ঢাকা ০৬:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

রোববারের মধ্যে ডলারের একক রেট নির্ধারণ

  • আপডেট সময় : ০২:৪৭:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোববারের মধ্যে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর জন্য একক রেট নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন করা সংগঠন বাফেদা ও ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তা পর্যালোচনা করে আন্তঃব্যাংক ডলারের একক রেট নির্ধারণ করে দেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদার বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বাফেদা ও এবিবির শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে ডলারের দর, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স বাড়ানোর উপায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে এক ব্যাংকের রপ্তানি বিল অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা যাবে না। এছাড়া ডলারের সংকট মেটাতে প্রয়োজনীয় তারল্য সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ডলারের সাময়িক সমস্যা, চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোববারের মধ্যে একক রেটের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হবে। আমরা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি খুব শিগগিরই ডলারের সাময়িক যে চাপ হচ্ছে সেটা সহনীয় হয়ে যাবে। জানা গেছে, ডলারের আন্তঃব্যাংক দর ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা থাকলেও গত কয়েক দিনে অনেক ব্যাংক প্রবাসী ও রপ্তানিকারকদের থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করছে ৯৭ টাকা পর্যন্ত দরে। আর খোলাবাজারে ডলারের দর ৯৮ থেকে ৯৯ টাকা। হঠাৎ করে এভাবে দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো কারসাজি আছে কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে পরিদর্শনে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে বিক্রির পরিমাণ ৫৮০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘসময় মানুষ দেশের বাইরে যাননি। ফলে এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে বা ঘুরতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। আবার, আগামী মাসেই হজগামী যাত্রীরা সৌদি আরব যাবেন। ফলে ডলারের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই অনুপাতে সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দামও অনেক বেড়ে গেছে। তাদের মতে, যিনি যে দেশে যাচ্ছেন, তার জন্য সেই দেশের মুদ্রা সহজলভ্য করা হলে তা ডলারের ওপর চাপ কমাতে পারে। মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে বেশি সংখ্যাক মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার কাজে যাচ্ছেন। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় ডলারের সরবরাহ অনেক কম। তাদের মতে, সাধারণত বিদেশ থেকে যারা আসেন, তারা সঙ্গে করে ডলার নিয়ে আসেন। নগদ ডলারের যোগানের এটাই একমাত্র মাধ্যম। আর দেশের মানুষের হাতে যা থাকে, তা অনেক সময় বিক্রি করেন। এ ছাড়া বিদেশি পর্যটকেরা ডলার বিক্রি করে টাকা নেন। কিন্তু এখন ডলার বিক্রি করতে খুব বেশি গ্রাহক আসেন না। ব্যবসায়ীরা নিজেদের হাতে থাকা ডলার বিক্রি করছেন। অর্থাৎ খোলাবাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। এদিকে, ব্যাংক খাতে ডলারের সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৩ মে পর্যন্ত ৫৭৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক এখন তেল, গ্যাস, সারসহ সরকারি আমদানির পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে খাদ্য আমদানিতেও ডলার সরবরাহ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ করেছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক গাড়িসহ কিছু বিলাসপণ্য আমদানিতে ৭০ শতাংশ নগদ জমার বাধ্যবাধকতা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০টিরও বেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও পরিবারের ৫৭৬ কোটি টাকা ফ্রিজ

রোববারের মধ্যে ডলারের একক রেট নির্ধারণ

আপডেট সময় : ০২:৪৭:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোববারের মধ্যে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর জন্য একক রেট নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন করা সংগঠন বাফেদা ও ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তা পর্যালোচনা করে আন্তঃব্যাংক ডলারের একক রেট নির্ধারণ করে দেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদার বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বাফেদা ও এবিবির শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে ডলারের দর, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স বাড়ানোর উপায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে এক ব্যাংকের রপ্তানি বিল অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা যাবে না। এছাড়া ডলারের সংকট মেটাতে প্রয়োজনীয় তারল্য সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ডলারের সাময়িক সমস্যা, চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোববারের মধ্যে একক রেটের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হবে। আমরা যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি খুব শিগগিরই ডলারের সাময়িক যে চাপ হচ্ছে সেটা সহনীয় হয়ে যাবে। জানা গেছে, ডলারের আন্তঃব্যাংক দর ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা থাকলেও গত কয়েক দিনে অনেক ব্যাংক প্রবাসী ও রপ্তানিকারকদের থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করছে ৯৭ টাকা পর্যন্ত দরে। আর খোলাবাজারে ডলারের দর ৯৮ থেকে ৯৯ টাকা। হঠাৎ করে এভাবে দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো কারসাজি আছে কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে পরিদর্শনে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে বিক্রির পরিমাণ ৫৮০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘসময় মানুষ দেশের বাইরে যাননি। ফলে এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে বা ঘুরতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। আবার, আগামী মাসেই হজগামী যাত্রীরা সৌদি আরব যাবেন। ফলে ডলারের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই অনুপাতে সরবরাহ কম থাকায় ডলারের দামও অনেক বেড়ে গেছে। তাদের মতে, যিনি যে দেশে যাচ্ছেন, তার জন্য সেই দেশের মুদ্রা সহজলভ্য করা হলে তা ডলারের ওপর চাপ কমাতে পারে। মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে বেশি সংখ্যাক মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার কাজে যাচ্ছেন। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় ডলারের সরবরাহ অনেক কম। তাদের মতে, সাধারণত বিদেশ থেকে যারা আসেন, তারা সঙ্গে করে ডলার নিয়ে আসেন। নগদ ডলারের যোগানের এটাই একমাত্র মাধ্যম। আর দেশের মানুষের হাতে যা থাকে, তা অনেক সময় বিক্রি করেন। এ ছাড়া বিদেশি পর্যটকেরা ডলার বিক্রি করে টাকা নেন। কিন্তু এখন ডলার বিক্রি করতে খুব বেশি গ্রাহক আসেন না। ব্যবসায়ীরা নিজেদের হাতে থাকা ডলার বিক্রি করছেন। অর্থাৎ খোলাবাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। এদিকে, ব্যাংক খাতে ডলারের সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৩ মে পর্যন্ত ৫৭৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক এখন তেল, গ্যাস, সারসহ সরকারি আমদানির পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে খাদ্য আমদানিতেও ডলার সরবরাহ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ করেছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক গাড়িসহ কিছু বিলাসপণ্য আমদানিতে ৭০ শতাংশ নগদ জমার বাধ্যবাধকতা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০টিরও বেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করেছে।