভারতও পাচ্ছে না তাদের মূল বোলারদের একজন জাসপ্রিত বুমরাহকে। দুজনই চোটের কারণে বাইরে। হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস হেরে। তাদের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই আউট হন শর্ট বলে। জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক বাবর আজম। দলের হয়ে ত্রিশ ছাড়াতে পারেন কেবল একজন। সেই মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৩ রান করতে বল খেলেন ৪২টি। পরে বল হাতে অভিষিক্ত নাসিম শাহ প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। মাঝে পরপর দুই বলে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে ভারতকে চাপে ফেলে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ। যদিও ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি পাকিস্তান। ভুবনেশ্বর কুমারের করা ইনিংসের প্রথম বলেই বেঁচে যান রিজওয়ান। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। ব্যাটসম্যান রিভিউ নেওয়ার পর দেখা যায়, বল স্টাম্প মিস করে যেত।
ওভারের শেষ বলে রিজওয়ানের কট বিহাইন্ডের জন্য রিভিউ নিয়েছিল ভারত। তবে ব্যাটে বলের স্পর্শের প্রমাণ মেলেনি। তৃতীয় ওভারে পাকিস্তান হারায় বাবরকে (৯ বলে ১০)। ভুবনেশ্বরের শর্ট পুল করার চেষ্টায় বল আকাশে তোলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান আর্শদিপ সিং। রিজওয়ান শুরু থেকে সংগ্রাম করছিলেন ব্যাটে-বলে করতে। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ১৭ বলে ৯। এরপর আভেশ খানকে পরপর ছক্কা-চারে রানের গতিতে দম দেন তিনি। ওই ওভারেই ফখর জামান বিদায় নেন ক্রিকেটীয় স্পিরিটের নজির দেখিয়ে। আভেশের শর্ট বল অফ সাইডে খেলার চেষ্টায় ঠিকমতো পারেননি তিনি। বল জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। ভারতের খেলোয়াড়রা কট বিহাইন্ডের আবেদনই করেননি। তার আগেই হাঁটা ধরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ২ উইকেটে ৪৩। ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৬৮। রানের গতি কিছুটা বাড়ে ইফতিখার আহমেদ ক্রিজে যাওয়ার পর। যুজবেন্দ্র চেহেলকে ছক্কার ওড়ানোর পরের বলে ক্যাচ দিয়ে তিনি বেঁচে যান বোলার বল মুঠোয় জমাতে না পারায়। সেই সুযোগ যদিও কাজে লাগাতে পারেননি ইফতিখার। পরের ওভারেই পান্ডিয়ার বাউন্সারে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ইফতিখার। ২২ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান। পান্ডিয়া নিজের পরের ওভারে তিন বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন রিজওয়ান ও খুশদিল শাহকে। এই দুজনও আউট হন শর্ট বলে। র‌্যাম্প শট খেলার চেষ্টায় থার্ডম্যানে ধরা পড়েন রিজওয়ান। খুশদিল কাট করার চেষ্টায় ক্যাচ দেন সুইপার কাভারে।
এরপর নিয়মিত উইকেট হারায় পাকিস্তান। আসিফ আলি, নওয়াজরা পারেননি প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে। দুই পেসার শাহনাওয়াজ দাহানির ৬ বলে ১৬ ও হারিস রউফের ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিওতে দেড়শর কাছাকাছি যেতে পারে তারা। ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে প্রতিপক্ষের সবগুলো উইকেট নেন তাদের পেসাররা। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর। রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই লোকেশ রাহুলকে হারায় ভারত। নাসিমের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ডানহাতি ওপেনার। বিশ্রাম শেষে ফেরার ম্যাচে দারুণ এক কীর্তি গড়েন বিরাট কোহলি। পড়তি ফর্মের কারণে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মুখে থাকা ব্যাটসম্যানের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এটি। নিউ জিল্যান্ডের রস টেইলরের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই একশ ম্যাচ খেলা দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি। মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে কোহলি ফিরতে পারতেন শূন্য রানে। নাসিমের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করেন তিনি। স্লিপে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন ফখর। যদিও কিছুটা কঠিন ছিল সেটি। জীবন পেয়ে দারুণ কয়েকটি চার মারেন কোহলি। পাওয়ার প্লেতে ভারত ১ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৮ রান। শুরুতে নিজেকে গুটিয়ে রাখা রোহিত দারুণ একটি ছক্কা মারেন নওয়াজকে। এক বল পর বাঁহাতি স্পিনারকে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তিনি (১৮ বলে ১২)। নওয়াজ পরের ওভারের প্রথম বলে কোহলিকেও ফিরিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। বেরিয়ে এসে খেলে ক্যাচ দেন সাবেক ভারত অধিনায়ক। ৩৪ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ৩৫।
ওই ওভারেই নওয়াজকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জাদেজা। সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে জমে উঠছিল তার জুটি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে সূর্যকুমারকে বোল্ড করে ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন তরুণ ডানহাতি পেসার নাসিম। শেষ ৫ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৫১ রান। শেষ ৩ ওভারে যা দাঁড়ায় ৩২ রানে। আইসিসির নতুন নিয়মে মন্থর ওভার রেটের পেনাল্টি হিসেবে পাঁচ জনের জায়গায় সর্বোচ্চ চার জন ফিল্ডার শেষ ৩ ওভারে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে রাখতে পারে পাকিস্তান। সেখানেই অনেকটা পিছিয়ে পড়ে তারা। ভারতও অবশ্য একই কারণে শেষ তিন ওভারে একইরকম ফিল্ডিং সাজাতে বাধ্য হয়েছিল। নাসিমের কোটার শেষ ওভারে জাদেজাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পরের বলেই তিনি ছক্কা মেরে কমিয়ে আনেন ব্যবধান। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ২১। ১৯তম ওভারে রউফের শেষ চার বলের মধ্যে তিনটি চার মারেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারে ৭ রানের প্রয়োজনে নওয়াজের প্রথম বলে বড় শট খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান জাদেজা। ভাঙে ২৯ বলে ৫২ রানের জুটি। জাদেজা ২৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় করেন ৩৫ রান। তার বিদায়ে নতুন নাটকীয়তার আভাস মেলে। তবে পান্ডিয়া তেমন কিছু হতে দেননি। ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারাল ভারত

আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : বরাবরের মতোই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। মাঠের লড়াইও হলো জমজমাট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং প্রদর্শনীর দেখা যদিও মিলল না। কম পুঁজি নিয়ে পাকিস্তান লড়াই করল দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না তারা। রবীন্দ্র জাদেজার কার্যকর ইনিংস ও হার্দিক পান্ডিয়ার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিতল ভারত। এশিয়া কাপে দুই দলের প্রথম ম্যাচে রোববার ভারতের জয় ৫ উইকেটে। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ১৪৮ রানের লক্ষ্য রোহিত শর্মার দল ছুঁয়ে ফেলে ২ বাকি থাকতে। বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উইকেট নেওয়ার পর ১৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভারতের জয়ের নায়ক পান্ডিয়া। শেষ ৩ বলে দরকার যখন ৬ রান, ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে দেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
এই মাঠেই গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর এই প্রথম মুখোমুখি হয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল ভারত। এশিয়া কাপে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারত এগিয়ে গেল ৯-৫ ব্যবধানে। সবশেষ চার ম্যাচেই জয়ের হাসি তাদের। এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান পাচ্ছে না তাদের মূল স্ট্রাইক বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত বোলিংয়ে যিনি সুর বেঁধে দিয়েছিলেন দলের জয়ের। আসরে ভারতও পাচ্ছে না তাদের মূল বোলারদের একজন জাসপ্রিত বুমরাহকে। দুজনই চোটের কারণে বাইরে। হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস হেরে। তাদের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই আউট হন শর্ট বলে। জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক বাবর আজম। দলের হয়ে ত্রিশ ছাড়াতে পারেন কেবল একজন। সেই মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৩ রান করতে বল খেলেন ৪২টি। পরে বল হাতে অভিষিক্ত নাসিম শাহ প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। মাঝে পরপর দুই বলে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে ভারতকে চাপে ফেলে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ। যদিও ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি পাকিস্তান। ভুবনেশ্বর কুমারের করা ইনিংসের প্রথম বলেই বেঁচে যান রিজওয়ান। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। ব্যাটসম্যান রিভিউ নেওয়ার পর দেখা যায়, বল স্টাম্প মিস করে যেত।
ওভারের শেষ বলে রিজওয়ানের কট বিহাইন্ডের জন্য রিভিউ নিয়েছিল ভারত। তবে ব্যাটে বলের স্পর্শের প্রমাণ মেলেনি। তৃতীয় ওভারে পাকিস্তান হারায় বাবরকে (৯ বলে ১০)। ভুবনেশ্বরের শর্ট পুল করার চেষ্টায় বল আকাশে তোলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান আর্শদিপ সিং। রিজওয়ান শুরু থেকে সংগ্রাম করছিলেন ব্যাটে-বলে করতে। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ১৭ বলে ৯। এরপর আভেশ খানকে পরপর ছক্কা-চারে রানের গতিতে দম দেন তিনি। ওই ওভারেই ফখর জামান বিদায় নেন ক্রিকেটীয় স্পিরিটের নজির দেখিয়ে। আভেশের শর্ট বল অফ সাইডে খেলার চেষ্টায় ঠিকমতো পারেননি তিনি। বল জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। ভারতের খেলোয়াড়রা কট বিহাইন্ডের আবেদনই করেননি। তার আগেই হাঁটা ধরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ২ উইকেটে ৪৩। ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৬৮। রানের গতি কিছুটা বাড়ে ইফতিখার আহমেদ ক্রিজে যাওয়ার পর। যুজবেন্দ্র চেহেলকে ছক্কার ওড়ানোর পরের বলে ক্যাচ দিয়ে তিনি বেঁচে যান বোলার বল মুঠোয় জমাতে না পারায়। সেই সুযোগ যদিও কাজে লাগাতে পারেননি ইফতিখার। পরের ওভারেই পান্ডিয়ার বাউন্সারে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ইফতিখার। ২২ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান। পান্ডিয়া নিজের পরের ওভারে তিন বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন রিজওয়ান ও খুশদিল শাহকে। এই দুজনও আউট হন শর্ট বলে। র‌্যাম্প শট খেলার চেষ্টায় থার্ডম্যানে ধরা পড়েন রিজওয়ান। খুশদিল কাট করার চেষ্টায় ক্যাচ দেন সুইপার কাভারে।
এরপর নিয়মিত উইকেট হারায় পাকিস্তান। আসিফ আলি, নওয়াজরা পারেননি প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে। দুই পেসার শাহনাওয়াজ দাহানির ৬ বলে ১৬ ও হারিস রউফের ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিওতে দেড়শর কাছাকাছি যেতে পারে তারা। ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে প্রতিপক্ষের সবগুলো উইকেট নেন তাদের পেসাররা। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর। রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই লোকেশ রাহুলকে হারায় ভারত। নাসিমের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ডানহাতি ওপেনার। বিশ্রাম শেষে ফেরার ম্যাচে দারুণ এক কীর্তি গড়েন বিরাট কোহলি। পড়তি ফর্মের কারণে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মুখে থাকা ব্যাটসম্যানের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এটি। নিউ জিল্যান্ডের রস টেইলরের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই একশ ম্যাচ খেলা দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি। মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে কোহলি ফিরতে পারতেন শূন্য রানে। নাসিমের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করেন তিনি। স্লিপে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন ফখর। যদিও কিছুটা কঠিন ছিল সেটি। জীবন পেয়ে দারুণ কয়েকটি চার মারেন কোহলি। পাওয়ার প্লেতে ভারত ১ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৮ রান। শুরুতে নিজেকে গুটিয়ে রাখা রোহিত দারুণ একটি ছক্কা মারেন নওয়াজকে। এক বল পর বাঁহাতি স্পিনারকে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তিনি (১৮ বলে ১২)। নওয়াজ পরের ওভারের প্রথম বলে কোহলিকেও ফিরিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। বেরিয়ে এসে খেলে ক্যাচ দেন সাবেক ভারত অধিনায়ক। ৩৪ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ৩৫।
ওই ওভারেই নওয়াজকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জাদেজা। সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে জমে উঠছিল তার জুটি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে সূর্যকুমারকে বোল্ড করে ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন তরুণ ডানহাতি পেসার নাসিম। শেষ ৫ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৫১ রান। শেষ ৩ ওভারে যা দাঁড়ায় ৩২ রানে। আইসিসির নতুন নিয়মে মন্থর ওভার রেটের পেনাল্টি হিসেবে পাঁচ জনের জায়গায় সর্বোচ্চ চার জন ফিল্ডার শেষ ৩ ওভারে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে রাখতে পারে পাকিস্তান। সেখানেই অনেকটা পিছিয়ে পড়ে তারা। ভারতও অবশ্য একই কারণে শেষ তিন ওভারে একইরকম ফিল্ডিং সাজাতে বাধ্য হয়েছিল। নাসিমের কোটার শেষ ওভারে জাদেজাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পরের বলেই তিনি ছক্কা মেরে কমিয়ে আনেন ব্যবধান। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ২১। ১৯তম ওভারে রউফের শেষ চার বলের মধ্যে তিনটি চার মারেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারে ৭ রানের প্রয়োজনে নওয়াজের প্রথম বলে বড় শট খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান জাদেজা। ভাঙে ২৯ বলে ৫২ রানের জুটি। জাদেজা ২৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় করেন ৩৫ রান। তার বিদায়ে নতুন নাটকীয়তার আভাস মেলে। তবে পান্ডিয়া তেমন কিছু হতে দেননি। ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই।