ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

রেয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

  • আপডেট সময় : ০৫:৫২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: কিলিয়ান এমবাপে মাঠে নামার পর পাল্টে গেল খেলার চিত্র। ফরাসি তারকার ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া রেয়াল মাদ্রিদ এক পর্যায়ে এগিয়েও গেল। থিবো কোর্তোয়ার ভুলের সুযোগ নিয়ে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিল বার্সেলোনা। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের নিষ্পত্তি হবে টাইব্রেকারে, তখনই দারুণ এক গোলে ব্যবধান গড়ে দিলেন জুল কুন্দে। ঘটনাবহুল লড়াইয়ে কোপা দেল রের শিরোপা জিতল হান্সি ফ্লিকের দল। সেভিয়ায় শনিবার রাতের রোমাঞ্চকর ফাইনালে ৩-২ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। প্রতিযোগিতার রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের এটি ৩২তম শিরোপা। ২৪টির বেশি নেই আর কারো।

পেদ্রির চমৎকার গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে ৮ মিনিটের মধ্েয দুই গোল করে এগিয়ে যায় রেয়াল। সরাসরি ফ্রি কিকে নিজের প্রথম গোলে এমবাপে সমতা ফেরানোর পর দলকে এগিয়ে নেন অহেলিয়া চুয়ামেনি। সে সময়ে রেয়ালকেই শ্রেয়তর দল মনে হচ্ছিল। অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ৮৪তম মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরান ফেররান তরেস। এরপর কুন্দের ওই গোল গড়ে দেয় ব্যবধান। ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া ও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি গনসালেস ফুয়ের্তেসের মন্তব্েযর জের ধরে ম্যাচের আগের দিন পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। অনুশীলন ও সংবাদ সম্মেলনসহ ম্যাচের আগের সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জন করে রেয়াল। রেফারি পরির্তনেরও দাবি জানায় তারা, যদিও তাতে সাড়া মেলেনি। অমন তাতানো ম্যাচের শেষটাও যথেষ্ট আগুনে। ম্যাচের অন্তিম সময়ে ফ্রি কিকের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রেয়ালের বেঞ্চ। রেফারির দিকে কিছু একটা ছুঁড়ে লাল কার্ড দেখেন আন্টোনিও রুডিগার। তাকে থামিয়ে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছিল রেয়ালের কোচ, খেলোয়াড়দের। এমন ম্যাচের শুরুটা ছিল বেশ সাদামাটা। বল দখলে রেখে গোলের সুযোগ খুঁজতে থাকে বার্সেলোনা, সে সময় রেয়ালক মনে হচ্ছিল লক্ষ্যহীন। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কুন্দে।

একাদশ মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় রেয়াল। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ফেরলঁদ মঁদি। ফরাসি লেফট-ব্যাকের জায়গায় নামেন ফ্রান গার্সিয়া। পাঁচ মিনিট পর রাফিনিয়ার ক্রস রেয়ালের ডি-বক্সে ফেদে ভালভের্দের হাতে লাগলে হ্যান্ডবলের জোরাল আবেদন করে বার্সেলোনা। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি। ১৯তম মিনিট পর লামিনে ইয়ামালের আড়াআড়ি শট বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে। এমন কিছুর জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না থিবো কোর্তোয়া। তবে তিন মিনিট পর ফ্রি কিকের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন রেয়াল গোলরক্ষক, ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান কুন্দের জোরাল হেড। ২৮তম মিনিটে পেদ্রির দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রতি-আক্রমণে বল পেয়ে ইয়ামাল চলে যান বাইলাইনের কাছে। তার ক্রস ঠেকানোর দিকেই ছিল রেয়ালের সবার মনোযোগ। সুযোগ বুঝে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কাট-ব্যাকে খুঁজে নেন পেদ্রিকে। অরক্ষিত মিডফিল্ডার গতিময় শটে বল পাঠান জালে। ঝাঁপিয়েও কিছু করতে পারেননি কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর রাফিনিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান কোর্তোয়া। ৩৫তম মিনিটে জালে বল পাঠান জুড বেলিংহ্যাম; কিন্তু তিনিই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ৪৪তম মিনিটে একটুর জন্য দ্বিগুণ হয়নি ব্যবধান। দানি ওলমোর কর্নার সবাইকে এড়িয়ে মাঠে ফেরে দূরের পোস্টে লেগে! একটুর জন্য ফিরতি বলের নাগাল পাননি ইনিগো মার্তিনেস। প্রথমার্ধে ৬৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ৯টি শট নেয় বার্সেলোনা, এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে রেয়ালের একমাত্র শট ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। আক্রমণে ধার বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রদ্রিগোর জায়গায় এমবাপেকে নামান রেয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। দ্বিতীয়ার্ধেও প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ৪৬তম মিনিটে ইয়ামালের শট ফেরান কোর্তোয়া।

দুই মিনিট পর রাফিনিয়ার দূরপাল্লার শটও ঠেকান তিনি।
৪৯তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে রেয়াল। ভিনিসিউস জুনিয়রের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন ভয়চেক স্ট্যান্সনি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের ফিরতি শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান বার্সেলোনা গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর এগিয়ে এসে এমবাপের শটও ঠেকান স্ট্যান্সনি। পরের মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে বাইরে মেরে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। ৫৬তম মিনিটে রেয়ালের জোরাল হ্যান্ডবলের আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ভিনিসিউসের শট ফেরান বার্সেলোনা গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর আবারও ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে হতাশ করেন তিনি। ৭০তম মিনিটে চমৎকার ফ্রি কিকে রেয়ালকে সমতায় ফেরান এমবাপে। স্ট্যান্সনিকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে লেগে বল জালে জড়ায়। সরাসরি ফ্রি কিকে ফরাসি তারকার এটাই প্রথম গোল। একের পর এক আক্রমণে বার্সেলোনাকে চেপে ধরা রেয়াল এগিয়ে যায় ৭৭তম মিনিটে। টানা তিনটি কর্নার পায় স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। তৃতীয় কর্নারে হেডে জাল খুঁজে নেন অরক্ষিত অহেলিয়া চুয়ামেনি। পাঁচ মিনিট পর ইয়ামালের দারুণ শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। নষ্ট হয় বার্সেলোনার আরেকটি সুযোগ। ৮৪তম মিনিটে তালগোল পাকিয়ে বিপদ ডেকে আনেন রেয়াল গোলরক্ষক নিজেই। মাঝমাঠ থেকে আসা বল ধরে রুডিগারকে গতিতে পরাস্ত করে এগিয়ে যান ফেররান তরেস। বিপদ দেখে আগেই ছুটে আসেন কোর্তোয়া; কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি। ঠা-া মাথার শটে ফাঁকা জালে বল পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা।

প্রবল প্রতিবাদ জানায় রেয়ালের খেলোয়াড়রা। ভিএআর মনিটরে দেখে অবশ্য সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি; ডাইভ দেওয়ায় উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনিয়া। অতিরিক্ত সময়ে অনেকটাই পড়ে যায় খেলার গতি। রক্ষণের দিকেই বেশি মনোযোগ দেয় দুই দল। ১০৪ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ পান তরেস। কিন্তু আড়াআড়ি শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি তিনি। ১০৭ মিনিটে জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় মিলেনি গোল। একটু পর বিপজ্জনক জায়গা থেকে চিপ লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ফের্মিন লোপেস। ১১৬তম মিনিটে কুন্দের নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। নিজেদের ডি বক্সের একটু বাইরে থেকে ব্রাহিম দিয়াসকে বল বাড়ান লুকা মদ্রিচ। দ্রুত গতিতে ছুটে এসে নিয়ন্ত্রণে নিয়েস গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন কুন্দে! বাকি সময়টায় দারুণ চেষ্টা করেন এমবাপে। কিন্তু কোনোমতে তীব্র স্নায়ুচাপের শেষ সময়টুকু কোনোমতে কাটিয়ে দিয়ে শিরোপার উচ্ছ্বাসে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে তিনটি বড় শিরোপা জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল বার্সেলোনা। প্রথমটি জিতে নিল তারা, এবার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আগেই বিদায় নিয়েছে রেয়াল। কোপা দেল রেতেও শিরোপা জিততে না পারায় তাদের সম্ভাবনা বেঁচে আছে কেবল লা লিগায়। সেখানে বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে দুই নম্বরে আছে তারা।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উত্তেজনা বাড়ালে কেউ আমাদের থামাতে পারবে না, হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

রেয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

আপডেট সময় : ০৫:৫২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: কিলিয়ান এমবাপে মাঠে নামার পর পাল্টে গেল খেলার চিত্র। ফরাসি তারকার ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া রেয়াল মাদ্রিদ এক পর্যায়ে এগিয়েও গেল। থিবো কোর্তোয়ার ভুলের সুযোগ নিয়ে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিল বার্সেলোনা। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের নিষ্পত্তি হবে টাইব্রেকারে, তখনই দারুণ এক গোলে ব্যবধান গড়ে দিলেন জুল কুন্দে। ঘটনাবহুল লড়াইয়ে কোপা দেল রের শিরোপা জিতল হান্সি ফ্লিকের দল। সেভিয়ায় শনিবার রাতের রোমাঞ্চকর ফাইনালে ৩-২ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। প্রতিযোগিতার রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের এটি ৩২তম শিরোপা। ২৪টির বেশি নেই আর কারো।

পেদ্রির চমৎকার গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে ৮ মিনিটের মধ্েয দুই গোল করে এগিয়ে যায় রেয়াল। সরাসরি ফ্রি কিকে নিজের প্রথম গোলে এমবাপে সমতা ফেরানোর পর দলকে এগিয়ে নেন অহেলিয়া চুয়ামেনি। সে সময়ে রেয়ালকেই শ্রেয়তর দল মনে হচ্ছিল। অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ৮৪তম মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরান ফেররান তরেস। এরপর কুন্দের ওই গোল গড়ে দেয় ব্যবধান। ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া ও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি গনসালেস ফুয়ের্তেসের মন্তব্েযর জের ধরে ম্যাচের আগের দিন পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। অনুশীলন ও সংবাদ সম্মেলনসহ ম্যাচের আগের সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জন করে রেয়াল। রেফারি পরির্তনেরও দাবি জানায় তারা, যদিও তাতে সাড়া মেলেনি। অমন তাতানো ম্যাচের শেষটাও যথেষ্ট আগুনে। ম্যাচের অন্তিম সময়ে ফ্রি কিকের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে রেয়ালের বেঞ্চ। রেফারির দিকে কিছু একটা ছুঁড়ে লাল কার্ড দেখেন আন্টোনিও রুডিগার। তাকে থামিয়ে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছিল রেয়ালের কোচ, খেলোয়াড়দের। এমন ম্যাচের শুরুটা ছিল বেশ সাদামাটা। বল দখলে রেখে গোলের সুযোগ খুঁজতে থাকে বার্সেলোনা, সে সময় রেয়ালক মনে হচ্ছিল লক্ষ্যহীন। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কুন্দে।

একাদশ মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় রেয়াল। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ফেরলঁদ মঁদি। ফরাসি লেফট-ব্যাকের জায়গায় নামেন ফ্রান গার্সিয়া। পাঁচ মিনিট পর রাফিনিয়ার ক্রস রেয়ালের ডি-বক্সে ফেদে ভালভের্দের হাতে লাগলে হ্যান্ডবলের জোরাল আবেদন করে বার্সেলোনা। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি। ১৯তম মিনিট পর লামিনে ইয়ামালের আড়াআড়ি শট বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে। এমন কিছুর জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না থিবো কোর্তোয়া। তবে তিন মিনিট পর ফ্রি কিকের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন রেয়াল গোলরক্ষক, ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান কুন্দের জোরাল হেড। ২৮তম মিনিটে পেদ্রির দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রতি-আক্রমণে বল পেয়ে ইয়ামাল চলে যান বাইলাইনের কাছে। তার ক্রস ঠেকানোর দিকেই ছিল রেয়ালের সবার মনোযোগ। সুযোগ বুঝে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কাট-ব্যাকে খুঁজে নেন পেদ্রিকে। অরক্ষিত মিডফিল্ডার গতিময় শটে বল পাঠান জালে। ঝাঁপিয়েও কিছু করতে পারেননি কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর রাফিনিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান কোর্তোয়া। ৩৫তম মিনিটে জালে বল পাঠান জুড বেলিংহ্যাম; কিন্তু তিনিই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ৪৪তম মিনিটে একটুর জন্য দ্বিগুণ হয়নি ব্যবধান। দানি ওলমোর কর্নার সবাইকে এড়িয়ে মাঠে ফেরে দূরের পোস্টে লেগে! একটুর জন্য ফিরতি বলের নাগাল পাননি ইনিগো মার্তিনেস। প্রথমার্ধে ৬৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ৯টি শট নেয় বার্সেলোনা, এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে রেয়ালের একমাত্র শট ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। আক্রমণে ধার বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রদ্রিগোর জায়গায় এমবাপেকে নামান রেয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। দ্বিতীয়ার্ধেও প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ৪৬তম মিনিটে ইয়ামালের শট ফেরান কোর্তোয়া।

দুই মিনিট পর রাফিনিয়ার দূরপাল্লার শটও ঠেকান তিনি।
৪৯তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে রেয়াল। ভিনিসিউস জুনিয়রের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন ভয়চেক স্ট্যান্সনি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের ফিরতি শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান বার্সেলোনা গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর এগিয়ে এসে এমবাপের শটও ঠেকান স্ট্যান্সনি। পরের মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে বাইরে মেরে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। ৫৬তম মিনিটে রেয়ালের জোরাল হ্যান্ডবলের আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ভিনিসিউসের শট ফেরান বার্সেলোনা গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর আবারও ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে হতাশ করেন তিনি। ৭০তম মিনিটে চমৎকার ফ্রি কিকে রেয়ালকে সমতায় ফেরান এমবাপে। স্ট্যান্সনিকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে লেগে বল জালে জড়ায়। সরাসরি ফ্রি কিকে ফরাসি তারকার এটাই প্রথম গোল। একের পর এক আক্রমণে বার্সেলোনাকে চেপে ধরা রেয়াল এগিয়ে যায় ৭৭তম মিনিটে। টানা তিনটি কর্নার পায় স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। তৃতীয় কর্নারে হেডে জাল খুঁজে নেন অরক্ষিত অহেলিয়া চুয়ামেনি। পাঁচ মিনিট পর ইয়ামালের দারুণ শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। নষ্ট হয় বার্সেলোনার আরেকটি সুযোগ। ৮৪তম মিনিটে তালগোল পাকিয়ে বিপদ ডেকে আনেন রেয়াল গোলরক্ষক নিজেই। মাঝমাঠ থেকে আসা বল ধরে রুডিগারকে গতিতে পরাস্ত করে এগিয়ে যান ফেররান তরেস। বিপদ দেখে আগেই ছুটে আসেন কোর্তোয়া; কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি। ঠা-া মাথার শটে ফাঁকা জালে বল পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা।

প্রবল প্রতিবাদ জানায় রেয়ালের খেলোয়াড়রা। ভিএআর মনিটরে দেখে অবশ্য সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি; ডাইভ দেওয়ায় উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনিয়া। অতিরিক্ত সময়ে অনেকটাই পড়ে যায় খেলার গতি। রক্ষণের দিকেই বেশি মনোযোগ দেয় দুই দল। ১০৪ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ পান তরেস। কিন্তু আড়াআড়ি শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি তিনি। ১০৭ মিনিটে জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় মিলেনি গোল। একটু পর বিপজ্জনক জায়গা থেকে চিপ লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ফের্মিন লোপেস। ১১৬তম মিনিটে কুন্দের নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। নিজেদের ডি বক্সের একটু বাইরে থেকে ব্রাহিম দিয়াসকে বল বাড়ান লুকা মদ্রিচ। দ্রুত গতিতে ছুটে এসে নিয়ন্ত্রণে নিয়েস গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন কুন্দে! বাকি সময়টায় দারুণ চেষ্টা করেন এমবাপে। কিন্তু কোনোমতে তীব্র স্নায়ুচাপের শেষ সময়টুকু কোনোমতে কাটিয়ে দিয়ে শিরোপার উচ্ছ্বাসে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে তিনটি বড় শিরোপা জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল বার্সেলোনা। প্রথমটি জিতে নিল তারা, এবার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আগেই বিদায় নিয়েছে রেয়াল। কোপা দেল রেতেও শিরোপা জিততে না পারায় তাদের সম্ভাবনা বেঁচে আছে কেবল লা লিগায়। সেখানে বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে দুই নম্বরে আছে তারা।