ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

রেকর্ড ভেঙেছে তাপমাত্রা, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ

  • আপডেট সময় : ১১:৫৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা ও তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল অবধি বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। এরই মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছে কানাডায়। গরমের কারণে দেশ দুটিতে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুল, করোনার টিকাকেন্দ্র, অলিম্পিকের বাছাই ক্যাম্প। স্থানীয় আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সপ্তাহজুড়ে এমন দাবদাহ বয়ে যেতে পারে। এ কারণে তাপমাত্রা এখনকার তুলনায় আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের একটি গ্রাম লুটন। স্থানীয় সময় গত রোববার সেখানকার মানুষ বৈরী আবহাওয়ার চরম রূপ দেখেছে। ওই দিন সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশটির ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড। শুধু ব্রিটিশ কলাম্বিয়া নয়, কানাডার মেরু অঞ্চল থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন, ওয়াশিংটন অবধি তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের গড়ের তুলনায় বেশি রয়েছে।
অথচ এসব এলাকার মানুষ সাধারণত তুমুল তুষারপাতের সঙ্গে পরিচিত। তীব্র গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত নয় তারা। এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মেরু এলাকাগুলোয়ও রেকর্ডভাঙা গরম দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে এনভায়রনমেন্ট কানাডা নামক সংস্থার জ্যেষ্ঠ জলবায়ুবিদ ডেভিড ফিলিপস বলেন, ‘মরুভূমির মতো গরম পড়ছে। কানাডা বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম ও তুষারপাতপ্রবণ দেশ। আমরা তুষারঝড়ের সঙ্গে পরিচিত। এমন তীব্র গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত নই। এখন আমাদের এখানকার চেয়ে দুবাইয়ে তুলনামূলক কম গরম পড়ছে।’
গরমের কারণে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকার মানুষেরা ফ্যান ও বহনযোগ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কিনতে দোকানে ভিড় করছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুল ও করোনার টিকাকেন্দ্র। গরম থেকে স্বস্তি দিতে ভ্যাঙ্কুভারে সড়কের পাশে কৃত্রিম ফোয়ারা বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যেসব বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নেই, তাদের অনেকেই গাড়িতে কিংবা বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয় সময় গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলে তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠেছিল। স্থানীয় এক ব্যক্তি এএফপিকে বলেন, তাপমাত্রা ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠলেই ওই দিনকে উষ্ণ ধরা হয়। সবাই টি–শার্ট আর শর্টস পরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে। সেখানে এখন দিনের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়েছে।
দেশটির অরিগন অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর পোর্টল্যান্ডের তাপমাত্রা ছিল আরও বেশি। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সেখানে ১১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস)। তীব্র গরমের কারণে সেখানে অলিম্পিকের বাছাইপর্বের চূড়ান্ত দিনের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করে স্থানীয় সৈকতগুলোয় বাড়ছে মানুষের ভিড়।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অ্যালবার্টা, মেনিটোবা, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিসহ কানাডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে ভয়াবহ দাবদাহ বয়ে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় এলাকায় রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করেছে এনডব্লিউএস। বলা হয়েছে, পুরো অঞ্চলে ‘হিট ডোম’ তৈরি হয়েছে, যা সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ডেভিড ফিলিপস বলেন, ২০১৮ সালে কানাডায় এ রকম তীব্র গরমে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এবার উষ্ণ আবহাওয়া সপ্তাহজুড়ে থাকতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১১৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা তার চেয়েও বেশি হতে পারে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রেকর্ড ভেঙেছে তাপমাত্রা, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ

আপডেট সময় : ১১:৫৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা ও তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল অবধি বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। এরই মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছে কানাডায়। গরমের কারণে দেশ দুটিতে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুল, করোনার টিকাকেন্দ্র, অলিম্পিকের বাছাই ক্যাম্প। স্থানীয় আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সপ্তাহজুড়ে এমন দাবদাহ বয়ে যেতে পারে। এ কারণে তাপমাত্রা এখনকার তুলনায় আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের একটি গ্রাম লুটন। স্থানীয় সময় গত রোববার সেখানকার মানুষ বৈরী আবহাওয়ার চরম রূপ দেখেছে। ওই দিন সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশটির ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড। শুধু ব্রিটিশ কলাম্বিয়া নয়, কানাডার মেরু অঞ্চল থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন, ওয়াশিংটন অবধি তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের গড়ের তুলনায় বেশি রয়েছে।
অথচ এসব এলাকার মানুষ সাধারণত তুমুল তুষারপাতের সঙ্গে পরিচিত। তীব্র গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত নয় তারা। এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মেরু এলাকাগুলোয়ও রেকর্ডভাঙা গরম দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে এনভায়রনমেন্ট কানাডা নামক সংস্থার জ্যেষ্ঠ জলবায়ুবিদ ডেভিড ফিলিপস বলেন, ‘মরুভূমির মতো গরম পড়ছে। কানাডা বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম ও তুষারপাতপ্রবণ দেশ। আমরা তুষারঝড়ের সঙ্গে পরিচিত। এমন তীব্র গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত নই। এখন আমাদের এখানকার চেয়ে দুবাইয়ে তুলনামূলক কম গরম পড়ছে।’
গরমের কারণে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকার মানুষেরা ফ্যান ও বহনযোগ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কিনতে দোকানে ভিড় করছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুল ও করোনার টিকাকেন্দ্র। গরম থেকে স্বস্তি দিতে ভ্যাঙ্কুভারে সড়কের পাশে কৃত্রিম ফোয়ারা বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যেসব বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নেই, তাদের অনেকেই গাড়িতে কিংবা বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয় সময় গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলে তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠেছিল। স্থানীয় এক ব্যক্তি এএফপিকে বলেন, তাপমাত্রা ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে উঠলেই ওই দিনকে উষ্ণ ধরা হয়। সবাই টি–শার্ট আর শর্টস পরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে। সেখানে এখন দিনের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়েছে।
দেশটির অরিগন অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর পোর্টল্যান্ডের তাপমাত্রা ছিল আরও বেশি। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সেখানে ১১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস)। তীব্র গরমের কারণে সেখানে অলিম্পিকের বাছাইপর্বের চূড়ান্ত দিনের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করে স্থানীয় সৈকতগুলোয় বাড়ছে মানুষের ভিড়।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অ্যালবার্টা, মেনিটোবা, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিসহ কানাডার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে ভয়াবহ দাবদাহ বয়ে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে এনভায়রনমেন্ট কানাডা। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় এলাকায় রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করেছে এনডব্লিউএস। বলা হয়েছে, পুরো অঞ্চলে ‘হিট ডোম’ তৈরি হয়েছে, যা সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ডেভিড ফিলিপস বলেন, ২০১৮ সালে কানাডায় এ রকম তীব্র গরমে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এবার উষ্ণ আবহাওয়া সপ্তাহজুড়ে থাকতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১১৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা তার চেয়েও বেশি হতে পারে।