নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘অডিট আপত্তি দুর্নীতি নয়। এটা একটা প্রশাসনিক বিষয়। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু এর আগেই অডিট আপত্তিকে দুর্নীতি হিসেবে চালিয়ে দেয় অনেক গণমাধ্যম। এতে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন সংশ্লিষ্টরা’- সম্প্রতি জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলন ও সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি। সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমআর মনজু এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কারিগর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস কে বারী।
মনির হোসেন বলেন, সরকারি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য অডিট বা নিরীক্ষা ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। অডিটের উদ্দেশ্য কখনোই কাউকে অপরাধী বানানো নয়; বরং এটি একটি প্রতিরোধমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি- অডিট আপত্তি উঠলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘দুর্নীতিবাজ’, ‘লুটপাটকারী’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কোনো তদন্ত, চার্জশিট বা আদালতের রায় ছাড়াই গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে চরিত্রহনন করা হচ্ছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছেন তাদের পরিবার, সন্তান ও পোষ্যরা।
আইন ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অডিট বলতে বোঝায়- সরকারি অর্থ সঠিক খাতে ব্যয় হয়েছে কি না, নথিপত্রে কোনো অসঙ্গতি আছে কি না, বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়েছে কি না। অডিট আপত্তি হলো- একটি প্রশ্ন, পর্যবেক্ষণ ও ব্যাখ্যা দাবি। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, সরকারি আর্থিক বিধি, দণ্ডবিধি, দুদক আইন- সবখানেই স্পষ্টভাবে বলা আছে তদন্ত, অভিযোগপত্র ও বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে অপরাধী বলা যাবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি বিশেষায়িত কারিগরি ও ভারী অবকাঠামোগত সংস্থা। একটি অডিট আপত্তিকে কেন্দ্র করে যদি কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়; তাহলে চলমান প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হবে, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। গণমাধ্যমের দায়িত্ব হলো- বিচার নয়, তথ্য উপস্থাপন। চরিত্রহনন নয়, সত্য যাচাই। মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, জনস্বার্থ রক্ষা।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ
























