ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

রেসিংয়ে প্রথম বাংলাদেশি নারী পূর্ণির আত্মপ্রকাশ

  • আপডেট সময় : ০৭:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত হওয়া একটি মোটরস্পোর্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন পূর্ণি আয়মান ও রেসিং সার্কিট ট্র্যাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
আবুধাবির ইয়াস মেরিনা সার্কিটে অনুষ্ঠিত ‘এউএই টাইম অ্যাটাক’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রাউন্ডে পূর্ণি আয়মান এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৩৫ জন রেসার অংশগ্রহণ করেন।
পূর্ণি আয়মান রিয়ার হুইল ড্রাইভ আনলিমিটেড ক্লাসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং ২:৪৮.২৬৩ সময় নিয়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন।

১৮টি ল্যাপ ছিল যেগুলো পূর্ণিকে ১১২.৯৯ কিলোমিটার/ঘণ্টা গড় গতিতে নেভিগেট করতে হয়েছিল। এখানে উল্লেখ্য, পূর্ণি আয়মান টয়োটা জিটি ৮৬ চালনা করেছিলেন যেখানে তার ক্লাসের প্রথম দুই ফিনিশার পোর্শে চালিয়েছিলেন এবং তৃতীয় ফিনিশার একটি বিএমডব্লিউ পরিচালনা করেছিলেন।
পূর্ণি স্বীকার করেছেন যে পোর্শের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দুর্ভাগ্যের বিষয় ছিল কিন্তু ফর্মুলা ১ ট্র্যাকে তার প্রথম রেসিং অভিজ্ঞতায় তিনি সামগ্রিকভাবে সন্তুষ্ট ছিলেন।

দেশে ফেরার পর পূর্ণি বলেন, আমি খুব খুশি এবং খুব আনন্দিত যে আমি এমন একটি ট্র্যাকে রেস করেছি এবং প্রতিযোগিতাটি সম্পন্ন করেছি। এটি আমার জন্য একটি খুব, খুব বড় বিষয়। এটি একটি স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।
বাংলাদেশের মহিলা রেসাররা গত বছর আন্তর্জাতিক মোটরস্পোর্ট ইভেন্টে প্রতিযোগিতা শুরু করে। কাশফিয়া আরফা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এফআইএ প্রতিযোগিতায় কার রেসিং এ দেশ থেকে প্রথম হয়েছিলেন।
পূর্ণি বলেন, কাশফিয়ার পর এএবি (বাংলাদেশের মোটরস্পোর্টের জন্য জাতীয় ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ) মহিলা চালক খুঁজছিল। অভিক (রেসার অভিক আনোয়ার) তাদের কাছে আমার নাম প্রস্তাব করেছিল। তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি অংশগ্রহণ করতে চাই কিনা। আমি বলেছিলাম- ঠিক আছে, চেষ্টা করে দেখা যাক।
পূর্ণি দুই সন্তানের মা। তার নিজের ব্যবসা থাকার কারনে তাকে আলাদাভাবে সময় বের করতে হয়েছিল। গত ডিসেম্বর থেকে তার প্রস্তুতি শুরু হয়।

পূর্ণি বলেন, বাংলাদেশে কোন রেস ট্র্যাক নেই তাই সিমুলেটর ছাড়া ট্রেনিং করা সম্ভব ছিল না। আমি সিমুলেটর দিয়ে ট্রেনিং শুরু করি। আমি কিছু অনলাইন রেসিং এবং সিলেটে দুটি ইভেন্টেও অংশ নিয়েছিলাম। তিনি চলতি মাসের প্রথম দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার পর একটি প্রকৃত রেসিং ট্র্যাকে অনুশীলন করেছিলেন। এটি দুবাই অটোড্রোমে ছিল।
পূর্ণি বলেন, শুরুতে আমি কিছতা নার্ভাস ছিলাম কারণ ইয়াস মেরিনা সার্কিটেও এফওয়ান রেসিং রয়েছে তাই এটি একটি দ্রুততম ট্র্যাকের মতো। এই ধরনের ট্র্যাকে গাড়ি চালানোর জন্য সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। আমার মনে হচ্ছিল আমি এটা করতে পারবো না- যেহেতু এটা আমার প্রথমবার ছিল। আমি সিমুলেটরে একই ট্র্যাকে করেছি তাই আমি পুরোপুরি অজ্ঞাত ছিলামনা। দুই-তিনটি ল্যাপের পরে, আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভাল করেছিলাম। আমরা ২০ ল্যাপ পর্যন্ত ছিলাম। একটি দুর্ঘটনার কারণে আমরা ১৮টি করেছিলাম যা শেষ দুটি ল্যাপ বাতিল করেছে কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা রেসটি সম্পূর্ণ করেছি। আমি চতুর্থ অবস্থানে স্কোর করেছিলাম কারণ প্রথম ফিনিশাররা পোর্শে চালাচ্ছিল। তাই তারা অনেক দ্রুত ছিল।
পূর্ণি বলেন, এটি একটি ভালো সময় ছিল।

সবচেয়ে বড় কারণ হলো, আমি প্রথম বাংলাদেশি মহিলা যে, আন্তর্জাতিক সার্কিট ট্র্যাকে রেস করেছি। তাকে মোটরস্পোর্ট রেসিংয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই গাড়ি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন থেকে গাড়ি চালানো শুরু করি। আমি সবসময় অটোমোবাইলের জগতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। গাড়ির প্রতি আমার ভালোবাসা বছরের পর বছর ধরে বেড়েছে। এটি কেবল একটি শখের চেয়েও বেশি কিছু।
পুর্ণি বলেন, আমি মনে করি, এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে বেশি। এ বিষয়টি অন্যদের, বিশেষ করে মহিলাদেরকে অনুপ্রাণিত করার দিকে একটি পদক্ষেপ। রেসিং আমার জন্য শুধুমাত্র একটি খেলা নয়; এটি নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার একটি উপায়।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রেসিংয়ে প্রথম বাংলাদেশি নারী পূর্ণির আত্মপ্রকাশ

আপডেট সময় : ০৭:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত হওয়া একটি মোটরস্পোর্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন পূর্ণি আয়মান ও রেসিং সার্কিট ট্র্যাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
আবুধাবির ইয়াস মেরিনা সার্কিটে অনুষ্ঠিত ‘এউএই টাইম অ্যাটাক’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রাউন্ডে পূর্ণি আয়মান এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ৩৫ জন রেসার অংশগ্রহণ করেন।
পূর্ণি আয়মান রিয়ার হুইল ড্রাইভ আনলিমিটেড ক্লাসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং ২:৪৮.২৬৩ সময় নিয়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন।

১৮টি ল্যাপ ছিল যেগুলো পূর্ণিকে ১১২.৯৯ কিলোমিটার/ঘণ্টা গড় গতিতে নেভিগেট করতে হয়েছিল। এখানে উল্লেখ্য, পূর্ণি আয়মান টয়োটা জিটি ৮৬ চালনা করেছিলেন যেখানে তার ক্লাসের প্রথম দুই ফিনিশার পোর্শে চালিয়েছিলেন এবং তৃতীয় ফিনিশার একটি বিএমডব্লিউ পরিচালনা করেছিলেন।
পূর্ণি স্বীকার করেছেন যে পোর্শের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দুর্ভাগ্যের বিষয় ছিল কিন্তু ফর্মুলা ১ ট্র্যাকে তার প্রথম রেসিং অভিজ্ঞতায় তিনি সামগ্রিকভাবে সন্তুষ্ট ছিলেন।

দেশে ফেরার পর পূর্ণি বলেন, আমি খুব খুশি এবং খুব আনন্দিত যে আমি এমন একটি ট্র্যাকে রেস করেছি এবং প্রতিযোগিতাটি সম্পন্ন করেছি। এটি আমার জন্য একটি খুব, খুব বড় বিষয়। এটি একটি স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।
বাংলাদেশের মহিলা রেসাররা গত বছর আন্তর্জাতিক মোটরস্পোর্ট ইভেন্টে প্রতিযোগিতা শুরু করে। কাশফিয়া আরফা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এফআইএ প্রতিযোগিতায় কার রেসিং এ দেশ থেকে প্রথম হয়েছিলেন।
পূর্ণি বলেন, কাশফিয়ার পর এএবি (বাংলাদেশের মোটরস্পোর্টের জন্য জাতীয় ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ) মহিলা চালক খুঁজছিল। অভিক (রেসার অভিক আনোয়ার) তাদের কাছে আমার নাম প্রস্তাব করেছিল। তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি অংশগ্রহণ করতে চাই কিনা। আমি বলেছিলাম- ঠিক আছে, চেষ্টা করে দেখা যাক।
পূর্ণি দুই সন্তানের মা। তার নিজের ব্যবসা থাকার কারনে তাকে আলাদাভাবে সময় বের করতে হয়েছিল। গত ডিসেম্বর থেকে তার প্রস্তুতি শুরু হয়।

পূর্ণি বলেন, বাংলাদেশে কোন রেস ট্র্যাক নেই তাই সিমুলেটর ছাড়া ট্রেনিং করা সম্ভব ছিল না। আমি সিমুলেটর দিয়ে ট্রেনিং শুরু করি। আমি কিছু অনলাইন রেসিং এবং সিলেটে দুটি ইভেন্টেও অংশ নিয়েছিলাম। তিনি চলতি মাসের প্রথম দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার পর একটি প্রকৃত রেসিং ট্র্যাকে অনুশীলন করেছিলেন। এটি দুবাই অটোড্রোমে ছিল।
পূর্ণি বলেন, শুরুতে আমি কিছতা নার্ভাস ছিলাম কারণ ইয়াস মেরিনা সার্কিটেও এফওয়ান রেসিং রয়েছে তাই এটি একটি দ্রুততম ট্র্যাকের মতো। এই ধরনের ট্র্যাকে গাড়ি চালানোর জন্য সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। আমার মনে হচ্ছিল আমি এটা করতে পারবো না- যেহেতু এটা আমার প্রথমবার ছিল। আমি সিমুলেটরে একই ট্র্যাকে করেছি তাই আমি পুরোপুরি অজ্ঞাত ছিলামনা। দুই-তিনটি ল্যাপের পরে, আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভাল করেছিলাম। আমরা ২০ ল্যাপ পর্যন্ত ছিলাম। একটি দুর্ঘটনার কারণে আমরা ১৮টি করেছিলাম যা শেষ দুটি ল্যাপ বাতিল করেছে কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা রেসটি সম্পূর্ণ করেছি। আমি চতুর্থ অবস্থানে স্কোর করেছিলাম কারণ প্রথম ফিনিশাররা পোর্শে চালাচ্ছিল। তাই তারা অনেক দ্রুত ছিল।
পূর্ণি বলেন, এটি একটি ভালো সময় ছিল।

সবচেয়ে বড় কারণ হলো, আমি প্রথম বাংলাদেশি মহিলা যে, আন্তর্জাতিক সার্কিট ট্র্যাকে রেস করেছি। তাকে মোটরস্পোর্ট রেসিংয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই গাড়ি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন থেকে গাড়ি চালানো শুরু করি। আমি সবসময় অটোমোবাইলের জগতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। গাড়ির প্রতি আমার ভালোবাসা বছরের পর বছর ধরে বেড়েছে। এটি কেবল একটি শখের চেয়েও বেশি কিছু।
পুর্ণি বলেন, আমি মনে করি, এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে বেশি। এ বিষয়টি অন্যদের, বিশেষ করে মহিলাদেরকে অনুপ্রাণিত করার দিকে একটি পদক্ষেপ। রেসিং আমার জন্য শুধুমাত্র একটি খেলা নয়; এটি নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার একটি উপায়।