নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ১৩ ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। হঠাৎ করেই পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক বাড়ছে। নতুন করে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। এছাড়াও কেজিতে ২ থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে আটা, ময়দা, চিনি, ডিম, সয়াবিন তেল ও জিরার দাম। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বাজারের তথ্য বলছে, এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৫০-৬০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, প্রতি বছরই রমজানের আগে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এবারও তেমনটি হয়েছে। কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২৬৫-২৭০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করেছেন ১৫০-১৫৫ টাকা। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগি বিক্রি করেছেন ২৫০-২৮০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার কারণে সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। শুধু ব্রয়লার বা মুরগির দাম নয়, গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়ে গেছে। এখন ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস, ১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৪০ টাকা। বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। শালগমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। গাজরের কেজি ২০-৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ছিল ৩০-৪০ টাকা। কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, রসুন ১১০-১২০ টাকা, গোল আলু ২০ টাকা, দেশি আদা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। পাবদা ৫০০-৬০০ টাকা, সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বড় সুরমা মাছ ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৫০০-৬০০ টাকা ও বাটা মাছ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মুগডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪৫ টাকা, মসুর ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নি¤œ মধ্যবিত্তদের মোটা চাল এখন ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনিগুঁড়া চাল ৯০-১০০ টাকা, মিনিকেট চাল ৬০ টাকা ও নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন এখন ১৬৫ থেকে ১৬৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১৭০ টাকা দিয়ে। আর ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে লাগছে ৭৮০ টাকা। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অসহায় নি¤œ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ। কিছু দাম কমানোর আশায় এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে ঘুরে হয়রান তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর নিউমার্কেটের পাইকারি ও খুচরা মাছ, সবজি, মুদি বাজার ঘুরে এমন পরিস্থিতিই দেখা যায়। আবার পাইকারি বাজারেই এমন বেশি দামে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় অনেককে। নিউমার্কেটের মাছ ও সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছ বাজার আরো চড়া। শুধু হোটেলগুলোতেই বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে। খুব কম সংখ্যক সাধারণ মানুষই বড় মাছ কিনছে।
রোজা সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ